শিরোনাম

South east bank ad

টিকার জন্য শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ

 প্রকাশ: ২১ জানুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

করোনার টিকা পরিবহনের জন্য ভাড়া বাবদ শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

কেউ লিখিত অভিযোগ না দিলেও স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়ার সার্বিক খরচ বহন করছে সরকার। সেখানে শিক্ষার্থী বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নেওয়ার কোন নিয়ম নেই।

স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কিছু প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা আছে কিনা তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

জানা গেছে, আগৈলঝাড়া উপজেলায় শিক্ষার্থীদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য মাথাপিছু ৫০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই হিসেবে ১৪ হাজার ৬৯৪ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৭শ’ টাকা নেওয়া হয়েছে।

এরমধ্যে বরিশাল জেলা সদর থেকে টিকা পরিবহন বাবদ ৩৪ হাজার ৬শ টাকা খরচ হলেও বাকি ৭ লাখ টাকার হিসেব দিতে পারছেন না ওই কর্মকর্তা। উপজেলায় ১৫ হাজার ২শ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও বাকি ৫০৪ জনের কাছ থেকে টাকা তুলতে পারেননি বিভিন্ন কারণে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরমধ্যে জেলা সদর থেকে টিকা আনার জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০ টাকা করে আদায় শুরু করেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। ওই উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, টিকা পরিবহনের জন্য স্কুল প্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। এই টাকা অধিকাংশ স্কুল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তুলেছে।

উপজেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, বরিশাল থেকে আগৈলঝাড়া উপজেলায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ২২শ’ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের টিকা আনার জন্য ১৩ দিনে ২২শ’ টাকা হিসেবে ২৮ হাজার ৬ ‘ টাকা এবং আরও দুই দিন টিকা আনার ভাড়া বাবদ চালককে দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার টাকা। টিকা সরবরাহের জন্য সর্বসাকুল্যে খরচ হয়েছে ৩৪ হাজার ৬শ’ টাকা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন বলেন, সরকার টিকা সরবরা সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করেন। সেখানে টিকা পরিবহনে টাকা উত্তোলনের প্রশ্নই ওঠে না। শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ শুনছি। অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। আশা করি সঠিক সত্যটি বেড়িয়ে আসবে।

আঞ্চলিক উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। টিকা দেওয়ার জন্য টাকা উত্তোলনের নিয়ম নেই। যদি কেউ এমন কাজ করে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের করা তদন্ত কমিটির কোন আদেশ আমি এখনো পাইনি। পেলে তদন্ত করে দেখা হবে। তবে আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি।

তিনি আমাকে বলেছেন, তিনি নিজে টাকা তোলেনি। বিষয়টি আপনাকে (প্রতিবেদক) বুঝতে হবে, জেলা সদর থেকে একটি এ্যাম্বুলেন্স উপজেলায় যাবে তার খরচ ব্যবস্থা করতে হয়। এক এক উপজেলা এক একভাবে সেই খরচ তুলেছে। তবে সরকারিভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিকা বাবদ কোন টাকা নেওয়ার নির্দেশনা নেই।

অভিযুক্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, টিকা আগৈলঝাড়ায় এনে দেওয়ার জন্য পাঁচজন শিক্ষক নেতা মিলে বিভিন্ন স্কুল থেকে টাকা তুলেছেন। সেই টাকা জমা রেখেছিল শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক মন্টু বাবুর কাছে। আগামী রোববার টাকার হিসেব দেওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই বিভিন্ন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এমনভাবে উত্থাপন করা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে টিনের বক্সে একদিকে ৫০ টাকা ফেলেছেন অপরদিকে টিকা নিয়েছেন। বিষয়টি তেমন নয়। শিক্ষক নেতারা টাকা দিয়ে এখন আমার ওপর দায় দিচ্ছেন।

এই কর্মকর্তা বলেন, ৭ লাখ টাকা উত্তোলন হাস্যকর বিষয়। সম্ভবত ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা নেওয়া হতে পারে। যে টাকা নেওয়া হয়েছে তার সব হিসেবও হয়তো শিক্ষক নেতাদের কাছে আছে। কিন্তু এরমধ্যে আমাকে কেন জড়ানো হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: