ছাত্রলীগের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে জমি দখলের অভিযোগ
মশিউর রহমান কাউসার, (ময়মনসিংহ):
ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানিয়ে স্থানীয় ইমরুল হোসেন আল রাজি খোকনের (৪০) প্রায় ২০ শতক জমি দোকানঘরসহ জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ ওঠেছে সেই বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত (অবঃ) পুলিশ সদস্য বদরুল হাসান বাচ্চুর (৫০) বিরুদ্ধে।
গত শুক্রবার (১৪ জানুয়ারী) বিকেলে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের মাইজহাটী বাজারে বাচ্চু পুলিশের শিষ্য হত্যা মামলার আসামী আতাউর রহমানের নেতৃত্বে প্রায় ৪০ জন সহযোগী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জোরপূর্বক এ জায়গা দখল করে। জায়গা দখলের পর দোকান ঘরটিতে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানিয়ে তাতে বোকাইনগর ইউনিয়নের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন তারা।
ইমরুল হোসেন জানান, মাইজহাটী বাজারে পেত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত ১৫ শতক জমি জোরপূর্বক দখল করেছিলেন মাইজহাটী গ্রামের স্থানীয় বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য বদরুল হাসান বাচ্চু। পরবর্তীতে এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন।
গত ৪ জানুয়ারি ময়মনসিংহ বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক বাদীর পক্ষে এ মামলার রায় দেন। এ রায়ে উল্লেখ করা হয় উক্ত ভূমিতে বিবাদী বদরুল হাসান বাচ্চুর কোন দাবী নেই। আদালতের রায় পেয়ে বৃহস্পতিবার মামলার বাদী জমির মালিক ইমরুল হোসেন জায়গা দখল নিতে গেলে বাচ্চুর ভাই কামরুল ইসলাম হীরা ও সহযোগী আতাউর রহমান বাঁধা দেন। এ ঘটনায় তিনি ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন গৌরীপুর থানার পুলিশ সদস্যরা। এসময় পুলিশের উপস্থিতিতে ইমরুল হোসেন তার জায়গা বুঝে নেন।
এদিকে আদালতের রায় অমান্য করে বাচ্চু পুলিশ শুক্রবার বিকেলে তার লোকজন দিয়ে এ জমি পুনরায় দখল করে নিয়ে তাতে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানিয়ে তাতে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেন ইমরুল হোসেন।
এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল বদরুল হাসান বাচ্চু সাংবাদিকদের কাছে জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, উল্লেখিত জায়গায় তাঁর কোন মালিকানা নেই, এ বিষয়ে তিনি আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন। ছাত্রলীগের সাইনবোর্ডে টানিয়ে কারা এ জায়গা দখল করেছে, এ বিষয়ে তিনি কোন কিছু জানেন না।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি উত্তম সরকার সাংবাদিকদের জানান, উল্লেখিত বোকাইনগর ইউনিয়নে বর্তমানে ছাত্রলীগের কোন কমিটি নেই। অনেক আগেই এ ইউনিয়নের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এ অন্যায় কাজটি করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোন নেতা-কর্মী জড়িত নন বলে তিনি দাবি করেন।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, আদালতের রায়ের কোন কপি তিনি পাননি। ঘটনার দিন ৯৯৯ এর কল পেয়ে মাইজহাটি বাজারে যায় পুলিশ। এসময় বাদীপক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে জায়গা দখল নিতে অনুরোধ করে পুলিশ। তবে বাদীপক্ষ তা না করে জায়গা দখল নিয়ে নেন।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান মারুফ সাংবাদিকদের বলেন, বিরোধপূর্ণ জমিতে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ঝুলিয়ে জায়গা দখল গর্হিত কাজ। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।