আনোয়ারায় নির্বাচন কাল, ঝূঁকিপূূর্ণ ২৩কেন্দ্র
জাহিদ হাসান হৃদয়, (চট্টগ্রাম):
উদ্বেগ উৎকণ্ঠা উত্তেজনার মধ্যদিয়ে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ১০টি ইউনিয়নে ৫ম ধাপের (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কাল। নৌকা প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সংঘর্ষ আতংকের মধ্যে সোমবার রাতে শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচরণা। আজ ৫ জানুয়ারি বুধবার অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ।
এই নির্বাচনে উপজেলার ১০টি ইউপিতে ২২জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এর মধ্যে ৩টি ইউপিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের ৬ বিদ্রোহী প্রার্থী। এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত তিন প্রার্থী। অপর দিকে আইন আদালতে আটকে পড়ে আছে ৪নং বটতলী চেয়ারম্যান নির্বাচন। তবে অনুষ্ঠিত হবে মেম্বার নির্বাচন। সর্বশেষ আজ বটতলীতে চেয়ারম্যান ছাড়া অনুষ্ঠিত হবে ১০টি ইউনিয়নে নির্বাচন।
এদিকে এই ১০ ইউপি নির্বাচনে ৯২টি কেন্দ্রে পৌঁছেছে নির্বাচনী সামগ্রী। তবে ১০টি ইউপির ৯২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৩টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব কেন্দ্রে মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এবারে এই ১০ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ২২ জন, সংরক্ষিত মহিলা পদে ৯২জন ও পুরুষ সদস্য পদে ৩৮৩জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছে। নির্বাচিত তিন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হলেন, ১নং বৈরাগ, ৮নং চাতরী ও ৬নং বারখাইন ইউনিয়ন।
নির্বাচনী তফসিল ঘোষনার পর থেকে সার্বিক পর্যবেক্ষণে যেসব কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত হয়েছে তা হলো ১নং বৈরাগ ইউনিয়নের ৮,৬,৪ নং কেন্দ্র। ২নং বারশত ইউনিয়নের ১,৩,৫ নং কেন্দ্র ৩নং রায়পুর ইউনিয়নে ১,২,৩,৬ কেন্দ্র ও ৫নং বরুমছড়া ইউনিয়নের ৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯ কেন্দ্র ৮নং চাতরীতে রয়েছে ৩নং ওয়ার্ড ৯নং পরৈকোড়াতে রয়েছে ১,৩,৫,৬,৯ নং কেন্দ্র।
৩নং রায়পুরের ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এবারেও তিনি নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছেন। নৌকাকে জেতাতে স্থানীয় প্রবীণ আওয়ামিলীগ নেতারা একাট্ট। অপরদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আমিন শরীফ।
নৌকা প্রার্থী জানে আলম বলেন, নৌকা বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার নৌকা। রায়পুরের মানুষ টাকায় বিক্রি হয়না। তারা নৌকাকে জেতাতে চাই।
অপর বিদ্রোহী প্রার্থী আমিন শরীফ বলেন, সুষ্ট ভোট হলে আমাকে জনগন বিপুল ভোটে জয় করবে। আমি আশঙ্খা করছি নৌকা প্রার্থী ইতিমধ্যে বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে পুরা রায়পুর ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
৫নং বরুমছড়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি মনোনয়ন ফরম নেওয়ার পর থেকে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা আমার নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা দেওয়া, পোষ্টার ছিড়ে ফেলা, মাইক ভেঙে ফেলাসহ আমি এবং আমার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা করে আসছে। হামলায় আহত হয়েছে আমার বোনসহ অসংখ্য কর্মী সমর্থক।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে পরিকল্পিতভাবে বহিরাগত লোকজন নিয়ে আমি এবং আমার কর্মী সমর্থকদের উপর অতর্কিত হামলা করে এবং আমার নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করে আমাদের কোনঠাসা করে রেখেছে।এই পর্যন্ত এই ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশতের উপরে আহত হয়েছে।
২নং বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, গতবছর ও দারুসসুন্নাহ কেন্দ্রে ঝামেলা হয়েছিলো তাই আমার কাছেও কেন্দ্রটাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হচ্ছে। আমি নিজেও ইউএনও এবং এসপি বরাবর সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার বিষয়ে আবেদন করেছি।
প্রতিটি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা একই অভিযোগ করেছেন। তারা জানান, প্রতিটি ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্রের আশপাশে বহিরাগত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা অবস্থান নিয়েছে। এতে করে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন প্রার্থী ও ভোটাররা।
নির্বাচনের সহিংসতার বিষয়ে জানতে চাইলে থানা অফিসার ইনচার্জ দিদারুল ইসলাম সিকদার জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা সর্তক অবস্থায় রয়েছি। সব জায়গায় নিয়মিত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত টহল পুলিশ বৃদ্ধি করা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কাউকে বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হবে না।