মায়ের সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্র দেখল তিন মাসের শিশু
সীমান্ত সাথী, (রংপুর) :
মধ্যরাতের হালকা বৃষ্টি সঙ্গে হিমালয়ের পাদদেশ ছঁয়ে আসা কনকনে বাতাসে উত্তর জনপদের রংপুর অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কাঁপন ধরা ঠাণ্ডায় শিশুদের নিয়ে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। ছিন্নমুল ও শ্রমজীবি মানুষও পড়েছেন বেকায়দায়। এবারে বৈরী আবহাওয়ার কারণে শীত মৌসুম শুরু হলেও তেমন ঠাণ্ডা অনূভব হয়নি। কিন্তু গতকাল বুধবার মধ্যরাতে হালকা বৃষ্টি শুরু হলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় মানুষজনকে। এ অবস্থায় গত দুইদিন ধরে সুর্যের মুখ দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার(৩০ ডিসেম্বর) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ বৃহস্পতিবার(৩০ ডিসেম্বর) উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার শেষ দিন ছিল। এদিন রংপুরের বদরগঞ্জ সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে দেখা যায়। পরীক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা শীতের তীব্রতায় বেকায়দায় পড়েন। তারা গরম কাপড় মুড়িয়ে আসেন কেন্দ্রে। আবার অনেক পরীক্ষার্থীকে নবজাতক শিশুদের নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে দেখা যায়। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে এদের মধ্যে মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থী জিয়াসমিন আক্তার আসেন তাঁর তিন মাসের শিশুপুত্র জুলকারনাইনকে সঙ্গে নিয়ে। পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে শিশুটিকে নেওয়া সম্ভব না হলেও তার স্বজনরা শিশুটিকে উষ্ণ কাপড় মুড়িয়ে আগলে রাখেন। পরীক্ষা শেষে কথা হয় শিশুটির মা জিয়াসমিনের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা নামতে শুরু করেছে। দুধের শিশুকে তো আর বাড়িতে একলা রেখে আসা সম্ভব নয়। এ কারণে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে সঙ্গে নিয়ে এসেছি। ওর বাবা-নানি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে চাঁদর মুড়িয়ে আগলে রাখে।’
এদিকে গত দুইদিনের ব্যবধানে কনকনে ঠাণ্ডায় রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল ছিল তুলনামূলক কম। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষকে চরম দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে। বুধবার রাতের গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যকে উঁকি দিতে দেখা যায়নি। শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর মেডিকেলে অনেক মানুষকে ভর্তি করার খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে শিশু ওয়ার্ডে শ্বাসকষ্টসহ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যাই ছিল বেশি।
আব্দুস সালাম(৪৮) নামে এক পথচারি বলেন, ‘দুইদিনের ঠাণ্ডায় কাহিল অবস্থা। শীতে সুচ ফোটানোর মতো যন্ত্রণা অনুভূত হচ্ছে শরীরে। মধ্য পৌষের ঠাণ্ডায় ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছেনা।’
রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষক আফরোজা পারভিন বলেন, আজ বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক। সর্বোচ্চ ছিল ১৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে জানান তিনি।