ধুনটে কম্বল বিতরণের সময় আ. লীগ নেত্রীর শ্লীলতাহানি
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া):
বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে সরকারি কম্বল বিতরণের সময় সুলতানা জাহান নামে এক আওয়ামী লীগ নেত্রী ও ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যানকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী সুলতানা জাহান উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের স্ত্রী।
তিনি ধুনট উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান। এঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তিনি ধুনট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য সরকারিভাবে শীতবস্ত্র হিসেবে ২৫০টি কম্বল বরাদ্দ রয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে সেই কম্বলগুলো ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিতরণ করা হয়।
বেলা ১১টার দিকে ওই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের সদস্য শরীফা খাতুনের স্বামী জহুরুল ইসলাম ও তার লোকজন কম্বল বিতরণে বাধা দেন। এসময় ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফরহাদ হোসেন এবং ট্যাগ অফিসার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আশরাফ আলীর সঙ্গে তাদের কথাকাটাকাটি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান এগিয়ে আসলে জহুরুল ও তার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তারা সুলতানা জাহানকে শ্লীলতাহানি করে। এসময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তারা কৌশলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ ঘটনার পর থেকে কম্বল বিতরণ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে জহুরুল ইসলাম জানান, ইউপি সদস্যদের মাঝে কম্বল বিতরণের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ইউপি সচিব ও ট্যাগ অফিসারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে সুলতানা জাহানকে শ্লীলতাহানি করা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফরহাদ হোসেন জানান, জহুরুল ইসলাম এক নারী ইউপি সদস্যের স্বামী। তিনি কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে এসে তার জন্য অতিরিক্ত কম্বল বরাদ্দের দাবি করেন। এ বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছে।
ধুনট উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও ট্যাগ অফিসার আশরাফ আলী জানান, কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে স্থানীয় এক নারী ইউপি সদস্যের স্বামী এসে বাধা প্রদান করেন। এ ঘটনার পর কম্বল বিতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, শ্লীলতাহানি ঘটনানোর অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত জানান, কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে সমস্যা হওয়ার কথা শুনেছি। আগামী রোববার সেখানে পুনরায় কম্বল বিতরণ করা হবে।