ভাসানচরে যাচ্ছে আরও সাড়ে ৪০০ রোহিঙ্গা
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে অষ্টম দফায় স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক প্রায় ৪৮৯ জন রোহিঙ্গা নোয়াখালীর ভাসনচরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে ১৯টি বাস। শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ও বিকেলে (দুই অংশে) উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে ভাসানচরের উদ্দেশে চট্রগ্রামে রওনা দেয় ১৪০ রোহিঙ্গা পরিবার। এর আগে সকালে থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সপরিবারে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে নিয়ে আসেন।
শুক্রবার বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করে অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসু দ্দৌজা নয়ন জানান, ‘অষ্টম দফায় সাড়ে ৪০০ রোহিঙ্গার দুটি দল উখিয়া থেকে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আর্র বেশকিছু রোহিঙ্গা যাবার কথা রয়েছে। তবে সেখানে কতজন সেটি এখন বলা সম্ভব না। ’
এ বিষয়ে ৮-এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন জানান, ‘অষ্টম দফায় শিবিরগুলো থেকে আরও রোহিঙ্গাদের দল ভাসানচরের উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করেছেন। সেখানে প্রায় ৪০০ এর বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে।’ এদিকে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে সপ্তম দফায় প্রায় ২০ হাজার রোহিঙ্গাকে সরকার ভাসানচরে পাঠায়। এ ছাড়া গত বছর মে মাসে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে সেখানে রাখা হয়।
ভাসানচরে অবস্থানরত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি (সিআইসি) নওশের ইবনে হালিম বলেন, ‘ভাসানচরে উদ্দেশে রোহিঙ্গাদের একটি দল ক্যাম্প ত্যাগ করেছেন। মূলত তারা চটগ্রামে রাতে পৌছাবেন। পরের দিন শনিবারে সকালে সেখান ভাসানচরে পৌছনোর কথা রয়েছে। আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। তবে এখানে না পৌছানো পর্যন্ত সংখ্যাটা বলা মুশকিল।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সেনাদের অভিযান থেকে প্রাণে বাঁচতে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাস করছেন। এদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের সময়ে পালিয়ে এসেছিলেন। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত ১ লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।