ফ্রিডম পার্টির নেতার নৌকা মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া):
বগুড়ার আদমদীঘিতে ফ্রিডম পার্টির চিহ্নিত নেতা আব্দুল হক আবুকে ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আবারো দেওয়া নৌকার মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় উপজেলার সান্তাহার শহর প্রেসক্লাবে ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজুল ইসলাম বেলাল। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বুলবুল, উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি রশিদুল ইসলাম রশিদ।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজুল ইসলাম বেলাল লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন প্রাপ্ত আব্দুল হক আবু একজন ফ্রিডম পার্টির চিহ্নিত নেতা। ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে আদমদীঘিতে ফ্রিডম পার্টিকে সু-সংগঠিত করতে নিজ বাড়িতে কার্যালয় বানিয়ে উপজেলা ফ্রিডম পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। তার নেতৃত্বে ফ্রিডম পার্টির সান্তাহার ও নওগাঁর নেতাকর্মীরা যৌথভাবে তৎকালীন সান্তাহার কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে (চম্পা-পান্না) হত্যা করার উদ্দেশ্য একটি সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করেন।
সে সময় ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে ফ্রিডম পার্টির নেতাকর্মীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। সেই ক্ষোভে তখন ছাত্রলীগ নেতারা আব্দুল হক আবুর বাড়িতে অবস্থিত ফ্রিডম পার্টির অফিস ভাঙচুর করে। শুধু তাই নয়, তিনি দল বদল করে ১৯৯৪ সালের দিকে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। এরপর ছাতিয়ানগ্রাম ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে তিনি ২০১৬ সালের ২৮ মে সান্তাহার পৌর শহরের হার্ভে স্কুল মোড় এলাকায় আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। হঠাৎ আব্দুল হক আবুর উত্থান দেখে বিস্মিত হয়েছেন তৃণমূলের ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন, তার মনোনয়ন বাতিল করে সঠিক আওয়ামী লীগ নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এসব আভিযোগ প্রসঙ্গে ছাতিয়ানগ্রাম ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী আব্দুল হক আবু জানান, আমি নৌকার মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হয়ে পাঁচ বছর ইউপি চেয়ারম্যান ছিলাম। সেকারণে আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমি কোনদিনই ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। তবে হ্যাঁ জাতীয় পার্টি করতাম।
সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী বলেন, ফ্রিডম পার্টি করা নেতাদের যেখানে দলে যোগদান করানো নিষেধ সেখানে তাকে কিভাবে মনোনয়ন দেয়া হয় তা আমার বোধগম্য নয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম চম্পা বলেন, আব্দুল হক আবু ফ্রিডম পার্টির সেক্রেটারি ছিলেন। মনোনয়ন বোর্ড তাকে মনোনীত করেছে আমরা কী করব।
উল্লেখ্য, পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।