সারিয়াকান্দিতে ২০ মাস ধরে বন্ধ মা ফাতেমা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :
বগুড়ার সারিয়াকান্দি মা ফাতেমা (রাঃ) মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি ২০ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করলেও চালু হচ্ছে না কেন্দ্রটি।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ইলেক্ট্রিশিয়ান মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি সারিয়াকান্দিতে স্থাপন করা হয় মা ফাতেমা মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ২০০৬ সালে কেন্দ্রটি রাজস্ব খাতের অন্তর্ভুক্তি লাভ করে। গত ২০১৪ সালের ১১ জুলাই সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আব্দুল মান্নান গ্রামীণ অবহেলিত মহিলাদের জন্য সারিয়াকান্দি মা ফাতেমা (রা) মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে উদ্বোধন করেন। এখানে সিএনজিচালিত থ্রি হুইলার ড্রাইভিং এবং মোটর সাইকেল মেকানিক্স প্রশিক্ষণ কোর্স চালু ছিল। কেন্দ্রটিতে গ্রামীণ দরিদ্র, স্বামী পরিত্যক্ত, বাল্যবিয়ের শিকার মহিলাদের বিভিন্ন দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকুরির ব্যবস্থা করা হত।
অনেক অসহায় নারীরা এখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে স্বনির্ভর হয়েছেন। এ পর্যন্ত কেন্দ্র হতে ১ হাজার ৫০০ জন নারী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে ২৭৯ জন নারী প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে ২১০ জন নারী চাকুরি পেয়েছেন। তাদের মধ্যে মোটরসাইকেল সার্ভিস মেকানিক্সে ৯২ জন প্রশিক্ষণ শেষ করে চাকুরি পেয়েছেন ৮২ জন। কনজিউমার ইলেকট্রনিক্সে ৯৫ জন প্রশিক্ষণ শেষে চাকুরি পেয়েছেন ৬১ জন। ইলেক্ট্রিশিয়ান কোর্সে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন ৯২ জন। এর মধ্যে চাকুরি পেয়েছেন ৬৭ জন। চাকুরিরত নারীরা সবাই প্রাণ আর এফএল গ্রুপ এবং ডাচবাংলা ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন। ৩ মাসের প্রশিক্ষণকালীন সময়ে থাকা খাওয়া ফ্রিসহ ৯০০ টাকা প্রশিক্ষণকালীন ভাতা পান প্রশিক্ষণার্থীরা। কেন্দ্রটির ১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ জনবল কাঠামো ১৩ জন। তাদের মধ্যে ৪ জন বিভিন্ন জেলায় ডেপুটেশনে রয়েছেন। কেন্দ্রটি করোনাকালীন লকডাউনের কারণে গত ২১ মার্চ ২০২০ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লায়লা পারভিন নাহার জানান, কেন্দ্রটি পুণরায় চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা আবেদন জানিয়েছি।
সারিয়াকান্দি পৌরসভা মেয়র মতিউর রহমান মতি জানান, নদী ভাঙন কবলিত সারিয়াকান্দির অনেক নারী কেন্দ্রটিতে প্রশিক্ষণ শেষে ভাল চাকুরি পেয়েছেন। কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় আমাদের এলাকার অবহেলিত নারীরা এখন প্রশিক্ষণ এবং নানা ধরনের সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। কেন্দ্রটি পুনরায় দ্রুত চালুর দাবি জানাই।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, করোনাকালীন লকডাউনে কেন্দ্রটি বন্ধ ছিল। এটি পুনরায় চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাহাদারা মান্নান এমপি জানান, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি পুণরায় চালু করতে ইতিমধ্যে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। সংসদীয় কমিটিতেও বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করছি শিঘ্রই কেন্দ্রটি পুনরায় চালু হবে।