ফুলবাড়িয়ায় অপহৃত প্রিজাইডিং অফিসার হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন
মো: আব্দুস ছাত্তার, (ফুলবাড়িয়া) :
দ্বিতীয়ধাপে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচনে রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের হাতীলেইট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে অপহৃত প্রিজাইডিং অফিসার হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। ঘটনার দুইদিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের কেউ খোঁজ খবর নেননি। গতকাল শনিবার দুপুর ১টার দিকে প্রিজাইডিং অফিসারের ভাগিনা আনার সাদত আনার এর মাধ্যমে খবর পেয়ে বিকাল ৪ টায় হাসপাতালে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল ছিদ্দিক।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সারাদেশের ন্যায় ফুলবাড়িয়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১২৯টি ভোট কেন্দের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। টানা ভোট গ্রহণের শেষের দিকে কিছু স্থানে এবং কোথাও গণনার সময় হঠাৎ পরিবেশ অশান্ত হয়ে উঠে। অনেক স্থানে সংঘর্ষ, গুলি বর্ষণের ঘটনাও ঘটে।
হাসপাতালের বেডে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার ও পলাশতলী নেনজিরপাড় বালিকা দাখিল মাদ্রাসা সুপার মাহফুজুল হক জানান, রাত সাড়ে ৮ টায় ফলাফল ঘোষণা শেষে উপজেলার উদ্দেশ্যে আমি গাড়ীতে উঠে বসি তখন মেম্বার প্রার্থী নজরুল ইসলাম (মোরগ) ও তার সমর্থকরা আমাকে গাড়ীতে বেধড়ক মারধর করে। আমি অজ্ঞান হয়ে গেলে আমাকে টেনে হেচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে মুরগীর ফার্মের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে জবেহ করতে চাইলে আমি আবারও জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তখন অপহরণকারীরা আমাকে উঠিয়ে নিয়ে লেবু ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতারি কুপাতে থাকে। এক পর্যায়ে একজন কসাই আসে। যার কাজ জবেহ করা। খবর পেয়ে আমার ভাগিনা আনার সাদত আনার ফোনে স্থানীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে এবং তারা আমার পরিচয় জেনে ফেলে। প্রশাসন ও আমার ভাগিনার সহযোগিতায় আমাকে বিজ্ঞ নির্বাহি ম্যাজিস্ট্যাট ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার করে ফুলবাড়িয়ায় নিয়ে আসে। আমি দায়িত্বরত এসআই এর মাধ্যমে কন্ট্রোল রুমে ফলাফল সিট পাঠাই এবং আমার স্বজনরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
মারাত্মক আহত প্রিজাইডিং অফিসারের ভাগিনা আনার সাদত আনার জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে আমার মামা ফুলবাড়িয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও প্রশাসনের কেউ দেখতে আসেনি এমনকি কোন খোঁজ খবর নেননি। আমি শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহি অফিসার কে অবহিত করলে বিকাল ৪টার দিকে উনি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল এ সময় সঙ্গে ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল ছিদ্দিক বলেন, উনি হাসপাতালে বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। উনার ভাগিনা আমাকে জানানোর পরপরই আমি হাসপাতালে গিয়ে উনার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিয়েছি। উনি এখন একটু ভালো। তবে উনার মাথায় ও পায়ে মারাত্মক আঘাত রয়েছে। শারীরিকভাবে অনেক দূর্বল হয়ে পড়েছেন তিনি। ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যারাই কাজটি করেছে মোটেও ঠিক করেনি।