শিরোনাম

South east bank ad

স্বাস্থকেন্দ্রে ঝুলছিল তালা, মাঠেই সন্তানের জন্ম দিলেন মা

 প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

আমিনুল ইসলাম জুয়েল, (রংপুর) :

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে অন্তঃসত্ত্বা লিমা বেগমের প্রসব বেদনা ওঠে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে। এরপর বাড়িতেই স্থানীয় দাইদের দিয়ে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করে পরিবার। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও সন্তান প্রসবে ব্যর্থ হয় দাই। বাধ্য হয়ে নিরাপদ সন্তান জন্মের জন্য রাত ১১টার দিকে স্থানীয় হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। কিন্তু মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের বাইরের গেটে ঝুলছিল তালা। এদিকে প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলেন লিমা বেগম। পরে কেন্দ্রের ভবনের সামনের মাঠে কোন স্বাস্থ্যকর্মী ও গাইনী ছাড়াই মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন লিমা বেগম। রাত একটার দিকে মা ও নবজাতক মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন পরিবারের লোকজন।

মঙ্গলবার(৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে। লিমা বেগম হারাগাছ ইউনিয়নের চরনাজিরদহ মফিজপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ এলাকার বেশির ভাগ মানুষ শ্রমিক। দরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী নারীদের নিরাপদ ও স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের একমাত্র ভরসা হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। কিন্তু সেখানেও স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গর্ভবতী নারীরা। দীর্ঘদিন ধরে রাতেই বেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিকেল থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত প্রতিদিন বন্ধ থাকে সেবা কার্যক্রম। ফলে রাতে কোন গর্ভবতী নারী নিরাপদ ও স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের জন্য কেন্দ্রে এসে বিপাকে পড়েন। আবার অনেকে বাধ্য হয়ে কেন্দ্রের আশপাশের ঝোপঝাড়ে সন্তান প্রসব করছেন।

মিনাবাজার এলাকার রানা মিয়া বলেন, হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে গরীব মানুষ সেবা পাচ্ছেন না। ফলে সেবা নিতে আসা অনেক অন্তঃসত্ত্বা নারী বিপদে পড়ে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের আশপাশের ঝোপঝাড়ে সন্তান প্রসব করতে বাধ্য হচ্ছেন।

লিমা বেগমের স্বামী শাহাদত হোসেন বলেন, কিছু সময় দেরি হলে স্ত্রী-সন্তান দুইজনেই মারা যেত। আল্লাহর রহমতে স্ত্রী ও সন্তান বেঁচে গেছে। গরীবের একমাত্র ভরসা আল্লাহ।

হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, যদিও ২৪ ঘন্টা গর্ভবতী নারীদের সেবা দেওয়ার কথা কিন্তু এখানে দুইজন দাই নার্সসহ তিনজন দায়িত্বে আছেন। কিন্তু তিনজনের পক্ষে ২৪ ঘন্টা সেবা দেওয়া সম্ভব হয়না। তাই সপ্তাহে শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার ছয়দিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত গর্ভবতী নারীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ ও স্বাভাবিক সন্তান প্রসব করতে এসে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের বাইরে ঘাসের উপর সন্তান প্রসবের বিষয়টি দু:খজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতেছি।

রংপুর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইদুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ ও স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রগুলো অসহায় দরিদ্র মানুষের আশ্রয়স্থল। কিন্তু জনবল সমস্যা থাকায় সেবা কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: