ঈদগাঁয়ের মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়
সীমান্ত সাথী, (বদরগঞ্জ) :
রংপুরের বদরগঞ্জে প্রায় ৩০ বছর ধরে সরকারি জমিতে প্রতিষ্ঠিত ঈদগাঁ মাঠের জমির উঁচু মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অহিদুল হক নামে এক ব্যক্তি ইটভাটার জন্য দিনে-দুপুরে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানায় লিখিত অভিযোগ করে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের রাজারামপুর এলাকার ধরেরপাড়ে। আজ রবিবার (৭ নভেম্বর) এ নিয়ে এলাকাবাসী একজোট হয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানান।
থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগের সুত্রে জানা যায়, মধুপুর ইউনিয়নের ধরেরপাড় এলাকায় সরকারি খাসখতিয়ানভুক্ত জমিতে প্রায় ৩০ বছর ধরে মানুষজন ঈদের নামাজ আদায় করে আসছেন। এরমধ্যে হঠাৎ করে মধুপুর ইউনিয়নের ভূমিদস্যু অহিদুল হক নামে এক মাটি ব্যবসায়ী ঈদের মাঠের জমি বন্দোবস্ত নেওয়ার কথা দাবি করে মাটি কাটা শুরু করেন। এ নিয়ে এলাকাবাসী একজোট হয়ে মাটি কাটার কাজে বাধা দিতে গেলে অহিদুল হকের লোকজন গ্রামবাসীর ওপর চড়াও হন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে ঈদগা মাঠ রক্ষায় এলাকাবাসীর পক্ষে ওয়ারেছ আলী নামে এক ব্যক্তি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, ইউএনও ও থানা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো প্রভাব বিস্তার করে অহিদুল হক মাটি কেটে সাবাড় করার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। এ নিয়ে মাটি কাটায় বাধা দিতে গেলেও কোন কাজ হচ্ছে না। এক পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের উপসহকারি ভূমি কর্মকর্তা(তহশিলদার) হাবিবুর রহমানকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি বলে দাবি করেন এলাকাবাসী মেহেদী হাসান।
অভিযুক্ত অহিদুল হক মাটি কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি ওই জমি ১৯৮৫ সালে লিজ নিয়েছি। এ কারণে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছিলাম। তবে সরকারি নির্দেশনা পেয়ে এখন মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছি।’
মধুপুর ইউনিয়নের তহশিলদার হাবিবুর রহমান জানান, ‘ওই জমি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। কাউকে লিজ দেওয়া হয়নি। সেখানে ওই এলাকার মুসল্লীরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। ভূমিদস্যু অহিদুল হককে মাটি কাটতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, ‘একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের পুলিশের বিট কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।