শিরোনাম

South east bank ad

শার্শার ৫ ইউনিয়নে নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী

 প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মোঃ জামাল হোসেন, (বেনাপোল) :

যশোরের সীমান্তবর্তী শার্শায় জমে উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। মহড়া, মোটরসাইকেল শো-ডাউন ও নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সরগরম শার্শা উপজেলা সদর। হোটেল রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকানে চলছে নির্বাচনী আলোচনা। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় বিপাকে পড়েছে নৌকার প্রার্থীরা। শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে বেনাপোল ইউনিয়নে সীমানা সংক্রান্ত উচ্চ আদালতে মামলা থাকায় সেখানে নির্বাচন হচ্ছে না।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, যশোরের শার্শা উপজেলায় ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ইউপি নির্বাচন। শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপ রয়েছে। এর একটি স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের সমর্থক। অপরটি বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটনের সমর্থক। স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন ও বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটনের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের কারণে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের রোষানলে পড়তে হচ্ছে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও সমর্থকদের। ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে কায়বা, গোগা, বাগআঁচড়া, নিজামপুর, ডিহি ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের প্রার্থীরা এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের সমর্থক। আর পুটখালী, লক্ষণপুর, শার্শা সদর ও উলাশী ইউনিয়নের প্রার্থী মেয়র লিটনের সমর্থক। মেয়র লিটনের সমর্থক প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন পুটখালী ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের আব্দুল গাফফার সরদারের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী গরু খামারী ও ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন, উলাশী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের রফিকুল ইসলামের বিপক্ষে গতবারের নৌকা প্রার্থী নিয়ে জয়ী বর্তমান চেয়ারম্যান আয়নাল হক, শার্শা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন তোতার বিপরীতে বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন, লক্ষণপুর ইউনিয়নে বর্তমান আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীক পাওয়া আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন ইউপি সদস্য শামছুর রহমান। বাহাদুরপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকে মাঠে নেমেছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মফিজুর রহমান। অভিযোগ উঠেছে মেয়র লিটন সমর্থিত নৌকা পাওয়া চার ইউনিয়নেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়েছে। ওই চার ইউনিয়ন ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নে নৌকাকে পরাজিত করতে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে।

শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ কোরবান আলী বলেন, প্রকৃত আওয়ামী লীগ পরিবারের হাতে আওয়ামী লীগের নৌকা ফিরিয়ে দিতে মেয়র লিটন যখন নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, তখন এই আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন নৌকাকে ডুবাতে পিছন থেকে ইন্ধন যোগাচ্ছেন। তার মদদে বিদ্রোহীরা সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে মাঠ দখলের পাঁয়তারা করছে। তারা শেখ আফিল উদ্দিনের আস্থাভাজন প্রার্থী হিসেবে নিজেদের প্রচার করছে। এভাবে বিএনপি থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে এনে তাদের দিয়ে নির্বাচনের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন পিছন থেকে ওই শীর্ষ জনপ্রতিনিধি।

পুটখালী ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী আব্দুল গফফার সরদার বলেন, আমাদের আজ বিএনপি জামাতের সাথে নির্বাচনের প্রতিযোগিতা নেই। আমাদের একজন শীর্ষ নেতা বিএনপি থেকে কিছু লোক এনে আমাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে মজা দেখছেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নৌকাকে তিনি অবমাননা করছেন। এভাবে চলতে থাকলে আমরা বসে থাকব না। আমরা এসব নেতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হবো। এসব মুখোশধারী নেতাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবি করবো।

এবারে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া একই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হাদিউজ্জামান বলেন, আমরা নৌকার বিপক্ষে নই। আমরা সাবেক চেয়ারম্যান গফফার সরদারের বিপক্ষে। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলাম আমি। আমি কোন বিরোধিতা না করে নির্বাচন না করে ছেড়ে দিয়েছি। আমি চাই এ ইউনিয়নে তরুন নেতা নাসির উদ্দিন চেয়ারম্যান হোক। আমরা সন্ত্রাসে বিশ্বাসী নই। আমরা কোন অপরাজনীতিকে প্রশ্রয় দিতে রাজি নই। যারা এর আগে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছে আমরা শুধু তারই বিপক্ষে।

বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইউনুছ আলী মেম্বর বলেন, এ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী হিসেবে পর পর ৩ বার বর্তমান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান নির্বাচিত হলেও এলাকার কোন উন্নয়ন করেনি। তার নিজ গ্রাম ঘিবা অবহেলিত। তিনি কোথাও যান না। তৃর্ণমূলের কোন নেতা-কর্মীর খোজ খবরও রাখেন না। সে কারণে সর্বস্তরের মানুষ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মফিজুর রহমানকে সমর্থন দিয়েছেন। এবারের নির্বাচনে আমরা বিপুল ভোটে জয়ী হবো।

নির্বাচনী অফিস সূত্রে জানা গেছে, শার্শার ১০টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ১৮ হাজার ২০০ জন ও নারী ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৩ জন। এ পর্যন্ত শার্শা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৪৬ জন। সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৯৬ জন ও সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ৪৪৩ জন প্রার্থী। আগামী ৪ নভেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। ১১ নভেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। চুড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ হবে ১২ নভেম্বর। ২৮ নভেম্বর হবে নির্বাচনের ভোট গ্রহণ।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: