মা-বাবার মৃত্যুদিনেই স্ত্রীসহ ছেলের মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের মাতম
আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :
৩০ বছর আগে একই দিনে মৃত্যু হয়েছে জন্মদাতা পিতা আর জনমদুখিনী মায়ের। একই দিনে বাবা-মায়ের মৃত্যুর শোক যেন এখনো তাদেরকে কাঁদায়। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস; বাবা-মায়ের মৃত্যুর দিনে মোজাহার ম-ল (১০০) ও তার স্ত্রী জাহিদা বেগমও (৯০) নিলেন চিরবিদায়। গত শনিবার রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের সোনাদহ গ্রামে এমন নির্মম ঘটনা ঘটে। এমন নির্মম ঘটনায় সোনাদহ গ্রামে চলছে শোকের মাতম। রবিবার (৩১ অক্টোবর) বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত মোজাহার ম-লের ছেলে জালাল উদ্দিন জানান, সাত বছর ধরে তার মা জাহিদা বেগম ও বাবা মোজাহার ম-ল দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছিলেন। তারা একই ঘরে থাকতেন। শনিবার দুপুরে মোজাহার বিছানায় শুয়ে ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে ঘুম থেকে জাগাতে গেলে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় জাহিদাকে ঘরে না পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজির করা হয়। পরে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, জাহিদা দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। তিনি প্রায় সময়ই হামাগুড়ি দিয়ে বাড়ির বাইরে চলে যেতেন। এদিন দুপুরেও তিনি হামাগুড়ি দিয়ে পুকুরে পাশে গেলে সেখানে ডুবে মারা যান বলে পরিবারের সদস্যরা ধারণা করছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সলিম উদ্দিন বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে মোজাহার ম-লের বাবা-মা একই দিনে স্বাভাবিকভাবে মারা যান। তিনি আরও জানান, শনিবার রাত ৯টায় সোনাহদ গ্রামে জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মোজাহার-জাহিদাকে দাফন করা হয়েছে। তাদের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
বাঘা থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, স্ত্রী পুকুরের পানিতে ডুবে মারা গেছেন এবং স্বামীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এ খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। প্রাথমিক তদন্ত শেষে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওসি আরও বলেন, পানিতে ডুবে জাহিদা বেগমের মৃত্যু হয়েছে বলে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। আর কারও কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।