বার দফা দাবিতে টিআইবির মানববন্ধন
এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা) :
যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে আসন্ন কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে কয়লাভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রসার ও প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে বার দফা দাবি উত্থাপন করে মানববন্ধন করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)'র আয়োজনে রোববার সকাল ১১ টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে বরগুনা সনাক সদস্য সাংবাদিক মনির হোসেন কামাল এর সঞ্চালনায় বক্তব্য করেন- সাবেক দুই ইয়েস দলনেতা ইমরান হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন- সনাক সদস্য আলহাজ্ব আবদুর রব ফকির সহ টিআইবির অনুপ্রেরণায় গঠিত সনাক, স্বজন, ইয়েস ও ইয়েস ফ্রেন্ডস সদস্যরা।
মানববন্ধনে বক্তারা তাদের লিখিত বক্তব্যে তুলে ধরেন- যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে ৩১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনকে প্যারিস চুক্তি পরবর্তী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু সম্মেলন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রাক শিল্পায়ন সময় থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য ১৯৬ টি দেশ প্যারিস চুক্তিতে সম্মত হয় ছয় বছর আগে। কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়নের পথ রেখা চূড়ান্ত করতে পারেনি দেশগুলো।
ঋণ দিয়ে নয়, ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সরাসরি অনুদান দিতে হবে। ব্যাপক ভিত্তিক জীবাশ্ম জ্বালানি আহরণ ও প্রকল্পে অর্থায়ন এবং জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাসে টিআইবির বার দফা দাবির মধ্যে- জলবায়ু বিষয়ক নীতিনির্ধারণে জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানির অনৈতিক হস্তক্ষেপ করতে হবে; ২০৫০ সালের মধ্যে 'নেট জিরো' লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আইএনডিসি সহ প্রশমন বিষয়ক সকল কার্যক্রমের উন্নত দেশগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে; ২০৫০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে শতভাগ জ্বালানি উৎপাদনের উন্নত দেশগুলোকে পর্যাপ্ত জলবায়ু তহবিল প্রযুক্তি হস্তান্তর ও কারিগরি সহায়তা প্রদানে সিভিএফ এর পক্ষ থেকে সমন্বিতভাবে দাবি উত্থাপন করতে হবে; স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে উন্নত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিলে প্রদান করতে হবে; জিসিএফ সহ জলবায়ু তহবিলের নয়, অভিযোজন কে অগ্রাধিকার দিয়ে ক্ষতিপূরণের টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করতে হবে; দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় একটি ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ক আলাদা তহবিল গঠন করতে হবে; ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন স্বচ্ছতার সাথে প্রস্তুতে একটি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে এবং ঝুঁকি বিনিময় বীমার পরিবর্তে অনুদান ভিত্তিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে; জিসিএফ এর সদর জবাবদিহিতা ও শুদ্ধাচার নিশ্চিতে যথাসময়ে ও দ্রুততার সাথে প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থ ছাড় করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্থ দেশে অভিযোজন এবং প্রশমন বিষয়ক ৫০:৫০ অনুপাত অর্থায়ন করতে হবে; এবারও দফা দাবির মধ্যে
১২ দফা দাবির মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের করণীয় যে বিষয়গুলো- ২০২১ সালের পরে নতুন কোন প্রকার কয়লা জ্বালানি নির্ভর প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থায়ন না করার ঘোষণা দিতে হবে; 'নেট জিরো' লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কপ-২৬ সম্মেলনে একটি আইনি সমঝোতা করতে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ)'র নেতৃত্বে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করতে হবে; জীবন-জীবিকা বন ও পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ শিল্পায়ন কার্যক্রম স্থগিত করে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ কৌশলগত পরিবেশের প্রভাব নিরূপণ সাপেক্ষে অগ্রসর করতে হবে; বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধিতে এ খাতের জন্য স্বল্প মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করে প্রশমন বিষয়ক কার্যক্রম স্বচ্ছতার সাথে বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে; বিশেষ করে, এ খাতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।