শিশু ধর্ষণ মামলায় একজনকে ৪৪ বছরের কারাদণ্ড
শেখ সাঈদ আহম্মেদ সাবাব, (শেরপুর) :
শেরপুরে ১১ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ ও অপহরণের মামলায় মো. গোলাপ হোসেন (৪৭) নামে এক ব্যক্তিকে ৪৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ২৬ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. আখতারুজ্জামান আসামির অনুপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন।
গোলাপ হোসেন ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের মধ্য ডেফলাই গ্রামের মো. ছাবেদ আলীর ছেলে।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল দুপুরের দিকে ঝিনাইগাতী উপজেলার মধ্য ডেফলাই গ্রামে বাড়ির সামনে খেলা করছিল সাড়ে ১১ বছর বয়সী ভিকটিম শিশুটি। ওইসময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ওই শিশুকে খাবার, ভালো পোশাক ও লেখাপড়ার প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে রাজধানী ঢাকার নদ্দা এলাকায় নিয়ে যায় প্রতিবেশী গোলাপ হোসেন। এক পর্যায়ে শিশুটির পরিবার তাকে খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে স্থানীয়দের কাছে জানতে পারে তাকে গোলাপ হোসেন অপহরণ করে ঢাকায় নিয়ে গেছে। পরে ওই শিশুকে বের করে আনতে এলাকাবাসী গোলাপের শ্বাশুড়ি আনোয়ারা বেগমকে চাপ দিলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে শিশুটিকে ঢাকা থেকে আনার ব্যবস্থা করেন। বাড়িতে এসে শিশুটি তার স্বজনদের জানায়, ঢাকায় ভাড়া বাসায় রেখে তাকে কয়েক দিন ধর্ষণ করেছে গোলাপ হোসেন। পরে ওই ঘটনায় একই বছরের ২ মে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে একই বছরের ৫ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইগাতী থানার তৎকালীন এসআই মো. ইউনুছ আলী বিশ্বাস ধর্ষক গোলাপ হোসেন, তার স্ত্রী কুলছুম বেগম, মেয়ে ময়না আক্তার ও শ্বাশুড়ি আনোয়ারা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের পিপি এ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, রায়ে গোলাপ হোসেনকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং অপহরণের দায়ে ১৪ বছর কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে উভয় সাজা একইসাথে চলবে। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় গোলাপ হোসেনের স্ত্রী কুলছুম বেগম (৪২), মেয়ে ময়না আক্তার (২০) ও শ্বাশুড়ি আনোয়ারা বেগম আনু (৫৭) কে বেকসুর খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।