শিরোনাম

South east bank ad

বরিশালে ইলিশ রক্ষায় অভিযান শুরু

 প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

এম.মিরাজ হোসাইন, (বরিশাল)

কীর্তনখোলা নদীর বরিশাল নগরীর ডিসি ঘাটসংলগ্ন এলাকা থেকে সোমবার দুপুর ১২টায় ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। এবছর ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে বরিশাল বিভাগের জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেবে সরকার। বিভাগের ৬ জেলায় ৩ লক্ষ ৭ হাজার ১২৪ জেলেকে এই সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছে মৎস্য অধিদপ্তর।

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম নিরাপদ করতে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন নদ-নদী এবং সাগরে সব ধরনের মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় সার্বক্ষনিক এই অভিযান অব্যাহত রাখবে জেলা প্রশাসনসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

অভিযানের উদ্বোধনকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস।

অভিযানের উদ্বোধনকালে জেলা প্রশাসক মোঃ জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, ৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে দেশের নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ মৌসুমে কেউ মাছ আহরণে নদীতে নামলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় জেলেদের জন্য বরাদ্দ করা চাল পৌঁছে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলে পরিবার ২০ কেজি করে চাল পাবে। এর আগে গত রবিবার গভীর রাতে সন্ধ্যা নদীতে মাছ শিকারের দায়ে আটক ৭ জন জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এদিকে মৎস্য অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক এর কার্যালয় সুত্র জানায়, এবছর ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে বরিশাল বিভাগের জেলেদের খাদ্য সহায়তা (চাল) দেবে সরকার। বিভাগের ৬ জেলায় ৩ লক্ষ ৭ হাজার ১২৪ জেলেকে সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছে মৎস্য অধিদপ্তর। মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে।
সরকারি এই নির্দেশনা অনুযায়ী ২২ দিন ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ। এ নির্দেশনা অমান্য করলে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা।

নিষেধাজ্ঞার এই সময়কে ঘিরে বিভাগের ছয় জেলার জেলে পরিবারের জন্য ৬ হাজার ৯৪২ দশমিক ৪৮ মেট্রিক টন ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বরিশাল বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তর। ফলে প্রতি পরিবার ২০ কেজি করে চাল পাবে।

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ইলিশ মাছ আহরণ করে এমন জেলের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৪৩ হাজার ১১৯ জন। এছাড়া জাটকা মাছ আহরণ করে এমন জেলের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৪২ হাজার ৮৯৯ জন। এই ৬ লক্ষ ৮৬ হাজার ১৮ জন জেলের মধ্যে ৩ লক্ষ ৭ হাজার ১২৪ জেলে পরিবার পাবে এই সহায়তা।

এদিকে বিভাগের মধ্যে বরিশাল জেলায় ৫১ হাজার ৭০০ জেলে পরিবারকে ১ হাজার ৩৪ মেট্রিক টন, পিরোজপুর জেলায় ১৭ হাজার ৭০০ জেলে পরিবারকে ৩৭৪ মেট্রিক টন, পটুয়াখালী জেলায় ৬৩ হাজার ৮০০ জেলে পরিবারকে এক হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন, ভোলা জেলায় এক লাখ ৩২ হাজার জেলে পরিবারকে দুই হাজার ৬৪০ মেট্রিক টন, বরগুনা জেলায় ৩৭ হাজার ৭৪ জেলে পরিবারকে ৭৪১ মেট্রিক টন ও ঝালকাঠি জেলায় তিন হাজার ৮৫০ জেলে পরিবারের জন্য ৭৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মৎস্য অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান তালুকদার জানান, ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ মৌসুমে কেউ মাছ আহরণে নদীতে নামলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি জেলে পরিবার ২০ কেজি করে চাল পাবে। প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এসব চাল উপজেলা মৎস্য অফিসের তালিকাভুক্ত জেলেদের ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে দেবেন। সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে গত কয়েক বছরে দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। আমরা এ ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।

উল্লেখ্য, গত বছর ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে ১ হাজার ২৬ টি, অভিযান পরিচালনা করেছে ২ হাজার ৫০৫ টি, আইন না মানায় মামলা করা হয় ১ হাজার ২৪৯টি, জেলে হাজতে প্রেরন করা হয় ১ হাজার ১৩৩ জনকে এবং জরিমানা করা হয় ২০ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: