শিরোনাম

South east bank ad

কাবিন ছাড়াই তালাক, কথিত স্ত্রী কর্তৃক ধর্ষণ মামলা

 প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা) :

বরগুনার কথিত সাংবাদিক গোলাম রাব্বির বিরুদ্ধে আবারো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষণের শিকার হওয়া সমাজ স্বীকৃত কথিত স্ত্রীর মা কমলা বেগম।

এর আগে চলতি বছরের আগস্ট মাসে ধর্ষণের শিকার হওয়া একজন স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করার দায়ে বরগুনা সদর থানায় ভুক্তভোগী নিজেই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ২০০৩ এর ৯ এর ১ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ০৪/০৬.০৮.২১।

গোলাম রাব্বি বরগুনা এলজিইডি অফিসের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম ও বরগুনা পৌরসভার কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা দম্পতির ছেলে।

০৪/০৬.০৮.২১ নং মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে- লম্পট ধর্ষণকারী গোলাম রাব্বির স্ত্রীর বান্ধবীকে স্ত্রী বাপের বাড়িতে থাকার সুযোগে থানাপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় ডেকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য খুন করে নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি প্রদান করে রাব্বি।

অন্যদিকে- গত ২৯ সেপ্টেম্বর কথিত স্ত্রী স্মৃতি আক্তার হাফসা (১৬) কে ধর্ষণের অভিযোগে বরগুনা সদর থানায় ভুক্তভোগীর মা মোসাঃ কমলা বেগম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ সংশোধনী ২০০৩ এর ৭/৯ (১) ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৩১/২৯.০৯.২১।

৩১/২৯.০৯.২১ নং মামলায় বলা হয়েছে- গত ২১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২ টার দিকে বরগুনা আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ২০২১ সালের পরীক্ষার্থী হিসেবে স্কুলে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়ে রাস্তায় বের হলে রাব্বি তাকে মোটরসাইকেলে জোর করে উঠিয়ে গৌরিচন্না খালার বাড়িতে নিয়ে যায়।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়- ২১ সেপ্টেম্বর হতে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় কথিত স্ত্রী হাফসাকে।

এর মধ্যে গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ২ দিন বরগুনা পৌরশহরের সদর রোডে অবস্থিত তাজবিন হোটেলের নিচতলায় সিঁড়ির ডানপাশের দ্বিতীয় রুমে নিয়ে ইচ্ছের বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ করে রাব্বি। এছাড়াও গত ২৬ সেপ্টেম্বর বরগুনা সদর উপজেলার ৪ নং কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের তুলসীবাড়িয়া এলাকায় রাব্বির বন্ধু মামুনের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। এতে হাফসা গোলাম রাব্বীকে বিবাহ করার জন্য বহুবার অনুরোধ করলেও রাব্বি নানা কৌশলে হঠাৎ চলতি বছরের গত ২৪ আগস্ট রেজিস্ট্রিকৃত একটি তালাকনামা পাঠায় হাফসাকে। তালাক নামাটিতে উল্লেখ রয়েছে ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন অর্ডিন্যান্সের ৭(১) উপ ধারা মোতাবেক তালাক প্রেরণ করা হয়েছে।
যেখানে স্মারক নং এ ২৬/২১ উল্লেখ রয়েছে।

তালাকনামাটিতে দেখানো হয়েছে- গত ২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর হাফসাকে বিয়ে করেন অভিযুক্ত গোলাম রাব্বি। তালাকের নোটিশ এ স্বাক্ষর করেছেন কাজী সৈয়দ মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ।

মামলার সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে- চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত মোট চার মাস থানাপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী পরিচয়ে হাফসাকে নিয়ে বসবাস করেন রাব্বি।

ভাড়া বাসায় থাকা অবস্থায় রাব্বির স্ত্রী হাফসার বান্ধবীকে ডেকে এনে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত রাব্বি। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ আগস্ট রাব্বির বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী নুপুর দেবনাথ একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

অনুসন্ধানে কথিত স্ত্রী কর্তৃক মামলায় উল্লেখিত ভাষ্য অনুযায়ী সেখানে দুইদিন অবস্থান এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। অন্তর্ভুক্তি ডায়েরিতে বরগুনা সদর থানার ডিউটি অফিসারের স্বাক্ষর রয়েছে।

অথচ মামলার কথা অনুযায়ী হাফসাকে গোলাম রাব্বি পথে-ঘাটে বিভিন্ন সময়ে উত্ত্যক্ত করতো, সেই সাথে কুপ্রস্তাব দিত। ২১ সেপ্টেম্বর হাফসাকে আদর্শ স্কুলের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় গোলাম রাব্বি এবং বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ করেছে কথিত স্ত্রী হাফসা। রাব্বির ভাড়াকৃত বাসার মালিক ও স্থানীয়রা বলছেন- রাব্বি হাফসাকে নিয়ে স্ত্রী পরিচয় থানাপাড়ার ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছে।

গোলাম রাব্বির কথিত স্ত্রী স্মৃতি আক্তার হাফসা বলেন- আমাকে বিভিন্ন স্থানে তুলে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করেছে। আমি বিয়ের জন্য বললেও আমাকে বিয়ে করেনি রাব্বি।

তার কাছে ঘটনার আগে রাব্বির সাথে ভাড়াকৃত বাসায় দীর্ঘ চার মাস কিভাবে রয়েছে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

বিয়ের কাবিন ছাড়া তালাকের বিষয়টি জানতে চাইলে বরগুনা কাজী অফিসের কাজী সৈয়দ মোঃ মহিবুল্লাহ জানান- কোন কাবিননামা ছাড়াই স্বামী তার স্ত্রীকে রেজিস্ট্রিকৃত তালাক দিতে পারবেন। তবে স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক দিতে হলে অবশ্যই কাবিননামা থাকতে হবে।

মামলার উপরে ভিত্তি করে রাব্বির পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

বরগুনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে, এম, তারিকুল ইসলাম জানান- কথিত সাংবাদিক গোলাম রাব্বির বিরুদ্ধে এর আগেও একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছিল। তখন তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। পরে সে জামিনে মুক্তি পেয়ে বর্তমানে বাইরে আছে।

জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আরেকজন স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে রাব্বি। পরে ওই স্কুল ছাত্রীর মা কমলা বেগম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। দ্বিতীয় মামলাটি হওয়ার পরপরই রাব্বি পলাতক রয়েছে। বিষয়টি তদন্তের পাশাপাশি রাব্বিকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: