শিরোনাম

South east bank ad

গলা কেটে হত্যার রহস্য উন্মোচন করলো পিবিআই

 প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মো. নজরুল ইসলাম, (ময়মনসিংহ) :

ময়মনসিংহের নান্দাইলের মোয়াজ্জেমপুরে পাওয়া বৃদ্ধের গলাকাটা লাশের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ২৩ সেপ্টেম্বর মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রাম থেকে ওই বৃদ্ধের (৭০) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ। হত্যাকান্ডের পর তদন্তকালে ডিজিটাল ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রথমে মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই। গত মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি আবুল হাসানকে নরসিংদী জেলার মাধবদী উপজেলার ফুলতলা গ্রামের চাঁন মিয়ার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় রহস্য উন্মোচন ও মূল আসামিদের গ্রেফতারে ব্যাপক তৎপরতা চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ময়মনসিংহ পিবিআই ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধানে পিবিআই ময়মনসিংহ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসের সার্বিক সহযোগিতায় ছয় দিনে এ চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার ময়মনসিংহ পিবিআই টানা ৩৪ ঘণ্টার অভিযানে এ হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন ও মূল হত্যাকারী আবুল হাসানকে (৩৫) গ্রেফতার করে।

পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস গতকাল জানান, নরসিংদী সদরের খাটেহারা পূর্বপাড়া গ্রামের আ: ছাত্তারের ছেলে মো: ফজলুল হক তার স্ত্রী-সন্তানসহ শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। গত সাত বছর আগে স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য হওয়ায় তিনি নিজ বাড়িতে এসে একাই বসবাস করতে থাকেন। বাড়ির অন্য বাসাগুলো ভাড়া দিতেন। টেক্সটাইল মিলে চাকরি করার সুবাদে নান্দাইল উপজেলার কালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে হত্যাকারী আবুল হাসান স্ত্রী নাজমীন আক্তারকে নিয়ে দেড় বছর যাবত ফজলুল হকের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। এ কারণে ফজলুল হক ও আবুল হাসানের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে।

হত্যাকান্ডের সপ্তাহখানেক আগে আবুল হাসান তার স্ত্রী নাজমীনের সিজারের জন্য ফজলুল হকের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা ধার নেন। এ সময় তিনি ফজলুল হকের কাছে কিছু নগদ টাকা দেখতে পান। পরে আবুল হাসান আবারো ফজলুল হকের কাছে টাকা ধার চাইলে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ফজলুল হকের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তার কাছ থেকে পুরো টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করেন আবুল হাসান।

পিবিআই পুলিশ আরো জানান, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আবুল হাসান কৌশলে ফজলুল হককে তার নিজ বাড়ি কামালপুর এলাকায় বেড়াতে যেতে রাজি করান। গত ২২ সেপ্টেম্বর নান্দাইলে নিয়ে এসে সারাদিন এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা করে রাত গভীর হলে বাহাদুরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে ধান খেতে নিয়ে ফজলুল হককে ধারালো দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা’টি ধান খেতেই ফেলে রেখে যান। ফজলুল হকের পাঞ্জাবির পকেটে থাকা নগদ ৩০ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যান হত্যাকারী আবুল হাসান।

পরে তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৩০ হাজার টাকার মধ্যে নগদ আট হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ফোন, আইডি কার্ড ও মৃতের কাপড়-চোপড়সহ ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিস উদ্ধার করে। পরে মঙ্গলবার বিকেলে আসামির স্বীকারোক্তি অনুসারে নান্দাইলের কামালপুরে ঘটনাস্থলের পাশের ধান ক্ষেত থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করে।

হত্যাকান্ডের ঘটনায় নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা গ্রামের চৌকিদার মজিবুর রহমান অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নান্দাইল থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে পিবিআই ময়মনসিংহ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, হত্যাকান্ডের সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা সে জন্য আসামিকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মামলাটি পিবিআই কর্তৃক অধিগ্রহণের জন্য পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। আজ বুধবার আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: