ওসির হস্তক্ষেপে নতুন করে সংসারে এলো শান্তি
শেখ সাঈদ আহম্মেদ সাবাব, (শেরপুর) :
অবশেষে শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ওসি'র সরাসরি হস্তক্ষেপে একটি ভেঙ্গে যাওয়া সংসারে আবারও ফিরে এলো শান্তি বাচ্চা পেলেন বাবাকে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধিগাঁও গ্রামে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আনুমানিক ৬ বছর পূর্বে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের ফুলহারী গ্রামের সৌকাত আলীর মেয়ে সালেহার সাথে কাংশা ইউনিয়নের গান্ধিগাঁও গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে শফিকুলের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পর তাদের সুখের সংসারে কোল জুড়ে ২ টি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। একটির বয়স দেড় বছর অন্যটির বয়স সাড়ে চার বছর।
এতদিন সংসারে মোটামুটি সুখ থাকলেও হঠাৎ করে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে।আনুমানিক গত ২ মাস আগে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শফিকুল তার স্ত্রী সালেহাকে মারধর করে। স্ত্রী সালেহা সে কারণে রাগ করে বাবার বাড়ীতে চলে এসে স্বামী শফিকুলের বিরুদ্ধে ঝিনাইগাতী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সালেহা কর্তৃক থানায় অভিযোগ দায়ের করায় এই ভুল বুঝাবুঝির চোরান্তভাবে রাগ করে শফিকুল তার স্ত্রী সালেহাকে তালাক প্রদান করে।
ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান পুরো ঘটনাটি জানতে পেরে এবং সালেহার ২টি সন্তানের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে তদন্তের ভার দেন এসআই মো. আব্দুর রাজ্জাককে। এসআই মো. আব্দুর রাজ্জাক উভয় পরিবারের সাথে পৃথক পৃথক ভাবে কথা বলেন ভুল সংশোধনের পরামর্শ দেন - এবং তাদেরকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওসি ঝিনাইগাতীর অফিসে হাজির করেন।
এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ একেএম বেলায়েত হোসেন, নলকুড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মজনু মিয়া, যুবলীগ নেতা রকিবুল ইসলাম রোকন সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত হয়ে থানা ওসির মাধ্যমে। অতঃপর ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান নিজ উদ্যোগে এসআই আব্দুর রাজ্জাকের সহায়তায় ২ পরিবারের লোকজন ও বিচ্ছেদকৃত স্বামী স্ত্রীকে আন্তরিক ভাবে বুঝানোর পর উভয় পরিবার সংসারটি পুনরায় সচল করতে সম্মতি প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দিবাগত রাতে পুনরায় ওই বিচ্ছেদকৃত স্বামী স্ত্রীকে নতুন করে রেজিষ্ট্রী কাবিনের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেওয়া হল একটি ভেঙ্গে যাওয়া সংসারে শান্তি।
এ ব্যাপারে ২ কন্যা সন্তানের জননী সালেহা জানান, ওসি স্যারের হস্তক্ষেপের কারণেই আজ আমি আবার ফিরে পেলাম আমার সংসার স্বামীকে বাচ্চা ফিরে পেলেন বাবাকে। আমি ওসি স্যার ও সহ সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সংসারটি পূণরায় একত্র করতে পেরে আমার খুবই ভাল লাগছে। ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, আমি শুধু একজন পুলিশ অফিসারই নই, একজন বাবাও। আমি সালেহার দুটি মেয়ে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই এমন উদ্যোগ নিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া একটি সংসারে তাদের শান্তি ফিরিয়ে দিয়েছি। এটা শুধু আমার দ্বায়িত্ব ও কতর্ব্য থেকে নয় একজন মানুষ হিসেবে দ্বায়িত্বে পালন করেছি মাত্র।