ট্রেনে ডাকাতি ও হত্যা জড়িত সন্দেহে আটক-২
এইচ কবীর টিটো, (গফরগাঁও) :
২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের শাস্তি দাবিতে টঙ্গীতে রেলপথ ও সড়ক অবরোধ করেছে স্থানীয় রাজনৈতিক একটি গ্রুপ।বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন জড়ো হয়।পরে কেউ ট্রেনে,বাসে চড়ে এলাকা ছাড়ে।
জাহাঙ্গীরের ‘বক্তব্যে’ বলেন, অনলাইনে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তারা এ কর্মসূচিতে নেমেছে।
টঙ্গীর সড়ক ও রেলপথ বন্ধ করে দেন তারা। এতে সড়কপথে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ।
এতে বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেন চলাচলে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে।ঠিক ২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার একই দিনে গাজীপুরের টঙ্গীতে ট্রেনের ধাক্কায় তাহমিনা বেগম (৩৮) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
আবার একইদিনে ঢাকা থাকে ছেড়ে আসা জামালপুর কমিউটার ট্রেনে ডাকাতি সংগঠিত হয় ট্রেনের ছাদে। এতে ডাকাতদের হাতে দুইজনের মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে একাত্তর টিভি সহ কিছু রসালো সাংবাদিক ফোন আলাপে তথ্য নিয়ে দেখালো ও লিখে দিলেন গফরগাঁও স্টেশানে থেকে এমন ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে।আমার প্রশ্ন হচ্ছে ঐ সাংবাদিকরা কি ডাকাতদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করছিলেন?আজ ২৫ তারিখ শনিবার,ঢাকা থেকে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনের ছাদে ডাকাতি ও হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে নগরীর কেওয়াটখালী এলাকা থেকে শিমুল (২৭) নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া ওই ঘটনায় আহত রুবেল মিয়াকে (২৮) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
সাংবাদিকতা এমন এক বিষয় যে,বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছেন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস, তথা আইসিআইজের একশরও বেশি সদস্য। মিট দ্য ইনভেস্টিগেটরস নামের মাসিক সিরিজে, তারা প্রতি মাসে তুলে আনে সেসব অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের দারুন সব কাজের কথা।এই সাংবাদিকেরা নিজেকে বস্তুনিষ্ঠতার উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছেন যেখানে,সেখানে আমাদের দেশে প্রেস মিডিয়ায় অনুসন্ধানীপ্রতিবেদন কোথায়?
আমাদের সাংবাদিকরা যখন দেশে বিদেশে বড় ভূমিকা রাখছে রাষ্ট্রিয় স্বার্থে সেখানে কিছু অগোছালো সাংবাদিকতা আমাদের দারুণ ভাবে হতাশ ও আহত করে। যারা দায়িত্বহীন সাংবাদিকতা করেন তারা দয়া করে এই পেশা থেকে সরে দাঁড়ান ।
আমাদের গফরগাঁওয়ে শিক্ষার হার ৭০%।এই এলাকার মানুষেরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছে।একটি অঞ্চলের অর্জন একদিনে হয়নি। কথা গুলো বলছিলেন, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সুলতান আহমেদ।
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় সর্বত্রই চলছে ৭১ টিভি ও বিভিন্ন পত্রিকায় তথ্যহীন ভিত্তিহীন সংবাদের প্রতিবাদ।
২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ২০২১ বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি প্রাইভেট ট্রেন ঢাকা জামালপুর কমিউটারের অতিরিক্ত যাত্রী হিসেবে ছাদে ভ্রমন করছিলেন কিছু মানুষ। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, টাকা পয়সা ডাকাতেরা ছিনিয়ে নিতে গেলে দুইজন ট্রেন যাত্রীকে জীবন দিতে হয়।
ময়মনসিংহ স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই কেওয়াটখালী ওভারব্রীজের কাছে মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা পয়সা নিয়ে নেমে পড়ে ডাকাতরা। জামালপুর স্টেশনে গিয়ে অন্য যাত্রীরা আহতদের খোঁজ পেলে তাদের ছাঁদ থেকে নামিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,কমিউটার ট্রেন ঢাকা থেকে বেলা ৩.৪০ মিনিটে ১ জন জিআরপির সিকিউরিটি নিয়ে ছেড়ে আসে।ঢাকা থেকে জামালপুর পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনে থামে ও যাত্রী উঠিয়ে ৫৭ মিনিট বিলম্বে পৌছায় ময়মনসিংহ রেল স্টেশানে রাত ৮.১৫ মিনিটে।
গফরগাঁও রেল ষ্টেশনে কমিউটার ট্রেন প্রবেশ করে ৬টা বেজে ৫৭ মিনিটে।ছাড়ে ৭টায়।ধলা পৌছায় ৭টা বেজে ১৩ মিনিটে(এখানে মহুয়া ট্রেনের সাথে ক্রসিং হয় জামালপুর কমিউটারের)ছাড়ে ৭টা বেজে১৯ মিনিটে ৫মিনিট বিলম্বে।
রাত ৮টায় পর ময়মনসিংহ স্টেশান ছেড়ে গিয়ে নারিন্দা স্টেশানের পর যাত্রীরা টের পেয়েছিলো ট্রেনের ছাদ থেকে রক্ত পড়ছে।
৭১ টিভি আর কিছু প্রিন্ট মিডিয়া সংবাদে দেখালেন একজন প্রতক্ষ্যদর্শী ঘটনার সাক্ষী হিসেবে ক্যামার সামনে দাঁড় করান ট্রেনের যাত্রী ফারুক নামের এক যুবককে।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে তারা ঢাকা থেকে কমিউটার ট্রেনের ছাদে ওঠে জামালপুরে আসছিলেন। ট্রেনটি ময়মনসিংহের গফরগাঁও রেলস্টেশন ছাড়ার পর ট্রেনের ছাদের যাত্রীদের অনেকেই ডাকাতদলের কবলে পড়েন। ৪-৫ জনের ডাকাতদলটি নাহিদসহ অনেক যাত্রীর কাছ থেকে মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোনসেট লুট করে ট্রেনের ইঞ্জিনের দিকে চলে যায়। এরপর ট্রেনটি রাত আনুমানিক পৌনে ৯টার দিকে ময়মনসিংহ রেলস্টেশন ছাড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই যাত্রী ফারুক ও নাহিদসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী এক হয়ে ট্রেনের ছাদে ডাকাতদের খুঁজতে যান। তাঁরা ডাকাতদের চিনতে পেরে কিছু বলার আগেই ডাকাতরা তাদের ওপর হামলা করে। এতে যাত্রী নাহিদ, রুবেল ও অজ্ঞাত পরিচয়ের তিনজন গুরুতর আহত অবস্থায় ট্রেনের ছাদেই পড়ে থাকেন।
এ বিষয়ে গফরগাঁও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ডাঃ কেএম এহছান এডভোকেট বলেন, গফরগাঁও স্টেশানে থেকে ছেড়ে যাবার পরেই এই ঘটনা ঘটতে শুরু করে,পথিমধ্যে স্টেশান ধলা,বালিপাড়া,কালিবাজার,সূতিয়াখালি,কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পরে ময়মনসিংহ জংশন স্টেশনে পৌঁছে রাত ৮.১৫ মিনিটে।এতগুলো স্টেশানে পেরিয়ে থামিয়ে আসলো কোথাও ডাকাতি হচ্ছে বলে সারা শব্দ হলো না,কোন যাত্রী বা একজন জিআরপি গার্ট চিৎকার দিলো না এটাতে কি ভাবা যায়?কোন তথ্য প্রমান ছাড়া এ ধরনের প্রচার গফরগাঁওয়ের মানুষের জন্য কষ্টে সামিল।আমরা এর নিন্দা জানাই।
বিশেজ্ঞমহল মনে করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে কে অকার্যকর প্রতিষ্ঠান কিংবা আতঙ্ক ছড়াতে ও নিরাপদহীন পরিবহন হিসেবে প্রমানের জন্য এটা কোন ষড়যন্ত্রের অংশ।
গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশান মাষ্টার জহিরুল ইসলাম বলেন,আমাদের উপর বিভিন্ন জায়গা সংস্থা থেকে চাপ আসে।আমি আমার স্টেশানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গলো জিআরপি থানার সাব ইন্সপেক্টর শাহাদাত হোসেন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করি দীর্ঘ সময় ধরে। কোথাও সন্দেহ করার মত কিছু পাইনি।তাছাড়া ট্রেন আসার সাথে সাথে জিআরপি সদস্যরা সতর্ক থাকেন।স্টেশানে ট্রেন মাত্র ২ মিনিট বিরতি নিয়ে ছাড়ে।২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার নিয়মিত রুটিনে কোন সমস্যা হয়নি।
এই বিষয়ে গফরগাঁও উপজেলার লংগাইর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল আমিন বিপ্লব, মানবাধিকার কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা ফকির এ মতিন ও এডভোকেট সাইফুস সালেহীন বলেন, বিষয়টি অতন্ত্য দুঃখজনক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা এমন ধরনের ভ্রান্ত তথ্য পরিবেশন সঠিক নয় । এমন প্রোপাগান্ডায় গফরগাঁও উপজেলার সুনামকে নষ্ট করতে এমন ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশনের জন্য নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি এই জগন্যতম ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।