শিরোনাম

South east bank ad

বাজারে পাটের দাম কম, বিপাকে চাষি

 প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মো. নজরুল ইসলাম, (ময়মনসিংহ ব্যুরো) :

ময়মনসিংহসহ তিন জেলার পাট বেচাকেনার সবচেয়ে বড় বাজার অষ্টধার। এ বাজারে ক্রমেই কমছে পাটের দাম। এতে ভালো ফলন হলেও ন্যায্য দামে পাট বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তবে পাট ব্যবসায়ীদের দাবি, লোকসানের শঙ্কায় তাঁরা পাট কিনতে পারছেন না। অনেকেই পাট কিনে বিক্রিও করতে পারছেন না বলে দাবি করেছেন। এ অবস্থায় পাটের বাজারে সরকারের নজরদারির প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সদর উপজেলার অষ্টধার ইউনিয়নের অষ্টাধার ময়মনসিংহ অঞ্চলের পাটের বাজার হিসেবে খ্যাত। এ বাজারে ময়মনসিংহ ছাড়াও জামালপুর, শেরপুর জেলার ব্যবসায়ীরা পাট কেনাবেচা করেন। প্রতি শুক্র এবং মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ বাজারে চলে পাট ক্রয়-বিক্রয় হয়। তবে বাজারে চরাঞ্চলের শত শত কৃষক পাট নিয়ে আসলেও ক্রেতা তেমন না থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে চাষিদের।

জামালপুর সদরের কৃষক জাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘সাত মণ পাট এনে ২ হাজার ৭০০ টাকা মণ বিক্রি করেছি। গত সপ্তাহে পাটের বাজার ছিল তিন হাজার টাকা। যতই দিন যাচ্ছে, পাটের দাম কমছে। কৃষক হওয়ায় আমরা সমস্যায় পড়েছি। পাটের দাম ২ হাজার টাকা হলেও আমাদের বিক্রি করতে হবে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ বাজারে চার জাতের পাট কেনাফ, তোষা, মেস্তা এবং দেশি পাট কেনাবেচা হচ্ছে। এর মধ্যে কেনাফ পাটের দাম বেশি। গুণে ও মানেও এটি ভালো বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তবে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা।

সদর উপজেলার সেনেরচর গ্রামের হাসান আলী বলেন, ‘এ বছর ৬০-৭০ মন পাট হয়েছে। গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় ব্যাপারীদের লাভ হয়েছে। এবার কারখানা পাট না কেনায় ব্যাপারীরা পাট কিনছে না। এ জন্য আমরা সমস্যায় আছি।’

নকলা উপজেলা আদর্শ গ্রামের কৃষক ইমান আলী বলেন, ‘পাটের দাম মোটামুটি ভালো আছে। আমরা কৃষকেরা দাম একটু বেশি পেলে ভালো লাগে। দাম কমলে সমস্যা হয়।’

শেরপুরের নকলা উপজেলার টাঙ্গালিয়া পাড়ার কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘১০ কাঠা জমিতে ২০ মণ পাট হয়েছে। খরচ হয়েছে ২৫ হাজারের মতো। পাট প্রায় ৫৫ হাজার টাকার মতো বিক্রি করতে পারব। এ বছর দাম একটু কম, তাই লাভও কম হচ্ছে।’

এদিকে পাট ব্যবসায়ী উমা শংকর প্রসাদ বলেন, ‘১৫ বছর ধরে পাট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছি। সরকার পাট না কিনলে বাজারের অবস্থা ভালো হবে না। অনেক কোম্পানির কাছে চার-পাঁচ বছর ধরে পাটের টাকা পড়ে রয়েছে, তুলতে পারছি না। এ বছর কিছু পাট কিনে স্থানীয় জনতা কোম্পানির কাছে বিক্রি করেছি।’

অপর ব্যবসায়ী নিকুঞ্জ পাল বলেন, ‘পাকিস্তান আমল থেকেই পাট ব্যবসা করছি। গত কয়েক বছর ধরে পাটের বাজার খুবই খারাপ যাচ্ছে। পাট কিনে মজুত করে বিপাকে আছি। এ ব্যবসা ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’

সুশীল প্রসাদ বলেন, ‘গত বছরের মতো লাভের আশায় এ বছর ৮০০ মণ পাট কিনে বিপাকে পড়েছি। ৩ হাজার ৩০০ টাকা ধরে পাট কিনলেও এখন দাম পড়ে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় এসেছে। সরকার পাট না কিনলে দাম ওঠার সম্ভাবনা নেই।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মতিউজ্জামান বলেন, ‘জেলায় এ বছর পাঁচ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। চাহিদা এবং জোগানের ওপর নির্ভর করে পাটের দাম ওঠানামা করছে। সামনে হয়তো দাম বাড়তেও পারে। তবে বিষয়গুলো সরকারকে অবহিত করা হবে।’

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: