নিরাপত্তা সপ্তাহে ট্রেনে ডাকাতের আক্রমনে নিহত-২, আহত-২
শামীম আলম, (জামালপুর) :
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুর দেওয়ানগঞ্জগামী ফিফটি আপ কমিউটার ট্রেনের ছাদে ডাকাতের কবলে পরে দুই যাত্রীর প্রান গেছে, আহত হয়েছে আরো দুইজন। রেলওয়ের চলমান বিশেষ অভিযানের মধ্যে ছাদে যাত্রী মারা যাওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ সাধারন মানুষের।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে ডাকাতের এলোপাথালি আক্রমনে দুইজন নিহত হয়।একজনে পরিচয় পাওয়া গেলেও অন্যজন অজ্ঞাত। নিহত নাহিদ( ৪০) ওয়াহিদের ছেলে, সে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ীর মিতালী বাজার এলাকার বাসিন্দা, নিহত ওই ব্যক্তি ঢাকায় নেন্সলে কোম্পানীতে চাকরি করতো।এছাড়াও ইসলামপুর উপজেলা মাঝ পাড়ার হেরু মিয়ার ছেলের গুরুত্বর আহত রুবেল মিয়া জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।শেরপুর জেলার বাসিন্দার রফিক সামান্য আহত হয়ে বাড়িতে চলে গেছে।
করোনা মহামারীর মধ্যেও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ট্রেনের বগিতে গাদাগাদি সেখানে জায়গা না-থাকায় ট্রেনের ছাদে বেশ কিছু যাত্রী জায়গা করে নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। রাতে গফরগাঁও স্টেশন অতিক্রম করার পর, হঠাৎ সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দল ট্রেনের ছাদে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলোপাথালি আক্রমন করে বেশ কয়েক জনকে আহত করে। তাদের কাছ থেকে টাকা, মোবাইল, সম্পদ ছিনিয়ে নেয়। এসময় দুই যাত্রী প্রতিবাদ করতে গেল ডাকাত দলের সদস্যরা তাদের ব্যাপক আক্রমন চালালে তারা গুরুত্বর আহত হয়ে অচেতন অবস্থায় ট্রেনের ছাদেই পরে থাকে।
পরে জামালপুর স্টেশন থেকে তাদের উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালের নিয়ে গেল কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়ে দেয় রোগী আগেই মারা গেছে।
এদিকে রেলওয়ের চলমান বিশেষ নিরাপত্তা সপ্তাহের মধ্যে যাত্রী কিভাবে ট্রেন ছাদে উঠে সেই সাথে ডাকাতির ঘটনায় বিস্মিত করেছে সাধারন যাত্রীদের। পাশাপাশি তারা জানান এই রুটে যাত্রী সেবার মান সবচেয়ে নিম্নমানে ও অনিরাপদ। সরকারে উচিত রেলের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা সেবার মান বাড়ানো, রেল নিরাপত্তায় যারা থাকে আরো পেশাদারিত্ব বাড়াতে হবে।লোভ কমাতে হবে বলে মনে করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ফারুক জানান, গফরগাঁও স্টেশন পাড় হবার পর থেকে ডাকাতের দল আচমকা অস্ত্রসহ এলোপাথালি গন হারে সবাইকে প্রচুর মারতে শুরু করে। আমাকে মেরে গলায় চাকু ধরে, পরে আমি কিছু করার আগেই মোবাইল সেট ও টাকা বের করে দিয়ে দেই।
নাহিদের স্ত্রী বিপাশা জানান, প্রচুর ভিড়াভীড়িতে আমার স্বামী আমাকে বগির ভিতর উঠাতে পারলেও সে উঠতে পারেনি, পরে সে কোন রকম ট্রেনে ছাদে উঠে, সে আমাকে ট্রেনে ছাদ থেকে কয়েক বার ফোনে জানিয়েছে এখানে অনেক ভিড়, কয়েকটা স্টেশন পরে ভিড় কমলে আমি নেমে পরবো। শেষ বার বলেছে ময়মনসিংহ নামবে কিন্তু নামেনি এরই মধ্য তাকে ফোন করে পাচ্ছি না। পরে এক ব্যক্তি আমাকে জানায় আপনি যার সাথে জানালা দিয়ে কথা বলেছিলেন তার অবস্থা খুব খারাপ। সে ডাকাতের আক্রমনের শিকার হয়ে , আরো অনেকের অবস্থা খারাপ। পরে জামালপুর স্টেশনে পুলিশ ছাদ থেকে আমার স্বামী সহ আরো দুইজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
স্টেশন মাস্টার আসাদুজ্জামান বলেন, আমি লোকমুখে শোনাতে পাই কমিউটার ট্রেনের ছাদে কোন ধরনের অপৃতিকর ঘটনা ঘটেছে, আমি সাথে সাথে নিরাপত্তা বাহিনী, জিআরপিকে জানায়। তারা ট্রেনের ছাদ সার্স করে অচেতন অবস্থায় ওই দুইজন কে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
জামালপুর জিআরপি থানার এএসআই মো,মিলন মিয়া জানান,সত্যতা স্বীকার করেন,এই ঘটনার খবর পেয়ে সবাইকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষনা করে। তাদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, অন্য জন অজ্ঞাত। এখনো কোন মামলা হয়নি সকল তথ্য উপাত্ত নেয়ার পর মামলা করা হবে।