বরগুনায় শিক্ষার্থী সংকটে পড়তে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা) :
বৈশ্বিক করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাব কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় খুলে দেয়া হয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকায় জরাজীর্ণ অবস্থা হয়েছে শিক্ষাঙ্গন ও শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকদেরও পাঠদানে পড়েছিল মরীচিকা।
তবুও দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকারের সাহসী ভূমিকায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শিক্ষাঙ্গন। গতকাল রোববার দিনটি এক মহামিলনের দিন হিসেবেই আখ্যা পেয়েছে।
শিক্ষক তাদের শিক্ষার্থীদের পেয়েছে, শিক্ষার্থীরা তাদের মূল পাঠ্যসূচিতে প্রবেশ করতে পেরেছে, পাশাপাশি বন্ধুদের সাথে দীর্ঘ দিনের না বলা গল্পগুলো বলার সুযোগ পেয়েছে। তবুও যেন কিছু একটা কমতি রয়েই যায়। কি সেই কমতি?
বরগুনার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ভাষ্যমতে- দীর্ঘসময়ের এ বন্ধে অলস দিন কাটাচ্ছিল শিক্ষার্থীরা। মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পরিবার থেকে উঠে আসা মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়েছে।
তারা বলেন- দীর্ঘ এ সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছাত্রীদের হারাতে হয়েছে শিক্ষাজীবন থেকে। পাঁচ ভাগের তিন ভাগ ছাত্রীদের বিয়ে হয়েছে, কেউবা এক সন্তানের জননী হয়ে দিব্যি সংসার ও সন্তানের দেখভালএ ব্যস্ত সময় পার করছে।
অন্যদিকে- একই ভাবে ছাত্ররাও তাদের পরিবারের অর্থনৈতিক দিক সামাল দিতে করোনার মধ্যেও শিল্প-কলকারখানা খোলা থাকায় চাকরির জন্য পাড়ি জমিয়েছে রাজধানী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন পোশাক কারখানায়। এখন আয়-রোজগারের জন্য নিজেদের মনোনিবেশ করেছে তারা।
এমন অবস্থায় শিক্ষাঙ্গন ভুগবে শিক্ষার্থী সংকটে। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থী। এতে করে হারাতে হতে পারে শিক্ষাব্যবস্থার মূল ধারা। যা দেশের জন্য এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। জ্ঞানশূন্য একটি রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড়াতে হতে পারে বহির্বিশ্বে। ধার করা জ্ঞান নিয়ে চলতে হতে পারে এসকল ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে।
এমন মন্তব্য কেবল শিক্ষকদেরই নয়, বরং বরগুনার শিক্ষানুরাগী ও সচেতন মহলেরো।
তারা বলছেন- করোনাকালীন দীর্ঘদিনের এ শিক্ষা সংকট পূরণ হবার নয়। তবুও জ্ঞান অর্জন ও পাঠ্যসূচির সঠিক পাঠ গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থী, পরিবার, শিক্ষকদের পদক্ষেপের পাশাপাশি সঠিক পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনায় সরকারের নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা অতীব জরুরী।