শিরোনাম

South east bank ad

মাতৃত্বকালীন, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভূয়া মোবাইল নম্বরে যাওয়ার অভিযোগ

 প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

শরিফা বেগম শিউলী, (রংপুর) :

রংপুর সদরে সদ্যপুষ্কুরিনি ইউনিয়নে নারগিস নামের এক নারীর মাতৃকালীন ভাতা'র ২২,৫০০ (বাইশ হাজার পাঁচ শত)টাকা আত্মসাৎ করেছেন- সদ্যপুস্কুরিনি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সুরভী নামে এক কর্মকর্তা। নার্গিস বেগম বলেন আমি আমার মোবাইল নাম্বার দিয়েছিলাম। সুরভি নামে ঐ কর্মকর্তা চালাকি করে নিজের মোবাইল নাম্বার দিয়ে আমার মাতৃকালীন ভাতা তুলে খাচ্ছে। আমি তার সাথে যোগাযোগ করলে সে বলে আমার মোবাইল নাম্বারে টাকা আসে আমি তুলে নেই। আপনার কি করার আছে করেন।

এ ব্যাপারে সদ্যপুস্কুরিনি ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমাদের এখানে অভিযোগ দিয়েছে। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি সুরভীকে বলেছিলাম গরিবের টাকাটা দিয়ে দেন।সে দেয়নি সুরভী নামে ঐ কর্মকর্তা খুব বেয়াদব বলেন সচিব। ঐ কর্মকর্তা সুরভীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমার একাউন্টে টাকা আসে আমি টাকা ফেরত দিবো কিন্তু নিজে সময় দিয়ে টাকা না দিয়ে বিভিন্ন ভাবে টালবাহানা করে আসচে।

এদিকে আসমা বেগম থাকেন রংপুরের পীরগাছা পারুল ইউনিয়নের সেছাকান্দি গ্রামে। বয়স একশো ছুঁই ছুঁই। এক সময় বাড়ি বাড়ি গিয়ে সহি কোরআন শিক্ষা দিতেন। বয়সের ভারে এখন সেটাও বন্ধ। সংসার চালানোর খরচ যোগানোর কোন পথ নেই। ব্যাংকে নিয়মিত বয়স্ক ভাতার টাকা তুলতেন তিনি। কিন্তু বছর দেড় এক থেকে মোবাইল অ্যাকাউন্ট খোলার পর থেকে আর টাকা পান না তিনি। তার টাকা যায় খুলনার এক নম্বরে বললেন বৃদ্ধার নাতি রিপন।

গতকাল রবিবার সরজমিনে গেলে জানা যায়,রংপুরে বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীর মাসিক ভাতার প্রায় কোটি টাকারও বেশী ভুয়া মোবাইল নম্বরের অ্যাকাউন্টে পাঠানোর ফলে গায়েব হয়ে গেছে। এটা ভুল, না কি কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ধ চক্র তার সঠিক ব্যাখ্যা নেই কারোই কাছে। সমাজসেবা কার্যালয়ে বার বার অভিযোগ করেও মিলেনি কোনো সমাধান। সরকার যেখানে বয়স্ক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধীদের সাবলম্বী করার চেষ্টা করছেন, ঠিক তখনি রংপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নে অসহায় এই মানুষদের টাকা যাচ্ছে কোথায় নিজেও জানেন না ভাতাভোগীরা।

পীরগাছার ২ নং পারুল ইউনিয়নের বাসিন্দা আফজাল হোসেন দৈনিক আমাদের কন্ঠকে বলেন, বাবা হামরা প্রথম বার টাকা পাইছি আর কোনো টাকা মোর আইসে নাই বাহে। হামরা এইটার বিচার চাই। ঐ একই গ্রামের আছিয়া বেওয়া জানান, তিনি ব্যাংক থেকে বেশ কয়েকবার ভাতা পেয়েছে কিন্তু মোবাইল নম্বর নেওয়ার পর থেকে আর ভাতা পাননি। এই গ্রামে প্রায় ৭২ জন ভাতাভোগীর একই অবস্থা। তাদের অভিযোগ বই আছে ভাতা নাই দেখিয়াও দেখার কেউ নাই।
বার বার উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়েও পাননি কোন সমাধান। অফিসেও থাকেন না অফিসার দিনের বেশিভাগ সময়ে বললেন ভাতাভোগীর স্বজনরা ।

উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর পীরগাছা গেলে দেখা যায় সমাজ সেবা অফিসার এনামুল হক নাই। পরে তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বন্ধুর বিয়ে খেতে গাইবান্ধায় গিয়েছেন। এব্যাপারে রবিবার আসতে বলে অফিসে। প্রতিবন্ধীর এই মাসিক ভাতার প্রায় কোটি টাকারও বেশী ভুয়া মোবাইল নম্বর অ্যাকাউন্টে পাঠানোর ফলে গায়েব হয়ে গেছে বললেন এই ২ নং পারুল ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান। তিনি জানান, এই ইউনিয়নে প্রায় ৫ থেকে ৬শ জন অসহায় মানূষ দীর্ঘদিন যাবত এই ভাতা থেকে বঞ্চিত।

এ ব্যাপারে কেউই ভ্রকক্ষেপ নেয় না। আমার জানা মতে রংপুর জেলায় প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার জন মানুষের প্রায় ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা এভাবেই গায়েব হয়ে গেছে। আর এই ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কারন একটাই মোবাইল একাউন্ট। অনেক সময় প্রতারক এর খপ্পরেও পরছেন অনেকেই।

তবে বই আছে ভাতা নাই এটার বাস্তবতা স্বীকার করে আশার বানী শুনালেন এই ইউপি সচিব মোঃ মোস্তাক আহমেদ। তিনি জানান, তিন বছরের এককালীন টাকা ব্যাংক থেকে পেলেও আর কোনো টাকা পান নাই মোবাইল থেকে। এটা বাস্তব সত্য। তবে এব্যাপারে আমরা উরদ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেছি। খুব তারাতারি এর সমাধান হবে বলে জানান তিনি।

তবে মধ্যসত্ত ভোগীদের দাবি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এই ভাতা দেওয়া হলে হবে না কোনো অনিয়ম আর দুর্নীতি আর এটাই প্রত্যাশা রংপুরের পীরগাছা এই ইউনিয়নের ভাতাভোগীদের।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: