শিরোনাম

South east bank ad

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গরু ও মহিষ দিয়ে হাল চাষ

 প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা) :

গরু দিয়ে হাল চাষ গ্রামীণ সমাজের কৃষকদের একমাত্র অবলম্বন থাকলেও আজ তা দুর্লভ। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন তা বিলুপ্তির পথে। গ্রামীণ এই ঐতিহ্য ধরে রাখা এখন প্রায় দুরূহ। মানুষ এখন সময়ের সাথে সাথে আধুনিকতার তালে এগিয়ে চলছে।

তবে যান্ত্রিকতার দাপটে ঐতিহ্যের এসব কৃষি উপকরণ কৃষকের ঘরে কতদিন টিকে থাকে; তা ভবিষ্যতই বলে দিবে। গরু দিয়ে হালচাষ না থাকায় গ্রামের মানুষের মাঝে অলসতা বিরাজ করছে। গরুর গোবর দিয়ে তৈরি জৈব সার দিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় যে শাক সবজি হত, তা এখন আর আগের মত ফলছে না। সময়ের বিবর্তনে আজ সেই ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে।

জমি চাষের ঐতিহ্যবাহী এই চিরাচরিত পদ্ধতিতে ছিলো- গরু-মহিষ, জোয়াল ও লাঙল দিয়ে জমি চাষ। লাঙ্গল দিয়ে হালচাষের পরে জমি সমান করতে মই দেয়া হতো। সেটাও এই গরুর মাধ্যমেই। এটি ছিলো অনেক উপকারী এক পদ্ধতি। কারণ লাঙলের ফলা জমির অনেক গভীরে প্রবেশ করে মাটিকে আলগা করত খুব সহজেই। গরুর খুড়ার কারণে জমি কর্দমাক্ত করত অনায়াসে। গরুর গোবর জমিতে পড়ে জমির উর্বরতা শক্তি অনেক বৃদ্ধি করতো।

পৃথিবীর বুকে প্রথম দিকে ঘোড়া দিয়ে জমিতে হাল চাষ করা হতো। ধীরে ধীরে গরু ও মহিষ দিয়ে হাল চাষের প্রবণতা বেড়ে যায়। যা মধ্যযুগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত চলমান ছিল। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ সেই গরু ও মহিষ দিয়ে হাল চাষ কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেল।

কিন্তু কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যটি। দেশের গ্রামীণ জনপদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ছোঁয়াই হারিয়ে গেছে এই চিরচেনা দৃশ্যটি। গরু ও লাঙ্গল দিয়ে হালচাষ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একদিন অতীতের গল্প হিসেবে গ্রহণ করবে।

একসময় দেখা যেত সেই কাক ডাকা ভোরে কৃষকরা গরু ও কাঁধে লাঙল-জোয়াল নিয়ে বেরিয়ে পড়তো মাঠের জমিতে হালচাষ করার জন্য। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তনের ছোঁয়াও লেগেছে কৃষিতে। এখন আর সেই কাকডাকা ভোরে কাঁধে লাঙল-জোয়াল নিয়ে মাঠে যেতে আর দেখা যায় না কৃষকদের।

কৃষি প্রধান বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গরু, লাঙল ও জোয়াল। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হালচাষের পরিবর্তে এখন ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে অল্প সময়ে জমি চাষ করা হচ্ছে।

বিজ্ঞানীদের কথা অনুযায়ী যতই আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া পৃথিবীর বুকে ফুটে উঠবে, ততই ধ্বংসের কারণ হয়েও দাঁড়াবে। এজন্যই আগের মত কোন ধরনের খাবার এই তেমন একটা সেকালের স্বাদ খুঁজে পাওয়া যায় না। পাওয়া যায় না আসল খাবারের শক্তি। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া গরু দিয়ে হাল চাষ আছে শুধুই স্মৃতি।

বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুর রশিদ জানান- আধুনিকতার ছোঁয়ায় গরু দিয়ে হাল চাষ হারিয়ে গেলেও এ পদ্ধতি ছিল ফলনের মুখ্য পদ্ধতি। গরু দিয়ে হাল চাষের ফলে সবজির ফলন অত্যন্ত ভালো হতো। সবজিতে পাওয়া যেত প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও স্বাদ যুক্ত খাবারের আয়েস।

ট্রাক্টর ও টিলার তৈরি হওয়ায় অধিকাংশ কৃষকরাই আজ অলস হয়ে গেছে। তবে এ আধুনিক প্রযুক্তির ফলে কৃষিতে উৎপাদন খরচ কমেছে ও কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। ফলে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারে কৃষকরা বেশী আগ্রহী হচ্ছে। তবে লাঙল-গরুর হাল চাষ আজও গ্রামীণ সমাজের বুকে স্বর্নাক্ষরে গেঁথে রয়েছে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: