জামিন পেয়ে ২৪ দিনেও মুক্তি পায়নি আরিফ
মোঃ রাজু খান, (ঝালকাঠি) :
ভাসমান ভাঙারীর দোকানে প্রবেশ করে ঘুমন্ত কহিনুর বেগমকে মারধর এবং কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। ডাকচিৎকার দিলে স্থানীয়রা ধাওয়া করে আরিফুল ইসলাম (১৬) নামের এক কিশোরকে আটক করে। পরে থানা পুলিশকে সংবাদ দিয়ে সোপর্দ করা হয়। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের পশ্চিম পাশের্ব দপদপিয়া এলাকায় গত ৮মার্চ এঘটনা ঘটে। ৯ মার্চ কহিনুর বেগমের স্বামী ভাঙারী ব্যবসায়ী মো. বেল্লাল সরদার বাদী হয়ে নলছিটি থানায় মামলা (০৭) দায়ের করেন। নলছিটি থানা পুলিশ আদালতে সোপর্দ করলে আদালত কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়। আরিফুল ইসলাম ভোলা লালমোহন উপজেলার পাঙ্গাইস্যা গ্রামের মৃত. মো. সোহেল এর পুত্র। মামলার এফআইআর ও আদালতে প্রেরণপত্রে এসব তথ্য জানাগেছে।
জানাগেছে, আসামীর সঠিক ঠিকানা ও অভিভাবকের সন্ধান না পাওয়ায় কারাকর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারীভাবে আইনগত সহায়তা পেতে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে আবেদন করে আরিফুল। এদিকে আসামী আরিফুল অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাকে পাঠানো যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে। লিগ্যাল এইড প্যানেল আইনজীবী মানিক আচার্য্য মামলাটি পরিচালনা করলে গত ০৮ আগস্টের জামিন শুনানীর ধার্য্য তারিখে কারাবন্ধি আসামী আরিফুলের জামিন মঞ্জুর করেন নারী ও শিশু আদালতের বিচারক এমএ হামিদ। জামিনদার না থাকায় প্যানেল আইনজীবী সহকারী রনিকে জামিনদার করে আদালতে জামিননামা জমা দেন এডভোকেট মানিক আচার্য্য। ঝালকাঠি আদালত থেকে জামিন নামা কারাগারে প্রেরণ করলে কারাকর্তৃপক্ষ যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়। জামিন হওয়ার ২৪দিন অতিবাহিত হলেও বৈধ কোন অভিভাবক না পাওয়ায় সেখান থেকে বের হতে পারছে না আরিফুল।
ঝালকাঠি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মো. শিবলী নোমান খান জানান, নলছিটির একটি মামলায় আরিফুল ইসলাম নামে এক কিশোরকে কারাগারে প্রেরণ করলে তাকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে হস্তান্তর করে কারাকর্তৃপক্ষ। যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র (বালক) সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন এক পত্রের মাধ্যমে লিগ্যাল এইড সহায়তার আবেদন করেন। তাকে আইনী সহায়তা দিয়ে জামিন করানো হয়েছে। কিন্তু তার সঠিক স্থায়ী ঠিকানা নিশ্চিত হতে না পারায় বৈধ অভিভাবক পাওয়া যাচ্ছে না।
ঝালকাঠির কারাধ্যক্ষ জান্নাত উল ফরহাদ জানান, আরিফুল ইসলাম ভবঘুরে প্রকৃতির হওয়ায় তার কোন সঠিক ঠিকানা খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আরিফুল ইসলামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সে ভোলা লালমোহন উপজেলার পাঙ্গাইস্যা গ্রামের মৃত. মো. সোহেল এর পুত্র। আমাদের কাছে জামিননামা চলে আসলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছি।
ঝালকাঠি সমাজ সেবা প্রবেশন কর্মকর্তা সানজিদা আয়েশা জানান, যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্ধী কিশোর আরিফুল ইসলামের জামিন হয়েছে গত ০৮ আগস্ট। জামিনের ২৪দিন অতিবাহিত হলেও বৈধ অভিভাবক না পাওয়ায় বের হতে পারছে না। নিয়মানুযায়ী তাকে মুক্তি দিয়ে বৈধ অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করতে হয়। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সঠিক ঠিকানা বের করে বৈধ অভিভাকের হাতে হস্তান্তর করতে।