নামের মিলে চোরের বদলে ব্যবসায়ীকে চালান আদালতে
ফরিদুল ইসলাম রঞ্জু, (ঠাকুরগাঁও) :
১০ বছর আগের সাইকেল চুরির মামলার আসামীকে না আটক করে নামের মিল থাকায় ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ভুল ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২৩ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে বালিয়াডাঙ্গী প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন আটক ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী রুপসানা আকতার।
গ্রেফতার আব্দুর রাজ্জাক উপজেলার মহিষমারী গ্রামের আলিম উদ্দীন ওরফে বৈশাখুর ছেলে। তিনি বালিয়াডাঙ্গী বাজারের মেইন রোডে দীর্ঘ দিন ধরে মুদি ও মুড়ির ব্যবসা করে আসছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রুপসানা বলেন, সোমবার দুপুরে আমার স্বামীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমিসহ পরিবারের স্বজনরা থানায় খোঁজ নেই। এ সময় পুলিশ বলে, আমার স্বামীর নামে চুরির মামলা রয়েছে। মামলার কাগজপত্র দেখতে চাইলে ঠাকুরগাঁও আদালতে গিয়ে খোঁজ নিতে বলেন।
বিকেলে আমি ঠাকুরগাঁও আদালতে মামলার কাগজপত্র তুলে দেখি, ২০১১ সালে ১৬ জুন রাণীশংকৈল থানায় বাইসাইকেল চুরির একটি মামলায় আমার স্বামীকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, মামলার কাগজপত্র যাচাই করে দেখি, মামলার প্রকৃত আসামি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের জিয়াখোর গ্রামের তসলীম উদ্দীন ওরফে বুধু মোহাম্মদের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক। তিনি নেকমরদ বাজারে বাইসাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন। ওই সময় বাজারের লোকজন বাইসাইকেলসহ তাকে রাণীশংকৈল থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
দীর্ঘ ১০ বছর পর ওই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ। তারা প্রকৃত আসামিকে গ্রেফতার না করে আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।
মামলার কাগজপত্রে দেখা গেছে, ২০১১ সালে আব্দুর রাজ্জাক নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। তখন তার বয়স ছিল ৩৫ বছর। ২০২১ সালে তার বয়স হবে ৪৫ বছর। অথচ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী বয়স ৩৩ বছর।
বালিয়াডাঙ্গী বণিক সমিতির সভাপতি ও বড়বাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকরাম আলী জানান, নির্দোষ ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রতিবাদে কর্মসূচি দেবে বালিয়াডাঙ্গী বণিক সমিতি। সংগঠনের সকলের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় বসা হবে।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল হক মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টিতে আমাদের কোনো ভুল নেই। আদালতের ভুলের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে এটি আজ সমাধান হয়ে যাবে আশা করছি।