হকারিতে পরিবার চলে মফিজা বেগমের, পায়নি প্রধানমন্ত্রীর ঘর
মোঃ লিহাজ উদ্দিন,পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
মাথায় দোকান নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিশুদের মুখরোচক খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করতে হরহামেশাই পুরুষদের দেখি আমরা। পুরুষদের পাশাপাশি এখন নারীদেরও দেখা যায়। এমনি এক সাহসী নারী মফিজা বেগম। ৪৭ বছরের এ নারী তার পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন শিশু খাদ্য বিক্রির কাজ। ওই নারী পঞ্চগড় সদর উপজেলার কমলা পাড়া এলাকার মৃত তৌহিদুল ইসলামের স্ত্রী। দিনে ৩ শ, থেকে ৫ শত টাকা বেচাকেনাই সংসার চলছে তার। কোনমতে অর্ধাহারে অনাহারে দিন পার হলেও পরিবার নিয়ে শীত বর্ষায় শান্তিতে বসবাসের জন্য প্রয়োজন একটি ঘর। আর এজন্য একটি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের দাবি জানান মফিজা বেগম।
জানা যায়, স্বামী দুই মেয়ে রেখে গত ২০ বছর আগে মারা যাওয়ার পর পেটের তাগিদে তিনি বাঁশের তৈরি টকরি/খাচা মাথায় নিয়ে হকারী করছে গ্রামের বাড়ি বাড়ি । অসুস্থতার কারণে এখন অন্যের দ্বারে ঘোরা কঠিন হয়ে পড়েছে তার। অনেক ছুটাছুটি করেও এই নারীর ভাগ্যে জুটেনি বিধবা ভাতার কার্ড। ভিজিডির কার্ড ছিল। গত চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। তবে গত ঈদের আগে ৯ কেজি চাল পেয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে।
মফিজা বেগম বলেন, বিশ বছর আগে স্বামী মরেছে। শুধু চার শতক ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছু রেখে যেতে পারেনি। টকরিতে ডালের বরা, কেক, বিস্কুট নিয়ে গ্রামের বাড়ি বাড়ি হকারি করে কোনোরকম পেট চলে। পায়ের ব্যথার রোগী আমি। এখন ঠিকমতো বেড়াতে পারিনা। প্রতিদিন ৩শ-৫শ টাকার বেচাকেনাই চলছে সংসার। মেয়ে, মেয়ে জামাই নাতি-নাতনিসহ পাঁচজনের পরিবার। মেয়ে জামাই বোবা,কানেও কম শুনে তারও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড হয় নি। অতিকষ্টে জীবনযাপন করছি আমরা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, মফিজা বেগমের মতো হতভাগী এলাকায় আর দু -এক জন পাওয়া কঠিন ব্যাপার। এরা সরকারি ঘর না পেয়ে পাচ্ছে যাদের জমি জায়গা আছে তারা।
ইউপি সদস্য একরামুল হক বলেন, ওই মহিলার বিষয়ে চেয়ারম্যান ও তহশিলদারের সাথে কথা বলেছি,তার জন্য কিছু একটা করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।