মা-বাবা’কে আর্থিক যোগান দিতে কৃষি কাজে ব্যস্ত দুর্গাপুরের আদিবাসী শিক্ষার্থীরা
এস.এম রফিক, (দুর্গাপুর) :
করোনায় বিধ্বস্ত বাংলাদেশসহ পুরো পৃথিবী। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশেও নেয়া হয়েছে লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত। কিন্তু করোনার প্রভাব মূলত লক্ষ্য করা গেছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায়। গতবছরের মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে অনলাইনে ক্লাশ চললেও স্মার্ট ফোন না থাকায় দরিদ্র শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে এ সকল ক্লাশ থেকে। যে কারনে বাধ্য হয়েই একটু বাড়তি আয়ের আশায় ক্ষেত খামারে কাজ করছে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা। নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
এ নিয়ে শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের জাগিরপাড়া, বন্দউষান, দক্ষিন জাগিরপাড়া, বিশিরিশি ইউনিয়নের আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম বাড়ইপাড়া, ভবানীপুর, দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের দাহাপাড়া, ভবানীপুর, ভরতপুর, কুল্লাগড়া ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম, বড়ইকান্দি সহ বিভিন্ন গ্রামের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাড়তি আয়ের জন্য সময় কাটছে কৃষিক্ষেতে কাজ করে। দারিদ্রতার কারনে তাদের ক্লাশের জন্য ঘোষিত এসাইনমেন্ট সম্পর্কেও খোজ রাখছেনা তারা। স্কুলে যোগাযোগ করবে এমন টাকাও তাদের মুঠোফোনে থাকে না।
বিরিশিরি ইউনিয়নের বাড়ই পাড়া এলাকার এক আদিবাসী শিক্ষার্থী বলেন, গত বছর থেকেই আমরা অনলাইনে কোন ক্লাশেই যুক্ত হতে পারছি না কারন আমাদের এন্ড্রয়েট ফোন নাই। অনেকের ফোন থাকলেও এমবি ভরার টাকা থাকে না। তাই অনেকটা শখের বসেই বন্ধুরা মিলে সংসারে মা-বাবাকে আর্থিক যোগান দিতে একটু বাড়তি আয়ের আশায় ক্ষেতে কাজ করছি।
বিরিশিরি ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ইউপি চেয়ারম্যান সম্ভাব্য প্রার্থী ওয়ালী হাসান তালুকদার এ প্রতিবেদক’কে জানান, শুধু বিরিশিরি ইউনিয়ন নয় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নেই দরিদ্র শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোনিবেশ না করে ক্ষেত-খামারে কাজ করছে। বর্তমান করোনা প্রেক্ষাপটে আমি অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষাদান সহ বিরিশিরি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মাক্স বিতরনে সেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজে লাগিয়েছি। আমি অত্র ইউনিয়নকে মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে যুব সমাজকে কাজে লাগাতে চাই।
এ নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন এ প্রতিনিধি কে বলেন, শিক্ষা কার্যক্রমকে গতিশীল করতে ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাষ্ট থেকে শতভাগ শিক্ষা উপবৃত্তি দেয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে ভার্চুয়াল সভা অব্যাহত আছে সেইসাথে সকল শিক্ষার্থীদেরকে এসাইনমেন্ট কার্যক্রমে সচল রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদারকি আরো বাড়ানো সহ সকল শিক্ষার্থী যেন স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষাকার্যক্রমে জড়িত থাকে তা নজরে রাখা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।