কাঁচা রাস্তায় ভাংগা কালভার্টটি সংস্কার দাবী
জাকির হোসেন, (ফরিদপুর) :
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের কামাইদিয়া গ্রামবাসীর যাতায়াতের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটির বেহাল দশা। প্রায় এক কিলোমিটারের কাঁচা রাস্তায় ২টি কালভার্ট রয়েছে তা ও আবার ভাঙ্গা।
গ্রামবাসী জানায়, প্রায় ১০ বছর পূর্বে তৈরীকৃত এই কাঁচা রাস্তার ভাগ্যে অদ্যাবধি কোন উন্নয়ন বা সংস্কার জোটেনি। ফলে বর্তমানে সামান্য বৃষ্টি হলেই জায়গায় জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়। কালভার্টটি ভেঙ্গে যাওয়ায় উক্ত রাস্তা দিয়ে জরুরী সেবার গাড়ী তথা ফায়ার সার্ভিস, এ্যাম্বুলেন্স তো দূরের কথা সাধারণ কোন যানবাহনও চলাচল করতে পারে না। শুধু তাই নয় পানি চলাচলের একমাত্র ব্যবস্থা কালভার্ট এর নিচ দিয়ে পানি চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে বলে গ্রামবাসী জানায়। এতে করে উক্ত গ্রামে অবস্থিত শত শত পরিবার ভোগান্তিতে রয়েছে। ভোগান্তি যেন তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী।
সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে পাঁকা রাস্তার উপর মোটরসাইকেলটি রেখেই গ্রামের ভেতরে পায়ে হেঁটে প্রবেশ করতে হয়। এসময় স্থানীয়রা জানায়, কামাইদিয়া গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কওমী মাদ্রাসা রয়েছে। মূল রাস্তা থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কওমী মাদ্রাসার দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। বছরের যেকোন সময়ে বৃষ্টি নামলেই উক্ত রাস্তায় গভীর কাঁদার সৃষ্টি হয়। যা পেরিয়ে গ্রামের ভেতরে গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করা সম্ভব নয়, তার উপর আবার রাস্তার মাঝে দুটি কালভার্টই ভাংগা।
এলাকাবাসী জানায়, গ্রামে কোন যানবাহন প্রবেশ করতে না পারায় রোগী নিয়ে তাদের বেকায়দায় পড়তে হয়। অসুস্থ্য রোগীকে কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যেতে হয় অনেক দূর। এছাড়াও তাদের সৃজিত ফসল বিক্রি করার সময়ও ঝামেলা পোঁহাতে হয়। দূরের পাঁকা রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে অল্প অল্প পরিমানে মালামাল মাথায় করে জমা করতে হয় সেখানে, তারপরে বাজারে বিক্রি। ফলে উৎপাদন খরচ কিছুটা বৃদ্ধি পায় তাদের। গ্রামে যারা যানবাহন চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা রাস্তার উপর অথবা পাঁকা রাস্তার পাশে অন্যের বাড়িতে গাড়ী রেখে কাঁদা মাখা পায়ে হেঁটে নিজ বাড়িতে পৌঁছান। ফলে গরীব মানুষ চিন্তায় থাকে সারা রাত। রাস্তা-ঘাটের অবস্থায় খারাপ হওয়ায় আশ পাশের এলাকার ছেলে-মেয়েরাও উক্ত গ্রামে অবস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কওমী মাদ্রাসায় পড়া-লেখার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সকলের কাছে আমাদের দাবীর কথা বলেছি, কিন্তু সবাই আশা ভরসা দিলেও কাজের কাজ কিছুই করে নাই। কয়েক দফায় উপজেলায় বিভিন্ন অফিসেও তারা যোগাযোগ করলেও আজও উন্নয়ন ঘটেনি কামাইদিয়া গ্রামের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটির। এ সময় কামাইদিয়া গ্রামবাসী উক্ত রাস্তাটি অতি দ্রুত পাঁকাকরণ সহ কালভার্ট সংস্কারের জোর দাবী জানায়।
এই বিষয়ে বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, আপাতত আমাদের কোন প্রকল্প নেই, ঐ রাস্তায় ঘোড়ার গাড়ি, ট্রলি চলাচলের কারনে নষ্ট হয়ে গেছে, চেষ্টা করবো সামনে ঠিক করে দেওয়ার।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, বিয়টা দুঃখ্যজনক, রাস্তাটি পরিদর্শন করে দ্রæত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ওয়াদুদ মাতুব্বর বলেন, পরবর্তীতে যে বরাদ্দ আসবে, সেখান থেকে ঐ রাস্তা ও কালভার্ট ঠিক করে দেওয়া হবে।