শিরোনাম

South east bank ad

কুষ্টিয়ায় শেখ রাসেল সেতু রক্ষা বাঁধে ধস

 প্রকাশ: ১৬ অগাস্ট ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

শামসুল আলম স্বপন, (কুষ্টিয়া) :

কুষ্টিয়ায় শেখ রাসেল সেতু’র রক্ষা বাঁধে ব্যাপক ধস সুষ্টি হয়েছে। এ কারণে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম আতংক।

এমন ভাঙ্গন অব্যহত থাকলে হরিপুর, শালদহ বোয়ালদহ গ্রামের স্কুল, মসজিদ ও মাদ্রাসাসহ কয়েক হাজার বসতবাড়ী গড়াই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছে জনগণ।

১৫ আগস্ট ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫০ মিটার ব্লক গড়াই নদীতে বিলীন হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এলজিইডির কুষ্টিয়ার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আকমল হক।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডি অফিসের সমন্বয়হীনতা এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে বাঁধ নির্মাণের কারণে বাঁধে ধস নেমেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্লক বাঁধ নির্মাণের চার বছর পার না হতেই সেতুর পূর্ব পাশের রাস্তা ও ব্লক পানিতে ধসে পড়লো। এর আগে ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর একই জায়গায় বাঁধের প্রায় ৩০ মিটার ব্লক গড়াই নদী গর্ভে বিলীন হয়। হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মজিদ অভিযোগ করেন, প্রায় এক বছর আগে থেকেই নদীর এ স্থানটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ না করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধান না করলে নদী পাড়ের ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। অবিলম্বে এ ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসীর।

ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতু রক্ষা বাঁধে ব্যাপক ধস দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে নদী পাড়ের গাছপালা, রাস্তাসহ পানির ওপরের ব্লক নদীগর্ভে চলে গেছে।

এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আকমল হক বলেন, ওই জায়গা বরাবর নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ড্রেজাওে নদী খননের কারণে সেতুর রক্ষা বাঁধে ধস নেমেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ধসে যাওয়া অংশের পরিমাণ প্রায় ৫০ মিটার। তবে ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ টিম আসলে এর আসল কারণ জানা যাবে। নিয়ম মেনেই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আফছার উদ্দীন বলেন, দশ মাস আগে একই জায়গায় বাঁধটিতে ধস নেমেছিল। আবারও ধস নেমেছে। বাঁধটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তারাই এটি দেখাশোনা করবে।

এলজিইডির কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রকাশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আবারও বাঁধে ধস নেমেছে। ভাঙন দেখতে সেখানে আমাদের প্রতিনিধিকে পাঠানো হয়েছে। আমরা বিস্তারিত ঢাকায় প্রধান অফিসকে জানাবো। বাজেট এলেই কাজ শুরু করা হবে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, সেতুটি যাতে কোনো প্রকার ক্ষতির মুখে না পড়ে সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডি উভয়কেই নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে। উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া শহরের উত্তর পাশে হরিপুর ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নকে শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করতে গড়াই নদের ওপর ২০১৭ সালে শেখ রাসেল সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি ওই বছরের ২৪ মার্চ উদ্বোধন করা হয়। সেতুটি রক্ষার জন্য উভয় পাশে ব্লক বাঁধও তৈরি করা হয়। সেতুটি নির্মাণে প্রায় ৭৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়। সেতুর উভয় পাশের ৪১০ মিটার ব্লক বাঁধ নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে হরিপুর অংশে সেতুর পশ্চিম ও পূর্ব পাশে অন্তত ৩০০ মিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আকতার লিমিটেড ওই সেতু ও ব্লক বাঁধ নির্মাণের কার্যাদেশ পায়। তবে নির্মাণের চার বছর পর বাঁধে ধস নামায় গড়াই নদীর পাড়ের মানুষের মাঝে ব্যাপক আতংক দেখা দিয়েছে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: