শিরোনাম

South east bank ad

জামালপুরে বিদ্যুত ছাড়া এসি আবিষ্কার করলেন রাজু

 প্রকাশ: ০৬ অগাস্ট ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

শামীম আলম, (জামালপুর) :

জীবন বাঁচাতে পারে তীব্র রোদে মাঠে কাজ করা কৃষকদের।এ ফ্যানে কৃষকের এসির মতো বাতাস যেমন মেলে, সঙ্গে ছায়াও পাওয়া যায় রোদ থেকে। ফ্যান চলে সোলার প্যানেলের সূর্যের আলোর শক্তিতে। এ কারণে এর নাম দিয়েছেন ‘সোলার ফ্যান’। এতে বিদ্যুৎ সংযোগ যেমন লাগে না, পাশাপাশি সোলার প্যানেলটি এমনভাবে ব্যবহার করেছেন যাতে মাথায় ছায়াও পাওয়া যায়।

বহন করাও কষ্টদায়ক নয়। মাত্র আড়াই কেজির সোলার ফ্যানটি কাঁধে লাগিয়ে মাঠজুড়ে কাজ করতে পারেন কৃষক। রাজুর বিদুৎ ছাড়া এসিটি দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে জনগনের ভীড় লেগেই আছে তার বাড়িতে।

রাজু জানান, এ ধরনের ফ্যান তৈরির চিন্তা তার মাথায় আসে একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। তিনি বলেন, ‘আমি একদিন একটা ক্ষেতের সাইডে বইসে আছিলাম। দেখলাম, মেলা রইদের জন্যে এক কৃষক ফিড (অজ্ঞান) অয়ে (হয়ে) গেলো গা। পরে সবাই ধরাধরি কইরে মাথাত পানি দিল। তারপর ওই বেডা আস্তে আস্তে বালা (ভালো) অইলো (হলো)।

‘এরপর আমি চিন্তা করলাম, কৃষকদের জন্যে কী করন যায়। পরে ৯ মাস গবেষণা কইরে কৃষকের ছায়া আর বাতাসের জন্যে আমি সোলার ফ্যান বানাই।’ রাজু কাজ করেন শরিফপুর বাজারে ছোট্ট একটি দোকানে ইলেকট্রিশিয়ানের সহযোগী হিসেবে।

রাজু বলেন ,ওই যন্ত্রগুলো এখন আর তার কাছে নেই। বিভিন্ন সময় সরকারি কর্মকর্তারা এসে নিয়ে গেছেন, কিন্তু পরে আর সাড়া পাননি।
এসব কারণে ২০১৭ সালে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। অভাবেও পড়েন। এরপর টানা তিন বছর এ ধরনের কাজ থেকে দূরে ছিলেন। এরপরই ক্ষেতের পাশে বসে থাকা অবস্থায় কৃষকের অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ওই ঘটনাটি দেখেন।

তারপরই ফ্যানটি তৈরি করেন তিনি। যন্ত্রটি তৈরি করতে রাজু ২০ ওয়াটের একটি সোলার প্যানেল, ১২ ভোল্টের ডিসি দুটি ছোট ফ্যান, দুটি সুইচ, একটি বেল্ট ও বডি মেকানিক্যাল ব্যবহার করেছেন।

সোলার ফ্যান নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি যদি সরকারি সহায়তা পাই, তাহলে এই ফ্যানটি চারভাবে নির্মাণ করে বাজারে ছাড়মু। এর ফলে কৃষকরা অনেক উপকৃত হইব। যদি ভালোভাবে বানাতে পারি তাইলে কৃষকরা ৩০০ থাইকে শুরু কইরে ১ হাজার টাকার মধ্যে এই ফ্যান কিনতে পারব।

রাজুর সোলার ফ্যান নিয়ে জামালপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মঞ্জুরুল কাদির বলেন, ‘রাজু উদ্ভাবন পাগল একজন মানুষ। সে নতুন কিছু আবিষ্কার করতে খুবই ভালোবাসে। তবে সে অত্যন্ত গরিব বলে এই যন্ত্রটি উন্নত করতে পারছে না।’
তিনি জানান, কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে তারা জয়দেবপুরে কৃষি প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। রাজুকে প্রশিক্ষণ এবং আর্থিক সহযোগিতা করা যায় কি না সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এইটা বানাইতে চৌদ্দশ টাকা খরচ হইছে বলে জানান রাজু।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: