কঠোর বিধি নিষেধের চতুর্থ দিনে ৮৩৫ টি মামলায় জরিমানা
আব্দুল্লাহ হেল বাকী, (নওগাঁ) :
নওগাঁয় কঠোর ভাবে চলছে দ্বিতীয় পর্যায়ের কঠোর বিধি নিষেধ। ইতোমধ্যেই সীমান্তবর্তি জেলা নওগাঁর মানুষ কঠোর বিধি নিষেধের সুফল পেতে শুরু করেছে। গত মে মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই জেলাকে করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে।
গত জুন মাসে জেলা প্রশাসন নওগাঁ পৌরসভা ও সীমান্তবর্তি নিয়ামতপুর উপজেলাকে দুই দফায় লকডাউন ঘোষণা করেছিলো। এরপরে সারা দেশব্যাপি দ্বিতীয় দফার লকডাউনের আওতায় চলছে। তবে লকডাউনের সুফল পেতে শুরু করেছে জেলাবাসী। বর্তমানে দেশের অন্যান্য জেলায় করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করলেও গত ১ সপ্তাহে উল্লেখ্যযোগ হারে নওগাঁয় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে যার মধ্যে ১২ জনের নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শতকরা শনাক্তের হার ৭.৩ শতাংশ। করোনা ভাইরাসের শুরু থেকে মঙ্গলবার (২৭জুলাই) পর্যন্ত জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৫ হাজার ৭৭৩জন, সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ১৮জন আর মৃত্যুবরণ করেছে ১১৬ জন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া কঠোর বিধি নিষেধের ৪ দিনে জেলায় ৮৮টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন অজুহাতে বাইরে বের হওয়া সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান খোলাসহ বিভিন্ন অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত মামলা দিয়েছে ৮৩৫টি। এই সব মামলায় ৯১৫ ব্যক্তিকে দ-িত করা হয়েছে আর ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৭০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পুরো জেলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ৩৪টি ভ্রাম্যমাণ দল কাজ করছে। এছাড়াও কঠোর বিধি নিষেধ মানাতে মাঠে রয়েছে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, গ্রাম পুলিশ, আনসার ভিডিপি ও স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবকরা। জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের কঠোর নজরদারির কারণে অন্যান্য স্থানের তুলনায় নওগাঁ জেলার প্রতিটি আনাচে-কানাচে কঠোর বিধি নিষেধ সফল ভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে নওগাঁর সচেতন মহল।
জেলা প্রশাসক মো. হারুন-অর-রশীদ বলেন, সবার সার্বিক সহযোগিতায় নওগাঁয় কঠোর বিধিনিষেধ প্রায় শতভাগ সফল হচ্ছে। এই মহামারি থেকে নিজেসহ আশেপাশের এবং দেশের মানুষকে সুরক্ষা দিতে চলমান কঠোর বিধি নিষেধ যতটুকু সম্ভব আমাদের সবাইকে সফল করতে হবে। যদিও বা সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষদের অনেক কষ্ট হচ্ছে তবুও এই মহামারি থেকে বাঁচতে সবাইকে বিধি নিষেধকে সঠিক ভাবে মানতে হবে। কারণ আগে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে আগে পরে অন্য বিষয়।
তিনি আরো বলেন, এই সংকটময় সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে বিভিন্ন অনুদান প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সঠিক তথ্য দিয়ে যে কোন নিম্ন আয়ের বেকার হয়ে পড়া মানুষরা জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট থেকে সরকারি সহায়তা পেতে পারেন। সর্বোপরি এই মহামারি থেকে বাঁচতে সরকারের জারি করা কঠোর বিধি নিষেধগুলো সবাইকে সঠিক ভাবে মানতে মাস্ক ব্যবহার করতে এবং প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে বের না হতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।