গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের জন্য ন্যায্যমূল্যের ‘পিমার্ট ভরসা স্টোর’ চালু
১৫ হাজার শ্রমিক সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ মূল্য ছাড় পাবেন
ঢাকা, ১৪ জুলাই, ২০২১: চলমান করোনা মহামারীর মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহ করতে গাজীপুরে চালু হয়েছে ‘পিমার্ট ভরসা স্টোর’। শিল্পগ্রুপ মাহমুদ গ্রুপের প্রায় ১৫,০০০ পোশাক শ্রমিকদের জন্য এই দোকানটি চালু করেছে প্রিফিক্স লিমিটেড এর সহায়ক প্রতিষ্ঠান পিমার্ট। এই স্টোর থেকে পণ্য ক্রয়ে শ্রমিকরা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ মূল্য ছাড় পাবেন। পিমার্টের লক্ষ্য ন্যায্যমূল্যের এই চেইন শপটি ধীরে ধীরে বাংলাদেশের অন্যান্য সকল শিল্পপ্রতিষ্ঠানে প্রসার ঘটানো।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া পিমার্ট ভরসা স্টোরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মাহমুদ গ্রুপের সম্মানিত পরিচালক রাফি মাহমুদ, হেড অব এইচআর, এডমিন এন্ড কমপ্লায়েন্স হেলাল ইসলাম এবং পিমার্ট-এর সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত ইয়াসিন ও হেড অব অপারেশন্স রিয়াদুল হাসান।
করোনাকালীন সময়ে বাহিরে চলাচল করা এবং পরিবারের জন্যে প্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটার জন্য পর্যাপ্ত সময় বের করতে পারেন না পোশাক শ্রমিকরা। আবার সরকার এই সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা রাখার জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি নিম্ন-মধ্যম আয়ের কর্মক্ষম জনসাধারণের উপর বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানসম্পন্ন ও নিরাপদ খাবারের পাশাপাশি সুলভমূল্যে পণ্যপ্রাপ্তির দোকান পাওয়াও পোশাক শ্রমিকদের জন্য দুরুহ হয়ে উঠেছে।
উদ্যোগের বিষয়ে পিমার্ট-এর সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত ইয়াসিন বলেন, ‘মহামরির মধ্যে সহজলভ্যতা ও ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় পোশাক শ্রমিকদের মানসম্পন্ন এবং স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য ক্রয় বেশ দুরূহ হয়ে উঠেছে। তাই আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে বেশ কিছু বৃহৎ এবং মাঝারি নিত্য পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করি। প্রথমেই আমরা স্বনামধন্য মাহমুদ গ্রুপের কর্মীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা এবং ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে ন্যায্যমূল্যের দোকান ‘‘পিমার্ট ভরসা স্টোর’’ চালু করেছি। এই পরিসরে সাফল্য বিবেচনা করে শিগগিরই অন্যান্য শিল্প-কারখানায়ও এই উদ্যোগ চালু করার পরিকল্পনা আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব ইআরপি সফটওয়্যার কারখানার স্থায়ী কর্মীদের পণ্য ক্রয়ে ক্রেডিট সুবিধা পেতে সহায়তা করবে। অর্থাৎ ইআরপি সিস্টেম প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগের বেতন কাঠামোর সাথে সমন্বয় করবে। ফলে ক্রেতার পণ্য ক্রয় করার সময় সাথে সাথে মূল্য পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক থাকবে না। মূল্য পরিশোধের এই সমন্বয়টুকু পরবর্তী মাসে উক্ত কর্মীর বেতন থেকে করা হবে। পণ্য ক্রয়ে এই ক্রেডিটসীমা এমনভাবেই নির্ধারণ করা হবে যা একজন ক্রেতার (প্রতিষ্ঠানের কর্মী) ক্রয়ক্ষমতার বাহিরে যাতে না যায়।’
পিমার্ট ভরসা স্টোর কারখানার শ্রমিকদের শুধুমাত্র মাসিক ব্যয়ই হ্রাস করবে না। বরং এটি ক্রেতা শ্রমিকদের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মানসম্পন্ন পণ্যের সাথে পরিচিতি, পণ্যের যোগান, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত ক্রয়-পরিবেশ, ক্রয়ক্ষমতার মাঝেই সকল পণ্য এবং সর্বোপরি ক্রেতার পণ্য ক্রয়ে অনুকূল সময় বিবেচনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার "ডিজিটাল বাংলাদেশ" রূপকল্প বাস্তবায়নে এবং সাধারণ কর্মজীবী জনগোষ্ঠীকে আসন্ন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সাথে অভ্যস্ত করে গড়ে তুলতে যাবতীয় ডিজিটাল সমাধান উদ্ভাবনে পিমার্ট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ।
‘পিমার্ট ভরসা স্টোর’ থেকে কারখানার শ্রমিকগণ সুপারশপের ন্যায় বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করতে পারবেন এবং সে সাথে উপভোগ করবেন পণ্যের খুচরা মূল্যের উপর ১০% পর্যন্ত মূল্য ছাড়। পিমার্টের এই উদ্যোগে সহযোগী হিসেবে এগিয়ে এসেছে ১৪০টির মতো নামী ব্যান্ড যাদের প্রস্তুতকৃত পণ্য কারখানার নিম্ন-মধ্যে আয়ের শ্রমিকগণ সুলভমূল্যে ক্রয় করতে পারবেন । পণ্য ক্রয়ের পর বিভিন্ন মোবাইল ফাইন্যান্সিং সার্ভিস প্লাটফর্ম যেমন: বিকাশ, নগদ ব্যবহার করে তারা পণ্যের মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন।
উদ্যোগের বিষয়ে মাহমুদ গ্রুপের পরিচালক রাফি মাহমুদ বলেন, ‘করোনা মহামারীর মধ্যেও সরকারের সতর্কতামূলক নির্দেশনা মেনে রপ্তানিমুখী টেক্সটাইল এবং তৈরি পোশাক খাতের কারখানাগুলো চালু আছে। আমরা বিশ্বাস করি, পিমার্ট ভরসা স্টোর আমাদের কারখানাগুলোকে কোভিড-১৯ এর ভয়াবহতা থেকে সুরক্ষা দেবে। পিমার্ট কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন নামি ব্র্যান্ডের পণ্যের সমাহার আমাদের কারখানা প্রাঙ্গণে তাদের ভরসা স্টোরের মাধ্যমে হাজির করেছে। যেখান থেকে আমাদের শ্রমিকরা সুলভ মূল্যে তাদের কাঙ্ক্ষিত পণ্যটি তাদের সুবিধাজনক সময়ে কিনতে সক্ষম হবেন। ফলে তাদের সময়, শ্রম ও অর্থের সাশ্রয় হবে।’