ফুলবাড়িয়ায় ৭০পরিবার বিনামূল্যে পাচ্ছেন নিজস্ব স্বপ্ননীড়, নিজস্ব ঠিকানা
মো: আব্দুস ছাত্তার (ফুলবাড়িয়া):
হাত পেতে কিংবা স্বল্প টাকায় মাঠে-ঘাটে কাজ করে নিজের সংসার চালানোই দায়। সেখানে একখন্ডক জমি কিনে সেখানে বাড়ি করা- তা যেন ‘মাটি থেকে চাঁদ ছোঁয়া’র মতো অলিক কল্পনা, স্বপ্নাতীত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বদৌলতে বিনামূল্যে পাচ্ছেন নিজস্ব স্বপ্ননীড়, নিজস্ব ঠিকানা। বিনামূল্যে দুই শতাংশ ভূমির মালিকানাসহ পাকা বাড়ির দলিল নিয়ে নিজ স্বপ্ননীড়ে আর ক’দিন পর বাস করবেন দিনহীন এসব মানুষরা।
ফুলবাড়িয়ার নুরজাহান, তাজিত মন্ডল, অমেষ চন্দ্র কোচ, ফজলু সহ শত শত ভূমিহীন, গৃহহীন ছিন্নমূল মানুষ। বেদনার্ত তাদের জীবন। কারও ছিল না নিজস্ব কোন স্থায়ী ঠিকানা। নুন আনতে পান্তা ফুরায়। মাঠে-ঘাটে কাজ করে যা পায়, তাই দিয়ে চলে জোড়াতালির সংসার। দুই-তিন দশক ধরেই সরকারী খাস জমি কিংবা পরের পরিত্যক্ত জমিতে ভাসমান হয়ে কোনভাবে মাথা গুঁজে দিন কেটেছে তাদের।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় ভিক্ষুক, দিনমজুর, ভ্যানচালক, কোচ, মান্দাইসহ এ জাতীয় ৭০জন পাচ্ছেন দ্বিতীয় ধাপের ভূমি সহ ঘর। গতকাল শনিবার ফুলবাড়িয়ায় ঘর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল ছিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রথম ধাপে ৫০জন গৃহহীন পাকা ঘর পেয়েছিল।
মুজিববর্ষে প্রতিটি গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবারই পাচ্ছেন একক ঘর, আর দুই শতাংশ জমির মালিকানা। তাও আবার বিনামূল্যে। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশের ঠিকানাহীন এসব অসহায় মানুষকে সরকারী খরচে করে দিচ্ছেন একটি করে স্থায়ী ঠিকানা। যা গোটা বিশ্বে নজিরবিহীন। উন্নত বিশ্বও তাদের ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারগুলোকে সরকারী খরচে জমিসহ বাড়ি নির্মাণ করার এমন দৃষ্টান্ত দেখাতে পারেনি। যা পেরেছে একসাগর রক্তের মাধ্যমে অর্জিত বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন লাখো অসহায় মানুষকে দিচ্ছেন তাঁর সেরা উপহার।
জানা গেছে, এ সকল ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল অসহায় আশ্রয়হীন মানুষকে শুধু পাকা বাড়িই দেয়া হচ্ছে না, সঙ্গে সঙ্গে স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের যৌথ নামে জমির মালিকানাসহ সারা জীবনের জন্য একটি স্থায়ী ঠিকানা দেয়া হচ্ছে। জমির মালিকানা প্রদানের মাধ্যমে তাদের আর্থ-সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, জীবনযাত্রায় মানের পরিবর্তন এসেছে। হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়নও। ধর্ম-বর্ণ-দল-মত নির্বিশেষে মানবিক দিক বিবেচনায় ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল অসহায় মানুষকে সকল কিছুর ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে। এটি জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতা ও মহানুভবতার জন্যই সম্ভব হয়েছে।
শুধু বাসস্থানই নয়, পুনর্বাসিত পরিবারের জন্য সুপেয় পানি, বিদ্যুত, রাস্তা, গাছপালাসহ সকল কিছুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জমিসহ গৃহ প্রদানের পাশাপাশি তাদের কর্মসংস্থানের জন্য ঋণ-প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলা হচ্ছে, যাতে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্ম দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখতে পারে। গৃহহীনরা তাদের স্বপ্নের পূর্ণতা পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুনছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল ছিদ্দিক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসাবে আমরাও সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছি ফুলবাড়িয়ায়। শতভাগ কোয়ালিটির নিশ্চিত করা হচ্ছে এসব ঘর নির্মাণে।
পরিদর্শন শেষে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক bdfinancialnews24-6c6259.ingress-earth.easywp.com কে বলেন, ঘরের জমি সিলেকশান, ঘর নির্মাণ এবং কাজের গুণগত মান ঠিক রেখেই ফুলবাড়িয়ার ৭০টি ঘরের কাজ চলমান। ভোক্তভোগিরা পাকা ঘর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।