ভোলার বিতর্কিত আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে এবার ভূমি দস্যুতার অভিযোগ স্কুল শিক্ষকের
সিমা বেগম (ভোলা সদর):
বেশ কিছু দিন ধরে ভোলার ভেদুরিয়া ঘাটের স্পিডবোট মালিক ও রুটি বিক্রি করে কোটিপতি বনে যাওয়া মো. আলাউদ্দিনকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে।
এরই মধ্যে নতুন করে তার বিরুদ্ধে গত ৭-৮ বছর ধরে স্কুল শিক্ষক আব্দুল মান্নানের ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট সংলগ্ন একটি জমি দখল করে দুইটি দোকান নির্মান করে জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান।
তিনি জানান, ১৯৯৭-৯৮ সালে সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আব্দুল কাদের পালোয়ান ও তার ওয়ারিশদের কাছ থেকে ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট সংলগ্ন ১১৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। সে থেকেই জমিটি আব্দুল মান্নান ও তার স্ত্রী নাজমা বেগমের নামে ক্রয় করে সে থেকে ভোগদখল করে আসছে। কিন্তু বিগত ১২-১৩ বছর ধরে বিতর্কিত আলাউদ্দিন ও তার সহযোগী রফিকুল ইসলাম ওরফে সোহেল মাস্টার জোরপূর্বক ওই জমির সামনের অংশে দুইটি দোকান নির্মান করে দখল করে আসছে। এমনকি আলাউদ্দিন আব্দুল মান্নানকে নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভিতি দেখিয়ে একটি অচল নামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে আলাউদ্দিন ও সোহেল মাস্টার নিজেদের ইচ্ছেমত প্রতিটি দোকানের ভিটার ভাড়া মাসিক ১৫০০ টাকা নির্ধারণ করে একটি চুক্তিপত্র করেন। সেই টাকাও দেয়নি আলাউদ্দিন।
বিষয়টি নিয়ে তখনকার পুলিশ সুপারের নিকট একটি অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান। অভিযোগ দেয়াতে আলাউদ্দিন ও রফিকুল ক্ষিপ্ত হয়ে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় আব্দুল মান্নান ও তার স্ত্রী নাজমা বেগমকে মারধর করতে আসে। এরা দুই জন ভেদুটিয়া ঘাটের প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়নি।
আব্দুল মান্নান আরো জানায়, আলাউদ্দিন ও রফিকুলের বিরুদ্ধে ভোলা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন তারা। যার নম্বর ১৫০৫, তারিখ ৩১/০৮/২০১৬ইং। তার পরও তারা এর সুষ্ঠু বিচার পায়নি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিচার না পেয়ে সর্বশেষ উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক বরাবরও একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এতেও কোনো লাভ হয়নি। তাই তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার জমি ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে গত কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযুক্ত আলাউদ্দিনের ইয়াবা সেবনের একটি ভিডিও প্রকাশ পেলে সেটি নিয়ে ভোলায় সমালোচনার ঝড় উঠে। এ নিয়ে গতকাল বুধবার (৭ জুলাই) ভেদুরিয়া লঞ্চঘাটে স্পিডবোট মালিক ও চালকরা আলাউদ্দিনের অত্যাচার থেকে বাঁচতে ভিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তারা আলাউদ্দিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত আলাউদ্দিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আব্দুল মান্নানের সাথে তাদের ঝামেলা হয়েছে। পরে আব্দুল মান্নান ভোলার পুলিশ সুপার ও বরিশাল ডিআইজি অফিসে অভিযোগ দিলে বিষয়টি নিয়ে আব্দুল মান্নানের সাথে সমঝোতা হয়েছে।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, পূর্বের অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে নতুন করে আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে নতুন করে কয়েক জন অভিযোগ দিয়েছে। আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।