শিরোনাম

South east bank ad

ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন ও কাজের মূল্যায়ন করতে প্রতিদিনই সভা করা হচ্ছে

 প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

লকডাউনের মধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ে কাজের পদ্ধতি বদলে গেছে। ফিজিক্যালি ও ভার্চুয়ালি- উভয় পদ্ধতিতে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নিয়মিত অফিস করছেন। বিশেষ প্রয়োজনে নিচের স্তরের কর্মকর্তারাও অফিসে আসছেন।

সূত্র জানায়, প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন ও কাজের মূল্যায়ন করতে প্রতিদিনই সভা করা হচ্ছে। যারা নিয়মিত মন্ত্রণালয়ে যান তারা কনফারেন্স রুমে বসে সভায় অংশ নেন। যারা অনুপস্থিত থাকেন প্রতিটি সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে মতামত ও সুপারিশ দেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প:
ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত দপ্তর/সংস্থার মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনা (Land Management), ভূমি রাজস্ব জরিপ (Cadastral Survey) ও ভূমি ও ভূমি রাজস্ব সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি (Land Land Revenue Settlement/Arbitration) সম্পর্কিত নিয়মিত কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ভূমি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প (Development Project) গ্রহণের মাধ্যমে ভূমিহীন, গৃহহীন, ঠিকানাহীন, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র পরিবারকে পুনর্বাসন, ভূমি ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন তথা ডিজিটাইজেশন ও ভূমি অফিসের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
২০১৯-২০ অর্থ বছরে চলমান প্রকল্প গুলো খুব দ্রুতই শেষ হবে।
১। গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায় (ক্লাইমেট ভিকটিমস রিহ্যাবিলিটেশন) প্রকল্প;
২। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ, রেকর্ড প্রণয়ন ও সংরক্ষণ প্রকল্প;
৩। চর ডেভেলপমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-ব্রিজিং (সিডিএসপি-ব্রিজিং) প্রকল্প (ভূমি মন্ত্রণালয়ের অংশ);
৪। উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ প্রকল্প;
৫। ভূমি ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প;
৬। সমগ্র দেশে শহর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ প্রকল্প;
৭। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপের মাধ্যমে ৩টি সিটি কর্পোরেশন, ১টি পৌরসভা এবং ২টি গ্রামীণ উপজেলায় ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি স্থাপন প্রকল্প;
৮। ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প (চার্টে দেখানো হয়নি)।

২০২০-২১ অর্থ বছর থেকে শুরু হওয়া নতুন ৪টি প্রকল্প চলমান :

১। মৌজা ও প্লট ভিত্তিক ডিজিটাল ভূমি জোনিং প্রকল্প;
২। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালনা সক্ষমতা; শক্তিশালীকরন প্রকল্প;
৩। ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন শীর্ষক প্রকল্প;
৪। এস্টাব্লিশমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রকল্প।

খাজনাসহ ভূমি-সংক্রান্ত যাবতীয় ফি পরিশোধে জনগণকে সুযোগ দিতে বিকাশসহ চারটি পেমেন্ট গেটওয়ে চ্যানেল ও একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে গত ২৪ মে আনুষ্ঠানিক সমঝোতা চুক্তি করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এর ফলে দেশের মানুষের ভোগান্তি কমবে ও সহজে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খাজনা ও ভূমির ফি পরিশোধের সুযোগ দেওয়া প্রসঙ্গে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, করোনাকালে এটি একদিকে মানুষের জন্য নিরাপদ প্রক্রিয়া। অন্যদিকে হিউম্যান-টু-হিউম্যান টাচ যত কমবে, দুর্নীতি তত কমবে। আরও বলেন, এখন থেকে ওইসব গেটওয়ে চ্যানেল ও ব্যাংকের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর, নামজারি ফি, খতিয়ান ফিসহ যাবতীয় ফি পরিশোধ করা যাবে। জনগণের দোরগোড়ায় ভূমিসেবা পৌঁছে দিতে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার দাস বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ায় সবাই শারীরিকভাবে হাজির হয়ে কাজে অংশ নিতে পারছেন না। তবে মন্ত্রণালয়ের জরুরি কাজগুলো করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও সবার উপস্থিতিতে পুরোদমে কাজ শুরু করা যাবে- সেই প্রস্তুতি আছে। তিনি করোনার কারণে বকেয়া কাজগুলোও স্বল্প সময়ে শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করে বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় নানা ক্ষেত্রে ডিজিটাইজেশন কার্যকর করছে। অনেক কাজই এখন অনলাইনে করা হয়। করোনাকালে এই ডিজিটাইজেশন বড় কাজে আসছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা মহামারি, মৃত্যু, লকডাউনের মধ্যেও মন্ত্রণালয়ের কাজ থেমে নেই। নিয়মিত অফিসিয়াল কাজকর্ম করা হচ্ছে। অন্যান্য নির্দেশনা ও কাজ আদায় করা হচ্ছে ভার্চুয়ালি যোগাযোগের মাধ্যমে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কাজের অগ্রগতি নিয়ে সপ্তাহের প্রতি রোববার ভার্চুয়ালি সভা হয়। গত ৮ মে এমন সভা হয়েছে। লকডাউনের কারণে কোনো সভা বাদ দেওয়া হচ্ছে না। গত ১০ মে তারিখেও উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকদের সভা হয়েছে। এ ছাড়া মাঠ পর্যায়ের জরুরি কাজগুলোও করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ভার্চুয়াল সভায় সবার মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ের সব কার্যক্রমই লকডাউনের আওতাভুক্ত। এরপরও কাজ থেমে নেই। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন এসিল্যান্ডরা নিয়মিত অফিসে যাচ্ছেন। তারা জনগণের স্বার্থে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনাকালে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মানা না মানা পর্যবেক্ষণ, ভেজাল খাদ্য তৈরি, নকল পণ্য বিপণন রোধসহ বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন। খোদ ঢাকাতেও এসিল্যান্ডরা নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।

সূত্র জানায়, করোনার কারণে সারাদেশের মানুষ খাজনাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ভূমি উন্নয়ন কর ও ফি পরিশোধ করছে না। এ ক্ষেত্রে কোনো তাগাদাও দেওয়া হচ্ছে না। এখন মূলত জরুরি কাজগুলোই সম্পন্ন করা হচ্ছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, এরই মধ্যে খুলনা ওয়াসার ওয়েস্ট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বিদেশি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এই প্লান্ট। প্লান্টের জন্য জমি বরাদ্দ হয়েছে কিনা- বিদেশিরা এই তথ্য যে কোনো সময় জানতে চাইতে পারেন। সে কারণে ভূমি মন্ত্রণালয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খুলনা ওয়াসাকে জমি বরাদ্দ দিয়েছে।

এদিকে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ভূমি অফিসের নির্মাণকাজও অব্যাহত আছে। ঢাকার তেজগাঁওয়ে নির্মাণাধীন ভূমি ভবনের কাজও চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাইজেশন বাস্তবায়নে যেসব প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে- সেগুলোর কাজও চলছে। জমির ই-মিউটেশন আপগ্রেডেশন, ল্যান্ড অটোমেশন, ডাটাএন্ট্রি, টেন্ডার প্রক্রিয়া, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিসহ দরকারি কাজগুলো করা হচ্ছে। অনলাইনে খাজনা নেওয়ার জন্য ডাটাএন্ট্রির কাজ করা হচ্ছে। এই কাজের বিলও শিগগির পরিশোধ করা হবে।

এ ছাড়া সারাদেশে মৌজা ও প্লটভিত্তিক ল্যান্ড জোনিংয়ের কাজ শুরুর জন্য ল্যান্ড জোনিং প্রকল্পের বিশেষজ্ঞসহ অন্য কর্মকর্তাদের করোনার মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিগগির আরও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হবে। জোনিংয়ের মাধ্যমে জেলা, উপজেলা এমনকি মৌজা পর্যায়ে কোন কোন স্থানে কৃষি, শিল্প, বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, হাটবাজার, শপিংমল, বিনোদনকেন্দ্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপনা হবে- জোনিংয়ের মাধ্যমে এসব নির্ধারণ করা হবে। স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে ম্যাপ অনুযায়ী প্লটভিত্তিক জরিপ করে দেশের জোনিংয়ের কাজ সম্পন্ন করা হবে। যেমন, নিচু এলাকার প্লাবন ভূমি অপরিবর্তিত থাকবে। সেখানে মাটি ভরাট করা যাবে না। বাড়িঘর করা যাবে না।

জানা গেছে, অনলাইনে খাজনা ও ভূমির অন্যান্য ফি পরিশোধের ক্ষেত্রে গত ২৪ মে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার দাস ও বিকাশের মহাব্যবস্থাপক এস এম বেলাল আহমেদ, নগদের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা আশিস চক্রবর্তী, উপায়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুল এইচ খন্দকার, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ডিএমডি আরিফ কাদরি আলাদা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: