গোটা দেশে লকডাউন শুরু : বন্ধ শপিংমল-গণপরিবহন
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গণপরিবহন ও শপিংমল বন্ধ রেখে এবং অফিস-আদালতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়ে সীমিত পরিসরে গোটা দেশে লকডাউন শুরু হয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি অফিস প্রতিষ্ঠানসমূহে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নিজ নিজ অফিসের ব্যবস্থাপনায় তাদের আনা-নেওয়া করতে হবে। জনসাধারণকে মাস্ক পরার জন্য আরও প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এতে বলা হয়, সারাদেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিক্সা ব্যতীত সকল গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। আইনশৃঙ্গলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক নিয়মিত টহলের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সকল শপিংমল, মার্কেট, পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রয় (শুধুমাত্র অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে। সোমবার (২৮ জুন) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউন শেষ হবে ১ জুলাই সকাল ৬টায়। এরপর কঠোর লকডাউনে যাবে গোটা দেশ। সেই দিন থেকে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। রোববার (২৭ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে লকডাউন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। লকডাউন বাস্তবায়ন করতে মাঠ পর্যায়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
উল্লেখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সব সিনিয়র সচিব/সচিবেদের নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
করোনার ঊর্ধ্বগতি রোধে এই তিনদিন সীমিত পরিসরে লকডাউন শেষে ১ জুলাই থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ বাস্তবায়ন করা হবে বলে আগেই জানিয়েছে সরকার। জাতীয় সংসদে চলতি অর্থবছরের বাজেট পাস এবং আর্থিক বছর শেষে জুন ক্লোজিংয়ের জন্য ২৮ জুন থেকে তিন দিন সীমিত পরিসলে লকডাউন চলবে।
রোববার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, সামনে যে লকডাউন (১ জুলাই থেকে সাত দিন) সেখানে পুলিশ থাকবে, বিজিবি থাকবে, সেনাবাহিনীর সদস্যরাও এবার থাকবে যাতে লকডাউনটা সুন্দরভাবে পালিত হয় এবং ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণটা রোধ হয় এবং মৃত্যুর সংখ্যা যাতে অনেক কমিয়ে আনতে পারি।
স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী নামানোর বিষয়টি আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
চলতি বছর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা লকডাউন হলেও সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে সরকার। পরে সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। তবে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ এবং ট্রেন চলাচল ঈদ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। পরে ২৪ মে থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলার অনুমতি দেওয়া হয়।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ১৮ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। আর ২৬ মার্চ থেকে টানা ৬৬ দিন অফিস বন্ধ থাকে। আগামী ৩০ জুন পযর্ন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ঘোষণা করা আছে।