মানুষের ভালোবাসায় মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চান ডা: কুতুব উদ্দিন আইবেক
মো: আব্দুস ছাত্তার (ফুলবাড়িয়া) : ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলকে বলা হয় শিক্ষা নগরী। উপজেলায় তুলনামুলকভাবে শিক্ষার হার ও উচ্চ শিক্ষা অর্জনকারী ঐ এলাকায় আসলেই বেশি। ঐতিহ্যবাহী আছিম এলাকায় রয়েছে ডাক্তার বাড়ী নামে একটি বাড়ীও। ঐ বাড়ীতে একই পরিবারে রয়েছে ৪জন বিসিএস পাশ করা ডাক্তার। তাদেরই একজন ডা: কুতুব উদ্দিন আইবেক। চিকিৎসক হয়েও নিজেকে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমুলক কাজে সম্পৃক্ত করে চলেছেন দিনের পর দিন। bdfinancialnews24-6c6259.ingress-earth.easywp.com এর সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি বিভিন্ন প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন।
১৯৮৮ সালের ৩ জুলাই বিকাল বেলা পিতা- মোঃ ওয়াজেদ আলী ও মাতা আম্বিয়া খাতুন এঁর ঘর কান্না করে পৃথিবীর আলো দেখেন এক ছেলে সন্তান। আকিকা দিয়ে নাম রাখা হয় মো: কুতুব উদ্দিন আইবেক। আছিমের বাঁশদী গ্রামের আলো বাতাসে বেড়া উঠার সাথে সাথে গ্রামের স্কুল ও মক্তবগুলোতে আসা যাওয়া ছিল তাঁর। আছিম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে আছিম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে ২০০৩ এসএসসি জিপিএ- ৪.৬৯, ফুলবাড়িয়া কলেজ (অনার্স কলেজ) হতে ২০০৫ সালে এইচএসসি জিপিএ-৪.৭০ নিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হতে এমবিবিএস। পরবর্তীতে ৩৩তম বিসিএস অর্জন করেন। ২০১৯ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চর্ম, যৌন ও এলার্জি বিভাগে যোগদান করেন। ২০১৪ সনে একই উপজেলার জোরবাড়ীয়া উত্তরপাড়া খান বাড়ীর ডাঃ সানজিদা ইয়াসমিন দোলন (৩৯ তম বিসিএস) এর সাথে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। তাদের সংসার জীবনে ২০১৭সালের ২৮জানুয়ারি যমজ দুই মেয়ে সন্তান জন্ম লাভ করে। তাদের নাম আফিয়া ইবনাত ও ফাবিহা তাহিয়াত।
কৃষক বাবা ও মায়ের ৪ সন্তান যথাক্রমে মোঃ নিজাম উদ্দিন, ঢাকা দক্ষিণ নগর ভবন, মোঃ শরাফ উদ্দিন ব্যবসায়ী, ডাঃ মোঃ আশিকুর রহমান এবং আমি (ডা: মো: কুতুব উদ্দিন আইবেক)।
ডাক্তার বাড়ীতে ৪জন বিসিএস ক্যাডার এবং ডাক্তার। আমার বড় ভাই ডাঃ মোঃ আশিকুর রহমান (ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ’র কনসালটেন্ট), স্ত্রী ডাঃ নাহিদ সুলতানা (গাইনী বিভাগ)। ডা: মো: কুতুব উদ্দিন আইবেক (চর্ম, যৌন ও এলার্জি বিভাগ), স্ত্রী ডাঃ সানজিদা ইয়াসমিন দোলন (শিশু বিভাগ)। সবাই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত।
ছাত্র জীবনে ক্রিকেট খেলা, ঘুড়ি উড়ানো খুব সখ ছিল তাঁর। খারাপ লাগে মানুষের কষ্ট দেখলে, মানুষের অন্যায় পথে টাকা উপার্জন দেখলে। আমি একজন সহজ সরল নিরহংকারী মানুষ।
আমি মানুষ হিসেবে ও মানুষের সেবক হিসেবে আজীবন সৃষ্টির সেবা করে যেতে চাই। যার প্রেক্ষিতে আমি আছিম বাজার ডাক্তার বাড়ি প্রতি বছর ৪-৫ টা ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করি। যাতে প্রতি বছর কমপক্ষে দুই হতে আড়াই হাজার রোগী ফ্রি চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে থাকে।
প্রতি সপ্তাহে শহরের স্পেশালাইজড চিকিৎসা হিসাবে সীমিত ভিজিটে আমি আমার নিজ বাড়িতে রোগী দেখি। ফলে গ্রামের মানুষ গ্রামেই শহরের চিকিৎসা পাচ্ছে, যারা একান্তই গরিব তাদের ফ্রি চিকিৎসা দিয়ে থাকি।
আমার ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার কার্ড ফুলবাড়ীয়া হেল্পলাইন গ্রুপে দেয়া আছে, আমাকে যে কেউ ফোন দিলে আমি পরামর্শ দেই। করোনাকালীন সময়ে আমি ফুলবাড়িয়ার বিভিন্ন গ্রুপে অনেকগুলো লাইভ প্রোগ্রাম করে মানুষকে সেবা দিয়েছি। ৪ টি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে প্রায় ১৫শ রোগী সেবা গ্রহণ করে। ফুলবাড়ীয়ার সবচেয়ে বড় একটি প্লাটফর্ম ‘ফুলবাড়ীয়া হেল্পলাইন’ এদের কর্মকান্ড আমার ভালো লেগেছে, তাই এদের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি।
আমি এই হেল্পলাইন এর মাধ্যমে আমার জন্মভূমি ফুলবাড়িয়াবাসীকে আরও বেশি সেবা দিতে চাই। ইতিমধ্যে হেল্পলাইন এর মাধ্যমে ফ্রি চিকিৎসা, মাস্ক ক্যাম্পেইন, বৃক্ষরোপন কর্মসূচির সূচনা করেছি। ২মাস ব্যাপী বৃক্ষরোপন কর্মসূচি চলবে।
আমি ফুলবাড়িয়ার সন্তান, এখানকার আলোবাতাসে আমি বড় হয়েছি, আমি মনে করি ফুলবাড়িয়াবাসীর কাছে আমি দায়বদ্ধ। আমি তাদের কাছে ঋণী। আমি মানুষের ভালোবাসায় মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।