অনিশ্চয়তার দিকে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ
মো: ফেরদৌস রহমান :
শিক্ষা ব্যবস্থায় সুন্দর ও অবকাঠামো উন্নয়নে যদি থাকে শিথিলতা, তাহলে সেই শিক্ষা ব্যবস্থার সবরকম দিক থাকে সর্বাবস্থায় সচল। প্রাচ্যের দেশগুলোতে শিক্ষাবস্থার যে উন্নতি ঘটছে, তা আমাদের দেশগুলোর মতো দেশে প্রায়ই বিরল। শিক্ষার মান উন্নয়ন থেকে শুরু করে পাঠ্যক্রমে ও পাঠদান পদ্ধতিতে যেন নিম্নস্তরে পড়ে রয়েছে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাগুলো। উদাসীন মনোভঙ্গিতে হাওয়ায় উড়ে ভেড়াচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। ফলে, দিনের পর দিন বিপদগ্রস্ত হচ্ছে উচ্চ মন মানসিকতা নিয়ে পড়াশোনায় ঝুঁকে থাকা শিক্ষার্থীরা।
আর এর মাঝে যদি একেবারেই অনীহ প্রকাশ পায় সেই শিক্ষা ব্যবস্থার কোনো অংশের উপর! তাহলে তাঁদের পরবর্তী জীবনের কার্যক্রম কেমন হবে?
দেশের বিখ্যাত ও সুপ্রাচীন ৭ টি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এরফলে, উক্ত কলেজগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থায় যেমন রয়েছে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফলতি, তেমনি নেই কোনো উন্নত তৎপরতা। এভাবে চলতে থাকলে, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা? এমন হাজারো প্রশ্ন দিন প্রহর শেষে উঁকি দিচ্ছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মনে। দেশের সরকারি কলেজগুলো মধ্যে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি কবি নজরুল কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, শহীদ সোরওয়ার্দী কলেজ ও বদরুন্নেসা কলেজ, এই সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অধিভুক্ত করার পর থেকেই নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের। সেশনজোট ও প্রত্যাশিত ফলাফল বিপর্যয়, পরীক্ষার খাতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করা, এক বছরেরও বেশি সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়া। আরো অনেক সমস্যায় জর্জরিত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। ফলে, এক আশংকাজনক ভবিষ্যতের দিকে পা ফেলছে তারা। এভাবে চলতে থাকলে, ভবিষ্যৎ প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থানে ধাবিত হতে হবে এসব শিক্ষার্থীদের।
সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সঠিক অবকাঠামোগত মান উন্নয়ন হচ্ছে না। বিগত বছরগুলোতে তাদের আগে পাস করে যাওয়া শিক্ষার্থীদের ফলাফলের সাথে তাদের বর্তমান ফলাফলে দেখা মিলে পার্থক্য। একটা ঘোর অন্ধকারের দিকে হেঁটে চলছেন তারা। শিক্ষা পদ্ধতিতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ সুবিধা বেশি ও অত্যাধুনিক থাকলেও, এতে পিছিয়ে রয়েছে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা। ফলাফলে শতকরা ২৫/৩০% শিক্ষার্থী পাস করছে। এরমধ্যে সিজিপিএ খুবই কম। যদিও নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত, কিন্তু সকল প্রকার কার্যক্রম ও শিক্ষা ব্যবস্থা এগিয়ে চলছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে পরোক্ষভাবে হাত ধরে। এধরণের শিক্ষা পদ্ধতিকে বিপর্যস্ত ব্যবস্থা বলে দাবি করেন তাঁরা। তাঁরা চায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তাল মিলিয়ে, শিক্ষা ব্যবস্থা হোক অভিনব ও মান উন্নয়ন হোক শৈথিল্য।
নিয়মিত ক্লাস, পাঠদান কার্যক্রম, ল্যাব, সঠিক সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ ও সময়ে ফলাফল প্রকাশ ইত্যাদি বিষয়গুলো গভীরভাবে বিবেচনায় এনে, সাত কলেজ শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো সচল করতে হবে। সঠিক সময়ে পরীক্ষা নিয়ে, সুষ্ঠু বিবেচনায় পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করে, শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীদের আরো উন্নত করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই, সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতার বেড়া টপকিয়ে, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমান তালে হাঁটতে পারবে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা।