সৃজনশীল পেশার মানুষদের জন্যে আর্থিক নিরাপত্তা বলয় তৈরী করতেই হবে
সোলায়মান সুখন :
দুস্থ শিল্পীর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগীতার খবর চোখে পড়ে প্রায়ই। এমন'কি দেশ বরেণ্য অনেক শিল্পীর জন্যেও শেষ বয়সে অনুদান প্রয়োজন হয়। প্রচন্ড কষ্ট আর কিছুটা লজ্জা লাগে নিজের কাছেই। শিল্পীরা সৃজনশীল গুণী মানুষ। অনেকেই হয়তো আর্থিক ব্যাপারটার চেয়ে শৈল্পিক ব্যাপারে বেশি মগ্ন থাকেন খ্যাতির মধ্য গগনে থাকার সময়। তারপর এক সময় খ্যাতি যশ কমে আসে ,আস্তে আস্তে ফুরিয়ে যায় মানুষের মাতামাতি। পাইরেসির কারণে শিল্পী তার গানের ,অভিনয়ের ,কবিতার ,নাচের বা সিনেমার রয়্যালটি পান না একটুও। আমাদের যেহেতু সরকারি ভাবে শিল্পীদের ভাতা কিংবা অন্যান্য আর্থিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেকটাই অপ্রতুল, তাই সৃজনশীল এই মানুষদের অনেকটাই কাজের বিনিময়ে খাদ্যের মতো করে জীবন চালাতে হয়। না আছে কোনো পেনশন, না আছে সৃষ্টিশীল কাজের যথাযথ রয়্যালটির ব্যবস্থা।
আমার একটা অনুরোধ সৃজনশীল পেশার সাথে যুক্ত মানুষকে, টাকাপয়সা নিয়ে অযাচিত চাপাচাপি করবেন না। "একটু ফ্রি গেয়ে যান,এবারের কাজটা অল্প টাকায় করে দেন ,সরি ভাই স্টেজ বানাতে অনেক খরচ হয়ে গেছে তাই শিল্পীর পারিশ্রমিক একটু কম করে দেন", এমন হাস্যকর কথা যেন আমরা না বলি।
সৃজনশীল মানুষরাই সমাজের বিবেক। তারা হয়তো ব্যবসা বুঝে না সরকারি ফাইলের কচ্ছপ গতি বুঝে না কিন্তু তারা মানুষ বুঝে।
আর শিল্পীদের সৃজনশীল পেশার মানুষজনকে বলছি, ব্যবসা বোঝার চেষ্টা করতে হবে ,আপনি না বুঝলে এমন কাউকে নিয়োগ দেন আপনার টিমে যিনি গলা উঁচু করে নির্দ্ধিধায় স্পন্সর , ক্লায়েন্ট, শ্রোতা যেই হোক না কেন; তাকে যেন আপনার আর্থিক মূল্য খুব ভালো করে বুঝিয়ে দেয় ! বিনামূল্যে মূল্যবান কিছু চাওয়ার অমূলক ট্রেন্ড ভেঙে দিতে হবে।
সরকারকে প্রতি অনুরোধ, সৃজনশীল পেশার মানুষদের জন্যে আর্থিক নিরাপত্তা বলয় তৈরী করতেই হবে সরকারি ভাবে।
যে মানুষরা জীবনের বেশিরভাগ সময় মানুষকে আনন্দ দিয়ে যায়, সমাজের এবং রাষ্ট্রের এটা গুরু দায়িত্ব শেষ বয়সে তাদের গুরু দক্ষিণার ব্যবস্থা করা।
(সোলায়মান সুখন এর ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া)
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=4057332097650101&id=958721627511179