ঢাকা রেঞ্জে ডিআইজি হাবিবুর রহমানের ২ বছর : জনবান্ধব পুলিশিংয়ের নজির স্থাপন
ডিআইজি হাবিবুর রহমান ২০১৯ সালের ২৪ মে ঢাকা রেঞ্জের দায়িত্ব নিয়েছিলেন । সে হিসেবে আজ ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে তার ২ বছর পূর্তি হলো। ডিআইজি হাবিবুর রহমান ঢাকা রেঞ্জ কার্যালয়ে পা রাখতেই পরিবর্তনের শুরু হয় । ডিআইজির আগের অফিস কক্ষের ডেকোরেশন ভেঙ্গে আধুনিক ও সুসজ্জিত করা হয়েছে অফিসের পরিবেশ। শুরুতেই তিনি বলেছিলেন, এই যে পরিবর্তন দেখছেন তা কিন্তু কেবল আমার অফিসেই নয়, এটা ছড়িয়ে পড়বে রেঞ্জের সকল থানায়। পরিবর্তন আসছে সেবার ধরন আর মানসিকতায়। যে পরিবর্তনটা পুলিশের প্রতি আস্থা আরো বাড়িয়ে দিবে। থানায় প্রবেশ করলে ওয়েলকামিং অ্যাপ্রচটাই থাকবে অন্যরকম’ কথাগুলো বলছিলেন ডিআইজি হাবিবুর রহমান, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার)। আসলেই করে দেখিয়েছেন তেমন। ঢাকা রেঞ্জের প্রত্যেকটি থানা এখন সিসিটিভি মনিটরিংয়ের আওতায়।
দক্ষতা আর ক্ষিপ্রতায় অন্যরকম এক মানবিক পুলিশ বাহিনী দেখলো বাংলাদেশ। আর এই দৃশ্যমান সবকিছুর অন্যতম পথিকৃৎ ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান।
ঢাকা রেঞ্জে এক মনিটরে ৯৬ থানা:
থানা-পুলিশের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে ঢাকা রেঞ্জের ১৩ জেলার ৯৬ থানায় বসেছে ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরা। সেই ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় স্থাপিত নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে। ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে ডিউটি অফিসার, হাজতখানা ও নিরাপত্তারক্ষীর অবস্থান।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে ঢাকা রেঞ্জের ১৩ জেলার ৯৬ থানা মনিটর করার উদ্যোগ নিয়ে আরো বেশি জনবান্ধব পুলিশিংয়ের নজির স্থাপন করেছেন ডিআইজি হাবিবুর রহমান, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার)। শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসারের টেবিলে চকলেট নেই। ঢাকার নিয়ন্ত্রণকক্ষে বসে সেই দৃশ্য সঙ্গে সঙ্গে টেবিলে চকলেট না থাকার কারণ জানতে চান তিনি। দায়িত্বরত ডিউটি অফিসার বলেন, শেষ হয়ে গেছে আবার আনা হচ্ছে। গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার হাজতে কোনো আসামি নেই। মেঝেতে বিছানাপত্র ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। পাশে দুটি পানির বোতল। এ সবই সেগুনবাগিচায় বসে ক্যামেরার চোখে দেখা।
এখন থানা মনিটরিংয়ের কাজ চলবে ২৪ ঘণ্টা। চাইলে নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে ক্যামেরাগুলো ৩৬০ ডিগ্রি কোণে ঘুরিয়েও আশপাশের দৃশ্য দেখা যাবে।
কর্মকর্তারা জানান, থানার গেটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা, দুর্ব্যবহার করাসহ ক্ষেত্রবিশেষে আসামি বা তার স্বজনদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ আসে। এ ছাড়া নারী ও শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে কি না, ডিউটি অফিসারের কক্ষে একই লোক বারবার আসছে কি না, সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে সেন্ট্রি কেমন আচরণ করছেন, সেন্ট্রি রাতে কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে ভেতরে বসে আছেন কি না ইত্যাদি বিষয় মনিটরিং করা হচ্ছে।
নিয়ম অনুসারে প্রতি থানায় প্রতিদিন ভোরে এবং রাত ১০টার পর হাজতিদের বিষয়ে তথ্য নেওয়া, হাজতখানায় কোনো অস্বাভাবিক বিষয় দেখা যায় কি না, নারী হাজতি থাকলে নারী সেন্ট্রি আছে কি না, হাজতখানা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সেখানে শীতকালীন কম্বল আছে কি না, হাজতখানায় আসামিদের আত্মীয়স্বজন খাবার দিচ্ছে কি না, হাজতির সঙ্গে অস্বাভাবিক উপকরণ আছে কি না ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করা হয় মনিটরিং সেন্টার থেকে। ক্যামেরায় যা দেখা যাচ্ছে, তা ৩০ দিনের ভিডিও রেকর্ড থাকবে। এতে করে কেউ কোনো কিছু করে আর অস্বীকার করতে পারবে না। ক্যামেরাগুলোতে জুম ক্যাপাসিটিও আছে। এর মাধ্যমে ছবি বা ভিডিওকে কাছে এনে বড় করে দেখা যায়।
অপরাধীরাই থাকবে আতঙ্কে আর নিশ্চিত করা হবে জনসাধারণের নিরাপত্তাঃ ডিআইজি হাবিবুর রহমান
আমার মিশনই হচ্ছে, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন। যেখানে অপরাধীরাই থাকবে আতঙ্কে আর নিশ্চিত করা হবে জনসাধারণের নিরাপত্তা।” এমনটিই বলে থাকেন বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। “আমাকে সহযোগিতা করুন। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আপনাদের উপহার দেব সুন্দর বাসযোগ্য পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ। আজ আইজি স্যারের নেতৃত্বে নতুন দিগন্তে প্রবেশ করেছে পুলিশ বাহিনী। সততা, জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশকে প্রকৃত অর্থেই জনগণের বন্ধু হিসেবে গড়ে তোলা। জনগণ যাতে পুলিশের উপর পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে পারে, সেরকম বিশ্বাসী পুলিশ গড়ে তোলা। সকলের প্রতি এটাই আমাদের প্রধান বার্তা। যেটা আমরা ইতোমধ্যে সকলকে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের জনমুখী, স্বচ্ছ, জবাবদিহি এবং সৎ হিসেবে গড়ে তোলা।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান আন্তরিকতা ও কর্মের মধ্যদিয়ে পাল্টে দিয়েছেন পুলিশের ভাবমূর্তি :
মানুষ মানুষের জন্য, মাত্র একজন মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বদলে যেতে পারে কোন অবহেলিত জনপদের জীবনযাত্রা। ঘুরে দাঁড়াতে পারে যুব ও তরুণ সমাজ। মহিলারা হতে পারেন স্বাবলম্বী। ইচ্ছা থাকলে নিজ প্রচেষ্টায় কর্মক্ষম মানুষ গাইতে পারে জীবনের জয়গান। বদলে দেয়ার অসাধ্যকে সাধন করেছেন পুলিশের একজন কর্মকর্তা। তার নাম হাবিবুর রহমান, যিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি । পুলিশ নিয়ে অনেকের বিরুপ ধারণা থাকলেও হাবিবুর রহমানের ব্যতিক্রম। তিনি তার আন্তরিকতা ও কর্মের মধ্যদিয়ে পাল্টে দিয়েছেন পুলিশের ভাবমূর্তি।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান করোনায় মানুষকে নিজে সাহায্য করছেন, অনুপ্রাণিত করেছেন পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের:
করোনা মহামারীকালীন পুরোটা সময় মাঠে ময়দানে মানুষের জন্য একটানা কাজ করে যাওয়া হাবিবুুর রহমান নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মানুষের অনেক অনেক দোয়ায় তিনি সুস্থ হয়ে আবার মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। উত্তরন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে করোনা মহামারীকালীন সময়ে মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। উৎসাহিত করছেন ব্যবসায়ী সমাজকে মানুষের পাশে দাড়াতে।
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাপালনকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান তথা আধুনিক ব্যাংকিং সেবার অন্যতম উদাহরণ ‘দি সিটি ব্যাংক লি.’ করোনা যুদ্ধে ‘উত্তরণ ফাউন্ডেশন’ এর সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংহতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। ‘মানুষের পাশে সিটি ব্যাংক’ শ্লোগান নিয়ে এই ব্যাংকটি দেশের ২০ হাজার দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের অতি নিকটে পৌঁছে গেছে যথাসাধ্য খাদ্যসামগ্রী নিয়ে। উত্তরণ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিটি ব্যাংক প্রদত্ত খাদ্য সামগ্রীর একটি অংশ নিজ উদ্যোগেই দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৯ মে ২০২০ গাজীপুরের পুবাইলে বসবাসরত তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের মাঝে সিটি ব্যাংক ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
পুলিশে থেকেই মানুষের জন্য করার মত প্রচুর কাজ আছে এই মন্ত্র ছড়িয়ে দিয়েছেন ডিআইজি হাবিব:
পুলিশে থেকেই মানুষের জন্য করার মত প্রচুর কাজ আছে। বাংলাদেশ পুলিশকে মানবিক পুলিশে রূপান্তর করা গেলে এই মানুষগুলোর অনেক সমস্যাই আর থাকবে না। এই চিন্তা চেতনাকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে চলেছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। মানুষের জন্য নিজে কাজ করছেন। অনুপ্রাণিত করে চলেছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের।
ঢাকা রেঞ্জের প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে মানবিক পুলিশ হতে অনুপ্রানিত করেছেন ডিআইজি হাবিবুর রহমান। এর দেখাদেখি সারাদেশের পুলিশ এগিয়ে এসেছে। নিজের জীবন বা পরিবারের কথা চিন্তা না করে দিনরাত রাস্তায় কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ চালু হওয়ার পর মানুষের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। কোথাও কোনো অন্যায় দেখলে, কোনো সমস্যা তৈরি হলে ফোন করলেই মুহূর্তেই পুলিশ হাজির হয়ে যাচ্ছে, দ্রুত ব্যবস্থাও নিচ্ছে। ২৪ ঘণ্টাই জনগণ যেকোনো জরুরি সেবাগ্রহণ করতে পারছে। পুলিশ জনগণের বন্ধু প্রচলিত কথাটি বর্তমান সময়ে বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। পুলিশ বাহিনী প্রশংসনীয় উদ্যোগ, কর্মতৎপরতা, মহানুভবতা, কঠিন এই বিপদে ঝাপিয়ে পড়া, প্রতিটি নাগরিককে সুরক্ষা দিতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া বাঙালি জাতির জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত।
নিম্ন আয়ের মানুষ, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়, যৌন পল্লীর পতিতা সবাইকে সাহায্যের আওতায় এনেছেন ডিআইজি হাবিব:
করোনা প্রাদুর্ভাবে খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন সমাজের তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) সম্প্রদায়ের অবহেলিত মানুষগুলোও। এসব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। তিনি ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের সামনে শতাধিক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে খাবার সামগ্রী দেন। এ ছাড়া গত কয়েকদিন ধরে ডিআইজি হাবিবের উত্তরণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সমাজের পিছিয়ে পড়া কয়েক হাজার হিজড়া ও বেদে সম্প্রদায়ের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। করোনা দূর্যোগ মোকাবিলায় যশোর জেলা পুলিশ’ ও ‘উত্তরণ ফাউন্ডেশন’ এর যৌথ উদ্যোগে যশোর জেলায় বসবাসরত পিছিয়ে পড়া তৃতীয় লিঙ্গের ৪০জন সদস্যদের মাঝে অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
১৬ মে ২০২০, করোনা দূর্যোগ মোকাবিলায় ‘উত্তরণ ফাউন্ডেশন’ এর উদ্যোগে ঢাকা জেলার ধামরাই থানা এলাকার কাকরান গ্রামে বসবাসরত ২৮০টি দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা (কোভিড-১৯) দূর্যোগ মোকাবেলায় ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এর উদ্যোগে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচীর আওতায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বেদে সম্প্রদায়ের ২ শতাধিক পরিবারের মাঝে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
৭ এপ্রিল ২০২০, করোনা দূর্যোগ মোকাবিলায় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি জনাব হাবিবুর রহমান এর ’উত্তরণ ফাউন্ডেশন’ রাজশাহী জেলায় বসবাসরত ৩১টি বেদে পরিবারের মাঝে অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে। প্রতিটি পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত মোট ৩১জন প্রতিনিধির হাতে ৬কেজি চাল, ৫কেজি আলু, ১লিটার তেল, ১কেজি পেয়াজ, ১কেজি লবন, ১প্যাকেট মুড়ি ও ১টি করে সাবান সম্বলিত প্রতিটি প্যাকেট তুলে দেয়া হয়।
৪ এপ্রিল ২০২০, করোনা দূর্যোগ মোকাবিলায় রাজশাহী জেলা পুলিশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও সহযোগিতায় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি জনাব হাবিবুর রহমান এর ’উত্তরণ ফাউন্ডেশন’ রাজশাহী জেলায় বসবাসরত তৃতীয় লিঙ্গের ৩২ জন সদস্যদের মাঝে অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে। উপস্থিত তৃতীয় লিঙ্গের প্রত্যেক সদস্যদের হাতে ১০কেজি চাল, ৫কেজি আলু, ১কেজি তেল, ১প্যাকেট লবন, ১প্যাকেট মুড়ি ও ১টি করে সাবান সম্বলিত প্রতিটি প্যাকেট তুলে দেয়া হয়।
৩ এপ্রিল ২০২০, করোনা দূর্যোগ মোকাবিলায় রাজবাড়ী জেলা পুলিশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি জনাব হাবিবুর রহমান এর ’উত্তরণ ফাউন্ডেশন’ রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া পতিতা পল্লীর ১৫০০ জন যৌনকর্মীর মধ্যে এবং ঝিনেইদহ জেলায় বসবাসরত তৃতীয়লিঙ্গের ৫২ জন সদস্যদের নিকট অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়।
হাবিবুর রহমান গোপালগঞ্জের চন্দ্র দিঘলিয়া গ্রামে ১৯৬৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউট থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে হাবিবুর রহমান ১৭তম বিসিএস দিয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদানের পর থেকেই কর্মক্ষেত্রে নিজের মেধা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখেন। সাহস, সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার জন্য তিনি তিনবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং দু’বার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদকে (পিপিএম) ভূষিত হয়েছেন।
পেশাগত ও মানবিক কাজের বাইরে সফল ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে টানা বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার পদে কাজের সুবাদেই দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। সাভারে বেদে পল্লীর সমাজ ব্যবস্থা উন্নয়ন থেকে শুরু করে স্কুল, কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার, গাড়ি চালনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও বুটিক হাউসসহ নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে তাদের আত্ন কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বেদে পল্লীর অভিশপ্ত বাল্য বিবাহ রোধে তার ভূমিকা প্রশংসিত হয় দেশে-বিদেশে। নিজের প্রতিষ্ঠিত উত্তরন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত ও অবহেলিত পিছিয়ে পড়া হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবন-মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘উত্তরণ কর্ম-সংস্থান প্রশিক্ষণ’ কর্মসূচি চালু করেন এবং হিজড়া সম্প্রদায়ের জীবনমান উত্তরণ, তাদের পূনর্বাসন ও মানুষ হিসেবে তাদের সামাজিক মর্যাদা সমুন্নত করতে সাড়া জাগানো বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন। যে কারণে এই দুই জনগোষ্ঠির কাছে তার পরিচয় মানবতার ফেরিওয়ালা।
সে সময়ে তার উদ্যোগে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। রাজারবাগে প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘর ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অবদান ও ঢাকায় তাদের প্রথম প্রতিরোধ নিয়ে “মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ” নামের একটি বই-ও লিখেছেন হাবিবুর রহমান।
করোনা আক্রান্তের বাড়ীতে খাদ্য সামগ্রী পাঠিয়েছেন ডিআইজি হাবিবুর রহমান :
ঢাকা রেঞ্জের বিভিন্ন থানায় কর্মরত কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিপিএম, (বার), পিপিএম(বার) এর নির্দেশনায় তার পরিবারের নিকট বাজার পৌঁছে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ হাবিবুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম(বার) মনে করেন, একজন করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যের পরিবারের প্রতি এমন সহমর্মিতা রেঞ্জের সকল পুলিশ সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধি করবে এবং করোনা যুদ্ধে ভূমিকা রাখতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করবে বলে মনে করেন পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
গণমাধ্যম কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী তুলে দিয়েছেন ডিআইজি হাবিবুর রহমান :
করোনা সংক্রমন এড়াতে গণমাধ্যম কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী তুলে দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান। ডিআইজি হাবিবুর রহমান গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলে থাকেন- ঘরে থাকার জন্য যাদেরকে আমরা আহবান করছি তাদেরকে ঘরে রাখার জন্য পুলিশ, তাদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার এবং এই খবরটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গণমাধ্যম কর্মীরা কাজ করছেন। এ সময় পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টিকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন।