অনলাইনে মে দিবস পালন করলো গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন
গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন প্রতি বছর নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে থাকে। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ভিন্নভাবে দিবসটি উদযাপন করেছে সংগঠনটি। গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন ১মে ২০২০, শুক্রবার সকাল ১১ঃ০০ মিনিট থেকে ১২ঃ৩০ টা পর্যন্ত মহান মে দিবস উপলক্ষে অনলাইনের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতিতে বর্তমানে শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যার আলোকে মে দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য আলোচনা করেন। উক্ত আলোচনা সভায় আতিকুজ্জামান মির্জার সঞ্চালনায় এবং ফজলুল হকের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও জাতীয় শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। আলোচক হিসেবে অংশ নেন ১. সারমিন আক্তার ববি,প্রেসিডেন্ট,উইমেন কমিটি জিপিইইউ ২. রোকসানা পারভীন, এক্সিকিউটিভ মেম্বার, জিপিইইউ। ৩. ইমরুল কায়েস, এক্সিকিউটিভ মেম্বার, জিপিইইউ। ৪. মিয়া মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক, জিপিইইউ। ৫. ফজলুল হক, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, জিপিইইউ ৬ রাজেকুজ্জামান রতন, সভাপতি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। ৭. বাবুল আক্তার, সাধারণ সম্পাদক, বি,জি,ডব্লিউ, এফ। ৮. মোস্তফা কামাল, সেক্রেটারি, ইউনি,বি,এল,সি। সারমিন আক্তার ববি অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের বিশেষ করে গৃহকর্মীদের করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের সমস্যা এবং করনীয় হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। রোকসানা পারভীন মহিলা শ্রমিকদের বিষয়ে এই মহামারী করোনার মধ্যে তাদের মজুরি এবং ঘরের সুরক্ষার বিষয়ে আলোকপাত করেন। ইমরুল কায়েস এই লকডাউন পরিস্থিতিতে মালিক পক্ষের আচরণ এবং তাদের দ্বায়িত্বশীলতার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, মালিকের স্বার্থেই শ্রমিককে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। মিয়া মাসুদ মে দিবসের গুরুত্ব এবং করোনার এই মহামারী পরিস্থিতিতে শ্রমিকের স্বার্থ সুরক্ষা এবং মালিক শ্রমিক মিলেমিশে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরো বলেন এই পরিস্থিতিতে মালিকদের শ্রমিক ছাঁটাই বা লে-অফ এর নামে শ্রমিকদের অধিকার ক্ষুন্ন করে নয় বরং তাদের পাশে থাকার কথা বলেন।অনুরূপ ভাবে শ্রমিকদের কোম্পানির পাশে থেকে মালিকদের সহযোগিতা করার কথা বলেন। ফজলুল হক বলেন জীবন এবং জীবিকার স্বার্থে শ্রমিক মালিক একসাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে একে অপরের পাশে থেকে পরিস্থিতির উত্তরন ঘটাতে হবে। বাবুল আক্তার, গার্মেন্টস শ্রমিকদের বর্তমান করুন পরিস্থিতির উপর আলোকপাত করে বলেন গার্মেন্টস মালিকরা বর্তমানে অমানবিক আচরণ করছেন। কোন সমন্বয় ছাড়াই কারখানা চালু, বন্ধ এবং আবার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করেই কারখানা চালু করেছে। মার্চ মাসের বেতন এখন পুরোপুরি সব শ্রমিকদের দেয়নাই গার্মেন্টস মালিকেরা। সামনে ঈদ। ঠিকমতো বেতন পরিশোধ না করলে আবারও শ্রমিক অসন্তোষের আশংকা রয়েছে। মোস্তফা কামাল বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের জন্য আজ সারা বিশ্বে লকডাউন চলছে। ফলে কলকারখানা এবং উৎপাদন বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের আয়, খাদ্য ও নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। সুতরাং এখন রাষ্ট্রকেই শিল্প বাঁচানোর উদ্যোগ নিতে হবে এবং শ্রমিকের আয়, খাদ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের মে দিবসের এই ভার্চুয়াল আয়োজন আমাকে উজ্জীবিত করেছে।কারণ এই করোনা পরিস্থিতিতেও তারা তাদের মে দিবসের উদযাপন থামিয়ে দেয়নি।তারা তাদের টেকনোলজির সর্বোত্তম ব্যাবহার ঘটিয়ে মে দিবসের আবেগ এবং আহ্বান তারা তাদের বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছেন।তিনি আরও উলেখ করেছেন, মালিকদের সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের আচরণ নিয়ে এবং করোনা পরবর্তীতে তাদের এই অধিক মুনাফা লোভী আচরণ কে ৫ টা ও’র মাধ্যমে উলেখ করেন। যেমন আউট সোর্সিং, লে অফ, সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন ইত্যাদি। বলেন তাদের মানবিকতা বলে কিছু নেই।তাদের কাছে মানুষের চেয়ে মুনাফা অনেক বড়। তিনি রিকশাওয়ালা,গৃহকর্মী প্রসঙ্গ উলেখ করে বলেন তারা একটু গলা উঁচু করে কথা বলেন না। খুব ভদ্রভাবে হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে বলেন যে আজ থেকে তোমার চাকরি আর নেই। এইভাবে উনি করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিভিন্ন আশংকার কথা তুলে ধরেন এবং সব সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার পরামর্শ দেন।