পাবনায় র্যাব-১২ এর রাতভর অভিযানঃ বিদেশি পিস্তল, রিভলবার, শটগান ও গুলিসহ দুই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আটক
এ এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। এ যেনো এক যুদ্ধ পরিস্থিতি। যেকোনো মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে বড় দুর্ঘটনা। রাতের অন্ধকারে কোনো বুলেট বিদ্ধ হওয়া যেন এক সময়ের খেল মাত্র। ঝরে যেতে পারে তাজা কোনো প্রাণ।
সোমবার (১৩ জুলাই, ২০২০) রাত ১০ টার দিকে গোপন সূত্রের খবর, পাবনা সদর এলাকার ভাড়ারা নামক গ্রামে অবস্থান করছে একাধিক সন্ত্রাসী । তাদের কাছে রয়েছে অত্যাধুনিক সব ভারি অস্ত্র। যেকোনো সময় তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে সর্বহারা স্টাইলে। পাবনা এলাকা এমনিতেও এক সময় সর্বহারা আর চরমপন্থী অধ্যুষিত ছিলো।
দ্রুত প্রস্তুতি নিলো র্যাব-১২ এর অপারেশন টিম। সকল প্রস্তুতি শেষে রওনা হলাম ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে। যখন পৌছলাম তখন মধ্যরাত হয়ে গেছে। ঘুটঘুটে অন্ধকার, সাথে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। প্রত্যন্ত সে গ্রামের কোনায় একটি বাড়ি। নেই তেমন কোনো যাতায়াতের রাস্তাও। সন্ত্রাসীরা বোধহয় এ কারণেই এমন একটি জায়গা বেছে নিয়েছে।
পর্যাপ্ত টর্চলাইট ছিলো আমাদের। কিন্তু অভিযানের স্বার্থে বন্ধ রাখা হয় সেগুলো। অগত্যা অন্ধকারে অচেনা রাস্তা ধরে চুপিসারে এগিয়ে চলা। একাধিক গ্রুপে ভাগ হয়ে এগিয়ে চলা। উদ্দেশ্য, চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা। কিন্তু বৃষ্টির পানি আর হাটুকাঁদা যেন আরেক শত্রু। কাঁদা জলে বার বার পা আটকাচ্ছে র্যাব-১২ টিমের।
অবশেষে, মঙ্গলবার (১৪ জুলাই, ২০২০) ভোরে আমরা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলি বাড়িটি। ততোক্ষণে আবছা ভোরের আলো ফুটেছে। আকস্মিক অভিযান আমাদের। হতভম্ব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। পালানোর ব্যর্থ চেষ্টা। অবশেষে প্রাণহানি এড়িয়ে সফল অভিযানে স্বস্তির নিশ্বাস র্যাব-১২ এর অপারেশন টিমের।
আটক করা হয় দুই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীকে। অত্যাধুনিক অস্ত্র তাদের কাছে। উদ্ধার করা হয় ০১ টি ৯ এমএম পিস্তল (আমেরিকার তৈরি), ০১ টি রিভলবার (মায়ানমারের তৈরি), ০১ টি শটগান(পাকিস্তানের তৈরি) ও মোট ১৫ রাউন্ড গুলি।
