শিরোনাম

South east bank ad

গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ১৬ বছরে পদার্পণ

 প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   পুলিশ

গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী ২০০৫ সালে ২৪তম বিসিএস (পুলিশ) এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। আজ ২ জুলাই বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ১৬ বছরে পদার্পণ করেছেন তিনি। এ উপলক্ষ্যে ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন -

"হে বিধাতা, দাও দাও মোদের গৌরব দাও নি:সংকোচে মস্তক তুলিতে দাও" -

০২ জুলাই ২০০৫, ২৪তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের গর্বিত সদস্য হিসেবে ক্যাডার সার্ভিসে যোগদান করেছিলাম মনের মাঝে চাপা উত্তেজনা, আনন্দ, কৌতূহল নিয়ে। ভীষণ আবেগে নিমজ্জিত ছিলাম দেশ সমাজের জন্য অনেক কিছু করে ফেলার অভিপ্রায়ে।চাকুরীর ১৫ বছর পেরিয়ে আজ অনেক সময় ভাবি সত্যিকার অর্থে জনমানুষের কল্যাণে কতটুকু করতে পেরেছি।সম্মানিত সেবাপ্রত্যাশী, সহকর্মী, স্টেকহোল্ডাররাই এর প্রকৃত মূল্যায়ন করতে পারবেন। ১৫ বছরের চাকুরী জীবনে শ্রদ্ধেয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুপ্রিয় ব্যাচমেট, সহকর্মী, পরিবারের সদস্যবৃন্দ, বন্ধুবান্ধব, শুভানুধ্যায়ীদের নিকট হতে যে ধরণের আন্তরিকতা, সহযোগিতা, সুপরামর্শ ও সহমর্মিতা পেয়েছি তাই চলার পথের পাথেয়।

সকল বাধা বিপত্তি পেরিয়ে নি:সংকোচে যেন মাথা তুলতে পারি।

15

একনজরে গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী :  মুজিববর্ষে বাংলাদেশ পুলিশের শ্লোগান হচ্ছে ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার।’ করোনাভাইরাসের কারনে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের আঁচ থেকে বাঁচতে পারেনি বাংলাদেশও। আর সারাদেশে চলমান লকডাউনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিন রাত পরিশ্রম করে চলেছে বাংলাদেশ পুলিশ। বিগত দিনের সকল বিতর্ক ছাপিয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে সারাদেশে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১১,১২৩ জন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে  মৃত ৪৪ জন।  ডিএমপির ২৩০২ জন আক্রান্ত এবং মৃত ১৬ জন।  এ ছাড়া সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন, অনেক পুলিশ সদস্য সদস্যকে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) পাঠানো হয়েছে।   এরপরও থেমে নেই পুলিশ। যার যার জায়গায় থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ আর আন্তরিকতার অনন্য নিদর্শন দেখিয়ে অনেকের কাছে অণুকরণীয় হয়ে ওঠেছেন গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। ত্রাণ বিতরণ থেকে সচেতনতা তৈরি সবক্ষেত্রে দিন রাত পরিশ্রম করে চলেছেন মেধাবী এই পুলিশ কর্মকর্তা। 2 লকডাউন চলা অবস্থায় গত ১ এপ্রিল রাতে ডিসি গুলশান- ডিএমপির ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট দেয়া হয়। পোস্টটি দেন গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। পোস্টে লেখা হয়- ‘ করোনাভাইরাসের কারণে অঘোষিত লকডাউন চলছে দেশে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ওষুধের দোকান ছাড়া প্রায় সব বন্ধ।     অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মার্চের বেতন পাননি, পাবেন কি-না সে নিশ্চয়তাও নেই। সমাজের এই নিম্নমধ্যবিত্ত চাকরিজীবী লোকেরা অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছেন। তবে সামাজিক আত্মসম্মানের ভয়ে তারা সরকার বা স্থানীয়ভাবে কারও কাছে সাহায্য চাইতে পারছেন না। 10 …অসহায়,দুস্থ, কর্মহীন,নিম্ন আয়ের চাকুরিজীবী, নিম্ন মধ্যবিত্ত যাদের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাহায্য প্রয়োজন তাদের সাহায্যের জন্য মোবাইল নাম্বার সহ ইনবক্স করুন। 3 পরিচয় গোপন রেখে সাধ্যমত সাহায্য করা হবে’।এরপর থেকেই লাগাতার সহযোগিতা করে যাচ্ছে পুলিশ। ০১ এপ্রিল থেকে কর্মহীন, অসহায়, দু:স্থ নিম্ন মধ্যবিত্ত/মধ্যবিত্তদের বাসায় তাদের পরিচয় প্রকাশ না করেই প্রতি রাতে গুলশান বিভাগের পক্ষ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও গুঁড়া দুধ পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। সময়োপযোগী এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে গুলশানের ডিসি সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী  বলেন, ‘আমরা সবাই নিম্নবিত্ত, গরিব দুস্থ ও খেটে খাওয়া মানুষের কথা বিবেচনা করে সাহায্য সহযোগিতা করছি। তবে সমাজের অনেকেই নীরবভাবে জীবনযুদ্ধ করে যাচ্ছেন। তারা কারও কাছে হাত পাততে পারছেন না। তাদের জন্য আমাদের এই উদ্যোগ। পোস্টটি দেয়ার পরে আমরা অনেক সাড়া পেয়েছি। অনেকে আমাদের ইনবক্সে তথ্য দিয়ে সাহায্যের আবেদন করছেন। আমরা তাদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে তাদের সাহায্য করছি। ইতোমধ্যে অনেককে সাহায্য করা হয়েছে। তবে আমরা তাদের নাম-পরিচয় ও ছবি গোপন রাখবো।’ জানা গেছে ঢাকা মহানগরীতে আমরা এই কার্যক্রমের আওতায় এর মধ্যেই প্রায় ৫,০০০ পরিবারের বাসায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো হয়েছে। এখনও একইভাবে কাজ চালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে পুলিশ বিভাগ। 6 আর পুরো বিষয়টি নিজে তদারকি করছেন সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। তিনি বলেন, ‘ আমরা কৃতজ্ঞ সেইসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছে। যারা এই মহতী কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়েছেন। ‘যারা হাত পাততে পারেন না’ তাদের সহায়তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদাত্ত আহবান আমাদের ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা এই মহতী প্রয়াস আরও বেগবান করবো। আমরা বিশ্বাস করি সবাই যার যার অবস্থান থেকে চেষ্টা করলেই এই বৈশ্বিক সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’ এদিকে করোনাভাইরাসের প্রভাবে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এক দফা সময় বাড়িয়ে ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। এরপর ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।এই সময়ে সাধারণ মানুষের অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করেছে সরকার।   এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় ও ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর ফলে অনেকের আয় কমেছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় কমিউনিটি পর্যায়ে পরিলক্ষিত হচ্ছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশ আশংকাজনক। 12 স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সমগ্র বাংলাদেশ-কে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করেছে। করোনা ভাইরাসের কমিউনিটি সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে জনগণকে নিরাপদে ঘরে রাখতে গুলশান বিভাগের পুলিশ সদস্যগণ মাঠে থেকে দিনরাত আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। করোনাকালে গুলশান পুলিশেন নানা উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে সারাদেশে রোবাস্ট কনভয় প্যাট্রোলিং, শক্তিশালী চেকপোস্ট, মোবাইল প্যাট্রোলিং, উচ্চপ্রযুক্তিসম্পন্ন সিসিটিভি মনিটরিং, বিভিন্ন সোসাইটিকে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত ও বিনা প্রয়োজনে ঘুরে বেড়ানো মানুষদের প্রতিহতকরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এছাড়াও করোনা মোকাবেলায় গুলশান পুলিশ টীমের নানামুখী উদ্যোগের কথা জানান সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। গুলশান বিভাগের পুলিশের নেতৃত্ব ও সহযোগিতায় প্রকাশ্যে গোল চিহ্ন দিয়ে বাধ্যতামূলক সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করেই বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তাদের এই প্রচেষ্টা পরবর্তীতে মডেল হিসেবেই সারাদেশব্যপী অনুসরণ হচ্ছে। 20 প্রতিদিন অন্ত:ত ১,৫০০ জনের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। গুলশান বিভাগ পুলিশের এপ্রিল মাসের রেশন, ০১ দিনের বেতন ও বাংলা নববর্ষ ভাতা অসহায়দের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। পা নিয়মিতভাবে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। সকল কাঁচাবাজার ও সুপারশপে প্রবেশ বহির্গমন একমুখী করা হয়েছে। সকল সুপারশপ, ওষুধ ও নিত্যপণ্যের দোকানে স্টীকার কিংবা রং দিয়ে সামাজিক দূরত্ব নির্দিষ্টকরণ করা হয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট রেস্টুরেন্ট হতে অনলাইন টেইকওয়ে সার্ভিস চালু রাখা হয়েছে। ‘স্বপ্নচাকা ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে বিভিন্ন বাসায় স্বেচ্ছাসেবী কর্তৃক ওষুধ ও নিত্যপণ্য পৌঁছানো হচ্ছে। বিভিন্ন আবাসিক সুউচ্চ ভবনে ‘হ্যালো শপ’-এর মাধ্যম নিত্যপণ্য ক্রয়ের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের হাসপাতালে পাঠানো, আবাসস্থল সংলগ্ন এলাকা লকডাউন ও আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েও আমরা সর্বদা তৎপর। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসে মৃত ব্যক্তির সৎকার ব্যবস্থা করতে আমাদের প্রচন্ড বেগ পেতে হচ্ছে তারপরও নিবেদিত পুলিশ সদস্যরা ধর্মীয় বিধি মেনে মৃত ব্যক্তির সৎকার নিশ্চিত করে চলেছেন। 19 মেধাবী সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী একজন কবিও। তাঁর লেখালেখির হাত সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে। একুশে বইমেলা ২০২০ এ প্রকাশিত হয় তাঁর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘নিমগ্ন নির্জন’। কবিতার বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন ডিএমপি কমিশনার। বইটি প্রথম দিনেই প্রথম মুদ্রণ শেষ হয়ে যায়। এরপরও গোটা মেলার অন্যতম আলোচিত বই ছিল এটি। সুদীপ চক্রবর্ত্তীর জন্ম ১৯৭৫ সালের ১ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ শহরে। শান্তি-শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখায় তিনি একজন অগ্রসৈনিক। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অভিজ্ঞতায় জীবনের স্বরূপ নতুন করে অন্বেষণ করতে শিখেছেন। পারিবারিক আবহের মাঝে ঋদ্ধ সাহিত্যবোধকে লিপিবদ্ধ করার প্রয়স চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের লেখালেখিতে। 11 13 আপাদমস্তক মানবিক সুদীপ চক্রবর্ত্তীর সহধর্মীনী সুনন্দা রায়ও একজন পুলিশ কর্মকর্তা। সুনন্দা রায় পুলিশ সুপার হিসেবে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত আছেন। তারা দুজনেই চব্বিশতম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা। আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক এই পুলিশ কর্মকর্তার পেশাজীবন ও ব্যক্তিজীবন অনেক তরুণের জন্যই হতে পারে অনুকরণীয় আদর্শ। 8 14
BBS cable ad

পুলিশ এর আরও খবর: