তাবলিগ বিষয়ে সৌদি আলেমদের যে পরামর্শ দিলেন আল্লামা মাহমুদুল হাসান
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
তাবলিগ জামাতের কাজ সম্পর্কে উপমহাদেশীয় আলেমদের সঙ্গে কথা বলে মন্তব্য করতে সৌদি আলেমদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ অথরিটি আল-হাইয়াতুল উলিয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান।
গতকাল মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইসলামি ভাবনার তাবলিগ তথা ঈমান আমলের দাওয়াতের কাজের নিন্দা করার আগে এর ভালোমন্দ সব দিক বিবেচনা করতে হবে। বর্তমান পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ ঈমান ইসলাম ও ইহসানের দিকে ধাবিত হচ্ছে তাবলিগের মেহনতের ফলে।
আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, সৌদি আরবের আলেমদের উচিত তাবলিগি কাজ সম্পর্কে উপমহাদেশীয় আলেমদের সঙ্গে কথা বলে মন্তব্য করা। ভারতের মাওলানা মুহাম্মাদ রাবে হাসানী নদভী, মাওলানা সাইয়েদ আরশাদ মাদানী, মুফতি তাকি উসমানীসহ বিশ্বের সেরা আলেমদের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। এ মুহূর্তে আরববিশ্বে আল্লামা সাইয়িদ আবুল হাসান আলী নদভী ও মাওলানা সাঈদ খান সাহেব প্রভাবিত আলেমদের পরিস্থিতি অনুপাতে সোচ্চার হতে হবে।
বিবৃতিতে বেফাক চেয়ারম্যান বলেন, প্রচলিত তাবলিগের কাজে তারা সমালোচনা বা সংশোধনী দিতে পারেন, কিন্তু শতবর্ষী একটি দ্বীনি আন্দোলনকে এভাবে একতরফা নিন্দা ও নিরুৎসাহিত করতে পারেন না। অতীতের হুসামুল হারামাইন ফতওয়ার দুঃখজনক ঘটনার মতো কোনো মহলের মিথ্যা প্রচারণা বা একতরফা অপবাদ শুনে তাবলিগি কাজের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন না। এর ফলে সারাবিশ্বে এই কাজে নিষেধাজ্ঞা জারির প্রবণতা দেখা দিতে পারে। মুসলমানদের শত্রুরাই এতে খুশি ও লাভবান হবে।
সৌদি সরকারের প্রজ্ঞাপনটির বক্তব্যে বাংলাদেশ পাক ভারত উপমহাদেশের আহলে হক ওলামায়ে কেরাম ও সর্বস্তরের তাওহিদী জনতা খুবই মর্মাহত হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, সৌদি আলেমরা একথা কোথায় পেলেন যে, তাবলিগিরা কবরকে সেজদার স্থান বানায়? দুনিয়ার কোথাও এমন নজির নেই, হতে পারে না। ইনসাফের স্বার্থেই তাদেরকে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানাই।
তাবলিগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং এর কঠোর বিরোধিতা এজন্যই করা সমীচীন হবে না, কারণ বিশ্বে উম্মতের সাধারণ দ্বীনি ফিকির, ঈমানী আগ্রহ, ন্যূনপক্ষে সামান্য ঈমান আমলের চর্চা ও মুসলিম জীবনে শরীয়াসংশ্লিষ্টতা এবং ক্ষেত্রে বিশেষে বেঈমানী আর বেদ্বীনির পরিবেশে মুসলমানিত্বের পরিচয়টুকু ধরে রাখাসহ সারাবিশ্বে মুসলিম সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য এই শতাব্দীতে এই তাবলীগী কাজের সমপর্যায়ের বিকল্প খুঁজে পাওয়া যাবে না।
এ প্রসঙ্গে আমরাও দারুল উলূম দেওবন্দের বিবৃতিটিকে সমর্থন জানাই।