শিরোনাম

South east bank ad

চীন থেকে চোরাই পথে কিট এনে অর্থ পাচার করেছে সাহাবুদ্দিন মেডিকেলের এমডি!

 প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   হাসপাতাল

চীন থেকে চোরাই পথে কভিড-১৯ পরীক্ষার টেস্ট কিট এনে অর্থ পাচার করেছে সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফয়সাল আল ইসলাম। অনুমোদনহীন এসব র্যাপিড টেস্ট কিট ব্যবহার করে রোগীদের ভুয়া রিপোর্ট প্রদানের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছে র‍্যাব। তাদের মতে, নেগেটিভ রিপোর্ট পজিটিভ দেখিয়ে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং আইনের পর্যায়ভুক্ত। এ কারণে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে আরেকটি মামলা দায়ের হচ্ছে। অর্থ আত্মসাৎ ও কভিড-১৯ পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট প্রদানের পাশাপাশি চোরাচালানের মাধ্যমে অনুমোদনহীন কিট আনার প্রমাণ পেয়ে সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আগে একটি মামলা করেছে র‍্যাব। গত রোববার গুলশান থানায় দায়ের করা ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে হাসপাতালের এমডি ফয়সাল আল ইসলাম, সহকারী পরিচালক ডা. মো. আবুল হাসনাত ও শাহরিজ কবিরকে। এজাহারে বলা হয়েছে, হাসপাতালের এমডি ফয়সাল আল ইসলামের নির্দেশে সহকারী পরিচালক ডা. মো. আবুল হাসনাত ও শাহরিজ কবির গত মার্চ থেকে সেবাগ্রহীতাদের ভুয়া পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদান, আইসিইউতে ভর্তি এবং অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেগেটিভ রোগীকে পজিটিভ দেখিয়ে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, যা মানি লন্ডারিং আইনের পর্যায়ভুক্ত। তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। গুলশান থানার ওসি এসএম কামরুজ্জামান বলেন, র‍্যাবের পক্ষ থেকে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টরসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। র‍্যাব-১-এর নায়েব সুবেদার মো. ফজলুল বারী বাদী হয়ে করা মামলায় হাসপাতালটির লাইসেন্স নবায়ন না করারও অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং এর ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্সের মেয়াদ গত বছরের ৩০ জুন শেষ হলেও এখন পর্যন্ত তা নবায়ন হয়নি। এ অবস্থায় গত ৫ জুন হাসপাতালটিকে কভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য অনুমোদন প্রদান করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু হাসপাতালটিতে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করার মতো কোনো সরঞ্জাম এবং অবকাঠামোও ছিল না। এক মাসেরও বেশি সময় এভাবে কভিড পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট প্রদানের পর ১৪ জুলাই কভিড পরীক্ষা ও চিকিৎসার অনুমোদন স্থগিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে সাড়ে ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা ফি নিয়ে কয়েক হাজার রোগীর কভিড-১৯ পরীক্ষা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে হাসপাতালটি সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালিত অভিযানের নেতৃত্ব দেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। তিনি জানান, হাসপাতালের নথিপত্রে দেখা যায়, আইসিইউতে করোনা পজিটিভ তিন রোগীর মধ্যে একজন নেগেটিভ রোগীকে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আর রাশিয়ার এক নাগরিক করোনা নেগেটিভ হলেও তাকে কেবিনে রেখে করোনার চিকিৎসা দিয়েছে হাসপাতালটি। এছাড়া গত ২৫ জুন রেহেনা আক্তার নামের এক রোগীর কাছ থেকে একদিনে ১ লাখ ২৯ হাজার টাকা ফি নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ রকম আরো ১৭ জন রোগীর কাছ থেকে এভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রমাণপত্র রয়েছে র‍্যাবের হাতে। এদিকে র‍্যাবের দায়ের করা মামলায় হাসপাতালের এমডি ফয়সাল আল ইসলাম, সহকারী পরিচালক ডা. আবুল হাসনাত ও ইনভেন্টরি অফিসার শাহরিজ কবিরের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল দুপুরে তাদের র‍্যাবের পক্ষ থেকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে র‍্যাব প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ফয়সালকে করোনা কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেফতার করা হলেও তার বিষয়ে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে আলাদা উইং কাজ করছে। সব বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। কোনোভাবেই তাদের ছাড় দেয়া হবে না।
BBS cable ad

হাসপাতাল এর আরও খবর: