ধর্ম প্রতিমন্ত্রী’র মৃত্যুতে ঢাকা রেন্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের শোক বার্তা

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ গত শনিবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। তার মৃত্যুতে সারাদেশের মানুষের মতো আমরাও গভীর শোকাহত, দুঃখিত, সমবেদী এবং সহমর্মী৷ ঢাকা রেঞ্জ পরিবারের পক্ষ থেকে আমি মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবার ও রাজনৈতিক অনুসারীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি ও তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী, কিন্তু মৃত্যুশোককে জয় করার মতো মানসিক শক্তি যেন শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়, সহকর্মী ও গুণগ্রাহীরা যেন অর্জন করতে পারে, সেজন্য আমরা মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি৷
সৎ, যোগ্য, দেশপ্রেমিক, বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী এই নেতা শুধু আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন সারা দেশের মানুষের নেতা। তাদের মৃত্যুতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ আদর্শবান এক নেতাকে হারিয়েছে। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আওয়ামী লীগ হারালো তৃণমূল থেকে উঠে আসা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন পরীক্ষিত সৈনিককে। তিনি আমৃত্যু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশকে ধারণ করে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তার অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
১৯৪৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার মধুমতী নদীর তীরবর্তী কেকানিয়া গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করা শেখ মো. আব্দুল্লাহ ছোট বেলা থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহের পরশ পান। বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য হয়ে তৃণমূল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। খুলনার আযম খান কমার্স কলেজে প্রথম ভিপি নির্বাচিত হন। গত শতকের ষাটের দশকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানে ছয়দফার উত্তাল আন্দোলন চলছিল । এ সময় ১৯৬৬ সালের ছয়দফা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে রাজনীতিতে গভীরভাবে সম্পৃক্ত হন। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে তিনি আওয়ামী যুবলীগে যোগদান করেন।
তিনি বঙ্গবন্ধুর সরাসরি তত্ত্বাবধানে গঠিত গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ১৯৭০ এর নির্বাচনে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িত হয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের ব্যাপক নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
আমরা যাকে হারালাম তার স্থান পূরণ করা হয়তো কারো পক্ষে সম্ভব হবে না৷ শোকের এই দিনে মহান আল্লার কাছে প্রার্থনা- তার পরিবার, পরিজন, অনুসারী ও স্বজনদের যেন এই শোক বহনের ক্ষমতা দান করেন, এবং তার এই শোক যেন দেশ সেবার ব্রতে নিযুক্ত হওয়ার শক্তিতে পরিণত করেন।