শিরোনাম

South east bank ad

বাজারের সেরা বলেই ভোক্তাদের ২২ বছরের আস্থা ম্যারিকো

 প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   কর্পোরেট

বাজারের সেরা বলেই ভোক্তাদের ২২ বছরের আস্থা ম্যারিকো

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সাফল্যে অন্যতম ভূমিকা রাখে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ব্যবস্থাপনা। এই ব্যবস্থাপনার সফলতার ক্ষেত্রে উৎপাদন কৌশল এবং উৎপাদন প্রক্রিয়া উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। সম্প্রতি উৎপাদন ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব ও ব্যবসায় এর প্রভাবসহ অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয়ে কথা বলেন দেশের অন্যতম বৃহত্তম এফএমসিজি প্রতিষ্ঠান ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ম্যানুফ্যাকচারিং ডিরেক্টর মু. সাইফুল আলম।

তিনি জানান, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানেরই নিজস্ব উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন কৌশল থাকে। যার পূর্বশর্ত হচ্ছে উৎপাদন সক্ষমতায় বিনিয়োগ।বাংলাদেশে ম্যারিকো গত দুই দশকে ২০০ কোটিরও বেশি টাকা বিনিয়োগ করেছে, যার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে।

বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরীতে প্রায় ১০ একর জায়গা নিয়ে ম্যারিকো তার তৃতীয় ও সর্ববৃহৎ ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট নির্মাণের কাজ করছে, যেখানে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে প্রায় ২২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা আছে। এই ইউনিটের মাধ্যমে শুধু বৃহৎ পরিসরে পণ্য উৎপাদনই নয়, বাড়বে কর্মসংস্থান, দূর হবে বেকারত্ব এবং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে দেশের অর্থনীতি। ইতোমধ্যেই আমাদের ফ্যাক্টরির আশপাশের এলাকাজুড়ে বিভিন্ন ব্যবসা গড়ে উঠেছে।

পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ম্যারিকোর সতর্কতা ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মু. সাইফুল আলম বলেন, আমরা পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিতে কোনো প্রকার আপস করি না এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করি। পণ্যের কাঁচামাল সংগ্রহ, উৎপাদন, প্যাকেজিং, স্টোরিং ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে আমরা সতর্কতার সঙ্গে পণ্যের মান বজায় রাখার চেষ্টা করি। আমাদের পণ্যগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে আমাদের একঝাঁক তরুণ ও চৌকষ দল প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক মহামারিতে কাঁচামালের পরিবহন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে আমরা আমাদের ব্যবসায়িক পার্টনারদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছি, যাতে করে তারা তাদের সরবরাহ অব্যাহত রাখতে পেরেছে, যা পরবর্তীতে আমাদের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সাহায্য করেছে।

ম্যারিকো’তে কাজের অভিজ্ঞতা ও ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এগারো বছর যাবত ম্যারিকোতে দায়িত্বরত আছি। এর আগে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি বহুজাতিক এফএমসিজি প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করেছি। বাংলাদেশ, ভারত এবং শ্রীলঙ্কার নিজস্ব ও সহযোগী ফ্যাক্টরির সঙ্গে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতাগুলো ম্যারিকো’তে সফল হতে আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে, আমার প্রথম পদে ম্যারিকোর গাজীপুরের শিরিরচালায় একটি গ্রিন ফিল্ড ফ্যাক্টরি নির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করি। এটি আমার জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটি অভিজ্ঞতা হলেও, কাজ করার জন্য আমি পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। সবার সহযোগিতায় রেকর্ড ৯ মাসের মধ্যে ফ্যাক্টরি স্থাপন করে আমরা উৎপাদন শুরু করতে সক্ষম হই, যা ম্যারিকো’তে অনেক প্রশংসিত হয়।’

ম্যারিকোর কালচার ও কর্ম পরিবেশ, কর্মীর প্রতি আস্থা, কাজ করার স্বাধীনতা, সর্বোপরি সাফল্যের পুরষ্কার ইত্যাদি বিষয়গুলো দীর্ঘসময় যাবত ম্যারিকো’তে কাজ করতে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। শিরিরচালায় ফ্যাক্টরিতে পর্যায়ক্রমে আমরা নতুন নতুন কার্যক্রম চালু করতে থাকি। শুরুতে মাত্র ১৫০ জন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করলেও বর্তমানে ম্যারিকোর দুই ফ্যাক্টরিতে প্রায় ৩০০ কর্মী কাজ করছেন। আমাদের শিরিরচালা ফ্যাক্টরিতে নারিকেল তেল ও মধু এবং মৌচাক ফ্যাক্টরিতে সব হেয়ার অয়েল, সাবান, শ্যাম্পু, বেবি প্রোডাক্ট, স্কিন লোশনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তৈরি করি। বিশ্বমানের পণ্য বাংলাদেশের ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে মাইক্রোবায়োলোজিক্যাল ল্যাবসহ আমরা অত্যাধুনিক পরীক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপন করেছি। গত ১০ বছরে ম্যারিকোকে চুক্তিভিত্তিক উৎপাদন ও আমদানিনির্ভর প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ স্থানীয় উৎপাদন এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান ম্যানুফ্যাকচারিং টিম মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। আমরা এখন ভারত, নেপাল, ভিয়েতনাম ও মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশে বানানো ভোগ্যপণ্য রপ্তানি করছি, যা বাংলাদেশের ম্যানুফ্যাকচারিং ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

ম্যারিকো তার সাসটেইনেবিলিটি লক্ষ্য পূরণে প্রতিনিয়ত কাজ করছে। রিনিউএবল এনার্জির ব্যবহার, এনার্জি এফিশিয়েন্ট যন্ত্রপাতি ও আলোক ব্যবহার, গ্রিন বিল্ডিং কমপ্লায়েন্ট বিল্ডিং ডিজাইন, পানির ব্যবহার কমানো ও ইটিপির মাধ্যমে পানির পুনর্ব্যবহার ইত্যাদি। আমাদের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে তার প্রতি সার্বক্ষণিক সচেতনতা বজায় রেখে আমরা কার্যক্রম পরিচালনায় সচেষ্ট থাকি। গাছ না কেটেই আমাদের নির্মাণ কাজের ডিজাইনের চেষ্টা করি এবং কোনো গাছ কাটা পড়লে তার পরিবর্তে অন্যত্র সমপরিমাণ গাছ রোপন করি। আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বের আমরা ফ্যাক্টরিকে সবুজ রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমরা জিরো ওয়েস্টেজ এবং জিরো ডিসচার্জ পরিকল্পনার সঙ্গে আমাদের উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি।

ম্যারিকো সম্প্রতি নতুন ব্র্যান্ড ও পণ্য বাজারে আনার মাধ্যমে পণ্যে বৈচিত্র্য নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে প্যারাস্যুট জাস্ট ফর বেবি রেঞ্জ, প্যারাসুট স্কিন পিওর রেঞ্জ, পুরুষদের জন্য শ্যাম্পু, ফেসওয়াশ, জেল ও ডিও সমৃদ্ধ স্টুডিও এক্স ক্যাটাগরি ইত্যাদি। মেইড ইন বাংলাদেশের গর্বিত অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ম্যারিকোর ৯৯ শতাংশ ভাগ পণ্যই বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় এবং এসব পণ্য ইন্ডিয়া নেপাল, ভিয়েতনাম এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয় ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড ঢাকা এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সেঞ্জের তালিকাভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান।
ম্যারিকো মুনাফার ১%, করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা উদ্যোগে ব্যয় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দেশের শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন ও অক্ষমতা দূরীকরণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, যা ম্যারিকোর ‘বি দ্য ইমপ্যাক্ট’ধারণাকে প্রতিফলিত করে।

পরিশেষে তিনি বলেন, ‘আমাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারের সেরা বলেই ভোক্তারা বিগত ২২ বছর যাবত আস্থা বজায় রেখেছে। পণ্যের মান, সাশ্রয়ী বাজারদর এবং স্থানীয় পণ্য হওয়ার কারণে ভোক্তাদের কাছে আমরা এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পেরেছি বলে আমি মনে করি।’

BBS cable ad

কর্পোরেট এর আরও খবর: