সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ৭৫% ভাতা বিতরণ করেছে ‘নগদ’
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ও শিক্ষা উপবৃত্তিসহ সরকারের বিভিন্ন আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার এবং করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আর্থিক অনুদানসহ সব ধরনের সহায়তা বিতরণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নগদের তথ্যমতে, চলতি বছরে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এমঅফএস অপারেটরদের মাধ্যমে বিতরণ করেছে ৫ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। যার ৭৫ শতাংশ ভাতা বিতরণ করেছে নগদ। এসব ভাতা বিতরণে কোনো ধরনের অস্বচ্ছতাও পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে ভাতা বিতরণে অন্যান্য এমএফএস থেকে এগিয়ে রয়েছে নগদ।
মঙ্গলবার সরেজমিনে টাঙ্গাইলের সদর ও দেলদুয়ার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ‘নগদ’-এর মাধ্যমে ভাতা পাওয়া উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই ভাতার টাকা তুলতে পারছেন তারা। দেলদুয়ার উপজেলার মৌলবিপাড়ায় প্রতিবন্ধীর ভাতা পাচ্ছেন মো. শাহজাদা। তিনি বলেন, ‘নগদ অনেক সহজ করে দিয়েছে। এখন ভাতা তুলতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’ বিধবা ভাতা পান একই উপজেলার মাদারকুল গ্রামের লাল বানু। তিনি বলেন, ‘আগে ভাতার টাকার জন্য ব্যাংকে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। খুব কষ্ট হতো। নগদের মাধ্যমে এখন আমার মেয়ের মোবাইলেই টাকা আসছে। তুলতেও কোনো ঝামেলা নেই।’ টাঙ্গাইল সদরের করটিয়া গ্রামের মিস্ত বেগম পাচ্ছেন বয়স্ক ভাতা। তিনি বলেন, ‘নিজেই মোবাইল নিয়ে দোকান থেকে টাকা তুলে আনতে পারছি।’
দেলদুয়ার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোবারক হোসেন বলেন, ‘দেলদুয়ার উপজেলায় ১৩ হাজার ৬০০ উপকারভোগীকে টাকা পৌঁছে দিচ্ছে ডাক বিভাগের নগদ। ভাতার টাকা সরাসরি উপকারভোগীর হাতে পৌঁছে যাচ্ছে।’
সমাজসেবা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীরা জনপ্রতি মাসে ৭৫০ টাকা করে পাচ্ছেন। বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা মাসে ৫০০ টাকা। শ্রেণিভেদে প্রাথমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত একেকজন শিক্ষার্থী মাসে ৪৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা সরকারি সহায়তা পাচ্ছেন। তিন মাস পর পর এই ভাতা উপকারভোগীরা পাচ্ছেন। এই পুরো অর্থই বিতরণ করা হচ্ছে এই ডিজিটাল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘অর্থনীতির ডিজিটালাইজেশনের ফলে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবে পরিণত হয়েছে। দেশে এমএফএস সেবা ১২ বছর আগে শুরু হলেও সরকারের ফান্ড বিতরণ শুরু করেছে নগদ। শুরুতে অনেক ঝামেলা এবং মুনাফা শূন্যের কাছাকাছি হওয়ায় এটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল। কিন্তু ‘নগদ’-এর ভিশনে আমরা এগিয়ে গেছি। ভাতা বিতরণে অসাধু সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত দিয়েছি প্রায় ৩৮৫ কোটি টাকা, যা দেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো ঘটনা।’